|
|
|
|
হুল্লোড়
|
শর্ট কাটেও বাজিমাত |
ছোট্ট একটা প্যান্ট। এই গরমে সেটাই হয়ে উঠতে পারে
পুরুষের স্টাইল স্টেটমেন্ট। কী ভাবে? লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
মনে আছে ‘দোস্তানা’ থেকে জন আব্রাহামের সেই বক্সার শর্টস পরা ছবি? একটা হলুদ রঙের ‘বিপজ্জনক’ ছোট বক্সার শর্টস পরে জন মুচকি হেসে দাঁড়িয়ে। কোনও
কোনও দৃশ্যে আবার
|
জন আব্রাহাম |
দুষ্টুমি করে নামিয়ে দিচ্ছেন শর্টসটা! যা দেখে জনের প্রচুর মহিলা ফ্যানেরা একেবারে লজ্জায় লাল!
গত বছর অভিনেতা তুষার কপূর জনের এই শর্টস পরা দৃশ্যটির ‘স্পুফ’ করেছিলেন ‘ক্যয়া সুপার কুল হ্যায় হম’ ছবিতে। জন অবশ্য প্রকাশ্যে বলেছিলেন যে তিনি তুষারের ওই সিনটা দেখেননি।
সিনেমার বিভিন্ন প্রয়োজনে বহু বার অভিনেতাদের স্বল্পবাসে দেখা গিয়েছে। তা সে অমিতাভ বচ্চন হোন বা আমির খান। বিদেশে তো খেলোয়াড় আর অভিনেতারা চুটিয়ে শর্টস-এর বিজ্ঞাপনও করেছেন প্রচুর। একাধিক শর্টস-এর বিজ্ঞাপনে ডেভিড বেকহ্যামকে দেখা গিয়েছে। কখনও একা। কখনও বা সেক্সি স্ত্রী ভিক্টোরিয়া বেকহ্যামের সঙ্গে।
তারকাদের স্টাইল অনেক ক্ষেত্রেই ফ্যানেরা অনুকরণ করে থাকেন। তবে কত জন সে বছরের স্টাইল ট্রেন্ডটা মাথায় রেখে শর্টস বেছে নেন, সেটা বলা কঠিন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই চিরাচরিত বারমুডা। পুরী, দিঘা বা মন্দারমণির বিচে গিয়ে দেখবেন অনেকের খেয়ালই
নেই যে কুচি দেওয়া শর্টস আজকাল একেবারেই চলে না। শর্টস-এর দৈর্ঘ্য নিয়েও বিশেষ কেউ মাথা ঘামান না।
তবে ফ্যাশন-দুরস্তরা জানেন যে ‘টেলরড্-শর্টস’ এখন বেশ জনপ্রিয়। আজকাল অনেকেই দুপুরবেলার অনুষ্ঠানে শর্টস পরে যেতে পছন্দ করেন। শর্টস পরে শ্যুটিং করতে যাওয়া পরিচালকদের সংখ্যাও কিছু কম নয়। ফ্যাশনেবল হতে গেলে তাঁদের উচিত ‘টেলরড্-শর্টস’ বেছে নেওয়া।
“বিভিন্ন রঙের শর্টস পাওয়া যায়। নিজের ব্যক্তিত্বের কথা মাথায় রেখে শর্টস-এর রং পছন্দ করা উচিত। আমার পছন্দ কমলা বা সবুজ রং। কেউ কেউ আবার হালকা
|
ড্যানিয়েল ক্রেগ |
গোলাপি বা ক্রিম রঙের শর্টসও কিনতে পারেন। আর তার সঙ্গে বেছে নিন মানানসই জুতো। স্লিপ-অনস পরতে পারেন। বা লোফার্স। খুব স্মার্ট হলে মোজা ছাড়া রঙিন ‘লেস-আপ জুতো’ও বেশ লাগে দেখতে,” বলছিলেন ডিজাইনার নরেন্দ্র কুমার আহমেদ।
যাঁরা বাইরে ঘুরতে যেতে চান তাঁদের জন্য কার্গো আদশ। “এখনকার ট্রেন্ড হল স্লিম-ফিট শর্টস পরা। সেই ট্রেন্ড অনুযায়ী কার্গো খুব একটা যায় না। তবু অনেকেই আছেন যাঁরা কার্গো পরে বেশ আরাম পান। কার্গো শর্টস-এ অনেক পকেট থাকে। তার মানে কিন্তু এটা নয় যে সব পকেটগুলোতেই জিনিস রাখতে হবে। ‘খাকিস’ও পরা যায়। তবে মনে রাখতে হবে যে খাকি শর্টসগুলো যেন এমন দেখতে হয় যাতে মনে হয় যে স্মার্ট দেখতে ট্রাউজারকেই কেটে শর্টস বানানো হয়েছে। ঝুল সম্পর্কে সচেতন হওয়াও জরুরি। ঠিক হাঁটু পর্যন্ত ঝুল হলে আমার বেশ ভাল লাগে দেখতে,” বলছেন নরেন্দ্র।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার কুলদীপ সিংহ এবং এনআইএফটি থেকে পাশ করা ডিজাইনার ব্রিজেশ দহিয়া মিলে শুরু করেছেন তাঁদের নিজের পোশাকের ব্র্যান্ড। নাম, ‘চিপসেক্স’।
পুরুষদের বিভিন্ন ধরনের ট্রেন্ডি পোশাক তাঁরা ডিজাইন করে ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে বেশ সাড়া ফেলেছেন। মনে আছে অভিনেতা প্রদ্যুমান সিংহকে? যিনি নকল ওসামা-বিন-লাদেন সেজেছিলেন ‘তেরে বিন লাদেন’ ছবিতে? প্রদ্যুমান তার পরে একটা ছবি করেছিলেন। নাম ‘লাইফ কী তো লগ গয়ি’। সেখানে প্রদ্যুমান যে শর্টসগুলো পরেছিলেন, সেগুলো সবই ব্রিজেশ আর কুলদীপের ডিজাইন করা।
কুলদীপ আর ব্রিজেশের দর্শন একটাই। যত পারো দুঃসাহসী হও। “প্লেইং সেফ ইজ আ কিলার,” বলেন ব্রিজেশ। “যখন দেখি কেউ সেই চিরাচরিত চেকস আর স্ট্রাইপ দেওয়া শর্টস পরে, আমার তা একদম ভাল লাগে না। শর্টস একেবারেই ব্যক্তিগত একটা পোশাক। সেখানে যতটা রঙিন হওয়া যায় ততই ভাল। ম্যাড়মেড়ে রঙের পোশাক একদমই চলে না। আমাদের পছন্দ উজ্জ্বল রং। অল্পবয়সিরা আমাদের হলুদ রঙের শর্টস খুব পছন্দ করেন,” ব্রিজেশ জানান। |
উত্তমকুমার |
টি-শার্টে যেমন মজার মজার কথা লেখা থাকে, ব্রিজেশ সেই একই রকমের ডিজাইন ব্যবহার করেন শর্টস তৈরিতে। “জানি না কেন মানুষ ভাবেন যে যত রকমের ফানি লাইনগুলো শুধু টি-শার্টেই লেখা উচিত। আমার তো মনে হয় শর্টস-এও সেই রকমই মজার লাইন থাকা দরকার। লোকের নজর কাড়তে হলে ওই দুষ্টু লাইনগুলো রাখতেই হয়। যত বেশি ক্যাচি হবে লাইনগুলো, ততই সেটা জনপ্রিয়তা পাবে,” বলেন ব্রিজেশ।
বক্সার শর্টসের মজার মজার নামও দিয়েছেন তাঁরা। বদমাশ বক্সার, প্যান্টস ডাউন বক্সার থেকে বিকিনি ব্যান্ডিড বক্সার আর বাসন্তী শর্টস মজার নাম দেওয়াটা এঁদের প্যাশন।
এ বছর বিচ শর্টস নিয়ে ব্রিজেশ বেশ উত্তেজিত। এই শর্টসগুলোর ঝুল আর রং ঠিক বক্সার শর্টসগুলোর মতো। কিন্তু সেগুলো বোতাম দেওয়া। কয়েকটিতে চেন লাগানো। বা ভালক্রো দিয়ে ডিজাইন করা।
খালি গা। বিচ শর্টস। তার সঙ্গে ‘বোটশ্যুজ’। জন আব্রাহামের মতো হট অ্যান্ড সেক্সি না হলেও, এ ভাবে গেলে নাকি নজর কাড়া একেবারে গ্যারান্টেড!
|
আমির খান
|
|
|
|
যত উজ্জ্বল রঙের শর্টস পরা যায়, ততই ভাল।
হলুদ রংটা আমার বিশেষ প্রিয়। আর টি-শার্ট-এর
বদলে চাই শর্টস-এ দুষ্টুমি ভরা নতুন নতুন সব স্লোগান
ব্রিজেশ দহিয়া |
এখনকার ট্রেন্ড হল স্লিম-ফিট শর্টস পরা।
আমার পছন্দ কমলা বা সবুজ রঙের টেলর্ড-শর্টস।
আর তার সঙ্গে মানানসই স্লিপ-অনস্ বা লোফার্স জুতো
নরেন্দ্র কুমার আহমেদ |
|
|
|
|
টিপস |
|
যতীন কোচর |
• শরীরের গঠন অনুযায়ী শর্টস পছন্দ করুন
• বিদেশের ফ্যাশন দুনিয়ায় শর্টসের ঝুল সাধারণত হাঁটু থেকে চার ইঞ্চি উপরে হয়
• তবে এ দেশে এত ছোট শর্টস সব সময় মানানসই লাগে না
• কারও পা যদি লোমশ হয়, সে ক্ষেত্রে এত ছোট ঝুলের শর্টস পরা একদমই অনুচিত
• যাঁদের চেহারা খুব ফিট, তাঁরা অবশ্য ছোট ঝুলের শর্টস পরতেই পারেন
• ভারতীয় পুরুষদের শর্ট কুর্তার সঙ্গে শর্টস পরলে দেখতে সুন্দর লাগে
• যাঁরা খুব রোগা তাঁরা অনেক সময়ই মনে করেন যে ঢিলা শর্টস পরলে বেশি মানাবে। কিন্তু এটা একেবারেই ভুল ধারণা। তাঁদের উচিত স্লিম-ফিট শর্টস বেছে নেওয়া
• ইক্কত প্রিন্টের শর্টস এখন বেশ নজর কাড়ছে
• পাউডারড্ নীল রঙের শর্টসের সঙ্গে সাদা ভয়েলের শার্ট বেশ মানানসই। শার্টের হাতা দুটি অবশ্যই গুটিয়ে রাখবেন
• সঙ্গে পরবেন ‘বোটশ্যুজ’। এতে ফরমাল আর ক্যাজুয়ালের মাঝামাঝি একটা লুক আসে
|
(তথ্য: ডিজাইনার যতীন কোচর) |
|
|
|
|
|
|