নিরাপত্তা কোথায়? রবিবার সকালে তাণ্ডবের পরে স্বাভাবিক ভাবে এই প্রশ্নই তুলছেন সিউড়ি সদর হাসপাতালের নার্সরা। পরিষেবা দিয়েও কেন তাঁদের মারধর খেতে হবে। তাই নিরাপত্তা ও সুবিচারের দাবিতে সোমবার বীরভূম জেলাশাসক ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই হাসপাতালের নার্সরা। নার্স প্রণতি চন্দ্র বলেন, “নার্স ছাড়া হাসপাতাল চলতে পারে না। অথচ নিরাপত্তার বেড়া টপকে দুষ্কৃতীরা আমাদের মারধর করে গেল।”
জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “সদর হাসপাতালে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ সুপার হাসপাতালের ভিতরে যথেষ্ট পুলিশের ব্যবস্থা করেছেন। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামোররও উন্নতি করা হবে।”
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রবিবার সকালে মুখে মুখে কালো কাপড় বেঁধে জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ঢুকে কর্তব্যরত নার্সদের মারধর করে জনা পনেরো দুষ্কৃতী। ব্যাপক ভাঙচুর চালায় হাসপাতালের সহকারী সুপার জয়দেব নায়েকের ঘরে। পুলিশ গিয়ে লাঠি চালিয়ে দুষ্কৃতীদের ছত্রভঙ্গ করে। |
তিন জন নার্স আহত হয়ে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। ওইদিন তিন জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। তাই এ দিন হাসপাতাল সুপারের ঘরে জেলাশাসকের প্রতিনিধি, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নার্সরা তাঁদের অভাব-অভিযোগ জানান। নার্স প্রণতি চন্দ্রের অভিযোগ, “প্রসূতি বিভাগের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে পরিকল্পনা করে দুষ্কৃতীরা ঢুকে নার্সদের মারধর করে গেল। অথচ হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিলেন না।” তাঁরা প্রসূতি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা এক জন চিকিৎসক রাখার দাবিও তুলেছেন।
হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিএমওএইচ গুরুদাস পাত্রও। তাঁর কথায়, “হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীদের বেড়া টপকে নার্সদের মারধর করা হল, অথচ নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দিতে এগিয়ে যাননি বা কেউ জখম হননি। তাই নিরাপত্তাকর্মীদের ভূমিকা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের দাবির বিষয় দেখতে বলা হয়েছে।” জানান, নিরাপত্তা বাড়ানো ও প্রসূতি বিভাগে আরও এক চিকিৎসক দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতাল সুপার মানবেন্দ্র ঘোষ। তিনি বলেন, “১৪ জন চিকিৎসকের জন্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। ২-৩ জন আবেদন করেছেন। পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকার জন্য হাসপাতালে কাজ চালাতে অসুবিধা হচ্ছে।” |