ঋতব্রতকে নিয়েও প্রশ্ন
অস্ত্র সারদা-ক্ষোভ, ভোট প্রস্তুতি সিপিএমে
ঞ্চায়েত ভোট ঘিরে অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও সাংগঠনিক প্রস্তুতিতে ঢিলে দেওয়া যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিল সিপিএমের রাজ্য কমিটি। সারদা-কাণ্ডের জেরে রাজ্য জুড়ে শাসক দলের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতেই কাজে লাগাতে চাইছে তারা। বস্তুত, সারদা-কাণ্ডের পরে উত্তরের শিলিগুড়ি থেকে খাস কলকাতার মহাকরণের সামনে পর্যন্ত কংগ্রেসকে যে ভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে ময়দানে দেখা যাচ্ছে, বামেদের সে ভাবে চোখে পড়ছে না। আলিমুদ্দিনে সোমবার রাজ্য কমিটির বৈঠকে বেশ কিছু প্রতিনিধি এই প্রশ্নই তুলেছেন যে, রাজ্য জুড়ে লক্ষ লক্ষ লোক ওই কেলেঙ্কারিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যাঁদের অধিকাংশই গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থন করেছিলেন। এখন তাঁদের ক্ষোভকে কেন সরকার-বিরোধী আন্দোলনে পূর্ণ মাত্রায় কাজে লাগানো হবে না?
রাজ্য কমিটির বৈঠকে চুপচাপই ছিলেন এসএফআই নেতা।—নিজস্ব চিত্র
সিপিএম সূত্রের খবর, দলের অন্দরে এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতেই এ দিন রাজ্য কমিটির জবাবি ভাষণে রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেছেন, সারদা-কাণ্ডের পরে তাঁদের আক্রমণাত্মক হতে হবে। রক্ষণাত্মক নয়। আমানতকারীদের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবে আমানতকারীদের প্রতিবাদে সরাসরি দলীয় মঞ্চকে জড়ানোর পক্ষপাতী নন বিমানবাবুরা। বরং, সব ধরনের মানুষ যাতে ওই প্রতিবাদে সামিল হতে পারেন, তা দেখাই আলিমুদ্দিনের লক্ষ্য। এই জন্যই বিমানবাবুর পরামর্শ, ছাত্র-যুব-মহিলাদের গণসংগঠনগুলির মঞ্চ থেকে ধারাবাহিক আন্দোলন করতে হবে। আর এর সঙ্গেই চালাতে হবে পঞ্চায়েত ভোট এবং ১৩টি পুরসভার নির্বাচনের প্রস্ততি। সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব মনে করছেন, এই আর্থিক কেলেঙ্কারি এত ব্যাপক যে, এর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আন্দোলন নিজে থেকেই গতি পাবে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “আগামী দিনে আরও সংস্থার কেলেঙ্কারি এবং তাদের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগের কথা আমরা মানুষের কাছে তুলে ধরব।”
সারদা-কাণ্ডে আন্দোলনের নানা দিক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশিই এ দিনের বৈঠকে প্রশ্ন উঠেছিল দিল্লি-কাণ্ড নিয়েও। দলীয় সূত্রের খবর, বর্ধমান, কোচবিহার ও হুগলির তিন জেলা সম্পাদক এবং আরও এক বর্ষীয়ান সদস্য দিল্লিতে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের নিগ্রহের ঘটনায় এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকার সমালোচনা করেন। তাঁদের বক্তব্য, এমন কর্মসূচির পরিণাম পশ্চিমবঙ্গে কী হতে পারে, দিল্লির নেতারা তা না-ও জানতে পারেন। কিন্তু এ রাজ্যের কর্মী হিসাবে ঋতব্রতের তা বুঝে সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। তাই শুধু দিল্লির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে তিনি ‘দায়’ এড়াতে পারেন না। ঋতব্রত নিজে এ দিন রাজ্য কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও তিনি মুখ খোলেননি বলেই দলীয় সূত্রের খবর।
জেলার কিছু প্রভাবশালী নেতা প্রশ্ন তুললেও আলিমুদ্দিন যে ঋতব্রতের পাশেই আছে, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট। জবাবি ভাষণে বিমানবাবু ওই প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর যে ‘নোট’ বৈঠকে পেশ করা হয়েছে, সেখানেও বলা হয়েছে যোজনা কমিশনের সামনে ওই বিক্ষোভ কর্মসূচির উদ্যোক্তা ছিল দিল্লি রাজ্য কমিটি। সেখানে ‘অনভিপ্রেত’ ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গী মন্ত্রীরা পুলিশের কথা না-শুনে বিক্ষোভের মধ্যে দিয়েই ঢুকতে গিয়ে পরিস্থিতি ঘোরালো করে দিয়েছিলেন। আলিমুদ্দিনের এই মতই ২৪ ঘণ্টা আগে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পানিহাটির সভায় তিনি বলেছিলেন, “ওখানে বিক্ষোভ করতে যাওয়া ঠিক হয়নি। আমি দিল্লির পার্টিকে বলেছি। ঠিকই যে, উনি (মুখ্যমন্ত্রী) নেমে পড়েছিলেন। তোমরা নামাওনি। কিন্তু উনি কী করবেন, কেউ তো জানে না! তোমরা করতে (বিক্ষোভ) করতে গেলে কেন?”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.