নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার |
আলিপুরদুয়ার মহকুমার অধিকাংশ এলাকায় আধার কার্ড তৈরির কাজ শুরু না-হওয়ায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বণিক সভাগুলির তরফে প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ ওঠে। আধার কার্ড না-থাকায় ভবিষ্যতে ভর্তুকিতে রান্নার গ্যাস মিলবে কি না বাসিন্দারা সেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রধান ডাকঘরে কার্ড তৈরি শুরু হলেও অজ্ঞাতকারণে তা বন্ধ।
আধার কার্ড তৈরির সমস্যার কথা মেনে জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “জেলার অধিকাংশ ব্লকে কার্ড তৈরির কাজ শুরু হয়নি। তবে রাজগঞ্জ, নাগরাকাটা ব্লক এবং জলপাইগুড়ি ও মালবাজারে হয়েছে। আলিপুরদুয়ার ও ধুপগুড়ি পুরসভায় কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ আদমসুমারী অনুযায়ী ৩৮ লক্ষ মানুষ জলপাইগুড়ি জেলায় বসবাস করে। তাই নির্দিষ্ট সময়ে কার্ড তৈরির কাজ শেষ করতে প্রচুর কর্মী প্রয়োজন। এক কর্তা জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দুশো কর্মী নিয়োগের কথা বলা হলেও কাজ করছেন ২০ জন। ওই কারণে শুরু করার পরেও আলিপুরদুয়ার ডাকঘরে কর্মীর অভাবে তিন মাস আগে কার্ড তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ওই ডাকঘরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক আজিতকুমার রায় বলেন, “একটি এজেন্সি ছয় মাস কাজ করে চলে গিয়েছে।” আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকে ভারপ্রাপ্ত ব্লক আধিকারিক অনুসূয়া দত্ত বণিক জানান, পাতলাখাওয়া ও পূর্ব কাঠালবাড়ি এলাকায় আধার কার্ড তৈরির কাজ হয়েছে। কিন্তু এখন বন্ধ। কালচিনিতে কার্ড তৈরি শুরু হয়নি বলে জানান বিডিও চন্দ্রসেন খাতি। আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যন দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আধার কার্ড তৈরি করার কাজ চলছে।”
বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে প্রশাসন তেমন উদ্যোগী না-হওয়ায় মহকুমার সর্বত্র আধার কার্ড তৈরির কাজ শুরু সম্ভব হয়নি। জয়গাঁ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রামাশঙ্কর গুপ্ত বলেন, “ভারত-ভুটান সীমান্ত শহর জয়গাঁর বাসিন্দাদের জন্য কার্ড তৈরির উদ্যোগ প্রশাসনের কর্তাদের নেই।” ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, আগামী দিনে সরকার রান্নার গ্যাসের নয়টি সিলিন্ডারের ভর্তুকির টাকা আধার কার্ডের নম্বরের সঙ্গে যুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করবে। যাদের আধার কার্ড ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকবে না তাঁরা বিপাকে পড়বেন। আলিপুরদুয়ার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান প্রদীপকান্তি পাল বলেন, “মহকুমার সর্বত্র আধার কার্ড তৈরির কাজ দ্রুত শুরুর জন্য সংস্থার তরফে জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।” কালচিনি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি বাবলু মজুমদার অভিযোগ করেন, আধার কার্ড না থাকলে রান্নার গ্যাস নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ঝামেলায় পড়বে। কিন্তু মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। |