কলেজে জায়গা নেই। তাই বাইরে মহিলা হস্টেলের সামনে তৈরি মণ্ডপে। আবার কোথাও আইটিআই কলেজে বসে ইতিহাস পরীক্ষা দিতে হল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর কলেজ এবং জলপাইগুড়ির কামাখ্যাগুড়ি শহিদ ক্ষুদিরাম কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের। অসহ্য গরমে বেঞ্চে তিন জন পরীক্ষার্থীকেও বসতে হল। ওই পরিস্থিতিতে বিব্রত ইসলামপুর কলেজের অধ্যক্ষ উতথ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কলেজে এত পরীক্ষার্থীর বসার জায়গা নেই। তাই কলেজের বাইরে মাইনোরিটি মহিলা হস্টেলে এবং হস্টেলের সামনে ফাঁকা মাঠে প্যান্ডেল করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হয়েছে।” কামাখ্যাগুড়ি শহিদ ক্ষুদিরাম কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল কাদের সাফেলি বলেন, “ইতিহাস ও ঐচ্ছিক বাংলা পরীক্ষায় সমস্যা হচ্ছে। ওই দুটি বিষয়ে পরীক্ষার্থী বেশি। তাই পাশের একটি স্কুলে বসে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়েছে।” |
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালেয় অধীনে ওই দুটি কলেজে এদিন প্রথম বর্ষের ইতিহাস বিষয়ে পাস কোর্সের প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার্থী ছিলেন প্রায় ৩ হাজার ছাত্রছাত্রী। কলেজে দেড় হাজার পরীক্ষার্থীর বসার জায়গা করা সম্ভব হয়েছে। বাকিদের জন্য মহিলা কলেজের হস্টেলের ভিতরে, বাইরে প্যান্ডেল করে ব্যবস্থা করতে হয়েছে। একশো ছাত্রছাত্রীকে পরীক্ষা দিতে হয় সাইকেল স্ট্যান্ডে বসে। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যবস্থা করতে বিভিন্ন স্কুলগুলি থেকে বেঞ্চ আনা হয়েছে। কিছু বেঞ্চ ভাড়া করা হয়েছে। সুমন্ত দেবনাথ নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, “খুব সমস্যা হয়েছে। কোথায় সিট পড়েছে সেটা খুঁজে বার করতে জেরবার হতে হয়েছে। এর পরে গরমে বসে পরীক্ষা দেওয়া। একই ছবি ছিল কামাখ্যাগুড়ি শহিদ ক্ষুদিরাম কলেজে। পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৮৪৬ জন। কলেজে বসার জায়গা ছিল দেড় হাজারের। বাকি ৩৫০ পরীক্ষার্থীকে পাশের একটি স্কুলে বসানোর ব্যবস্থা করা হয়। ওই কারণে এ দিন স্কুলটি ছুটি দেওয়া হয়।
কেন ওই পরিস্থিতি? ইসলামপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, মহকুমা দুইটি কলেজের মধ্যে ইসলামপুর কলেজ চোপড়া, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকার পড়ুয়ারা ভিড় করেন। স্থান সঙ্কুলান না হলেও রাজনৈতিক চাপে পড়ে অনেক ছাত্রছাত্রীকে তাঁরা ভর্তি নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ। ওই কারণে জটিলতা দেখা দিয়েছে। কামাখ্যাগুড়ি শহিদ ক্ষুদিরাম কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, কুমারগ্রাম ব্লকে একমাত্র কলেজ হওয়ায় বাড়তি চাপ থাকে। এ ছাড়াও কোচবিহার জেলার বক্সিরহাট থেকে প্রচুর ছাত্রছাত্রী ওই কলে ভর্তি হচ্ছে। কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, “আড়াই বছর আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ ক্লাস ঘরের সমস্যা মেটাতে ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। কিন্তু ওই টাকা আজও মেলেনি। জানি না এর পরে কী দাঁড়াবে।” এই দিন জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষ সমস্যার কথা বিশদ জানালে সব রকম সাহায্য করা হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের বরাদ্দ টাকা কেন মেলেনি খোঁজ নিয়ে দেখব।” |