প্রথম আইপিএলের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সে বারও শুরুর দিকে রাজস্থান রয়্যালসকে কেউ পাত্তা দেয়নি। এ বার একই ঘটনা ঘটছে। টিমটাকে কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। আর এ বারও বড় একটা চমক দেওয়ার ক্ষমতা আছে রাহুল দ্রাবিড়ের এই দলটার। এ দিন যেমন বেঙ্গালুরুকে (১৭১-৬) চার উইকেটে হারিয়ে দিল রাজস্থান (১৭৩-৬)। ওয়াটসনরা তো ভাল খেললই, স্যামসন ছেলেটাও চমকে দিল।
প্রথম বছরে রাজস্থানের সাফল্যের পিছনে ছিল শেন ওয়ার্ন মডেল। এ বার উঠে এসেছে দ্রাবিড় মডেল। দুটো মডেলের মধ্যে যেমন মিল আছে, অমিলও আছে। ওয়ার্ন-দ্রাবিড় কেউই তারকা প্রথায় বিশ্বাসী নয়। দু’জনের টার্গেট ছিল, ইউটিলিটি ক্রিকেটার তুলে আনা। অমিল? ওয়ার্ন পুরোদস্তুর শো ম্যান। রাহুল সব সময় আড়ালে থেকে নিজের কাজটা করে যায়। |
রাজস্থানের সাফল্যের রেসিপি খুব সহজ। এক, মাঠের বাইরে টিম ম্যানেজমেন্টের কাজ। এবং দুই, মাঠের মধ্যে অধিনায়কের ভূমিকা। আর দুটোতেই রাহুলের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা আছে। দলে তারকা বলতে একমাত্র শেন ওয়াটসন। তরুণ মুখের ভিড় বেশি। আগে থেকেই যেমন আছে রাহানে, সিদ্ধার্থ ত্রিবেদীরা। এ বার উঠে এসেছে স্যামসন, স্টুয়ার্ট বিনিরা। যতদূর জানি, রাহুল নিজে ঘুরে ঘুরে ট্যালেন্ট স্পট করেছে।
একে তো রাহুল নতুনদের কাছে ‘রোল মডেল’। তার উপর সামনে থেকে সমানে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কখনও ডেল স্টেইনকে সামলানোর জন্য নিজে ওপেন করছে। কখনও দ্রুত রান তুলতে হবে বলে তিন নম্বরে ইয়াগনিকের মতো তরুণকে পাঠাচ্ছে। নিজে ব্যাট করছে না। আবার নাইটদের শক্তি বুঝে ঘাসের পিচ বানিয়ে পাঁচ পেসার নামিয়ে দিচ্ছে। সব কিছুর পিছনেই আছে ওর ক্ষুরধার ক্রিকেটীয় মস্তিষ্ক। মনে রাখবেন, রাজস্থান কিন্তু ঘরের মাঠে পাঁচটা ম্যাচ জিতল।
রাহুল আসায় ড্রেসিংরুমেও একটা ‘ফিল গুড’ পরিবেশ রয়েছে। আর কে না জানে, যে ড্রেসিংরুমে এই পরিবেশ থাকে সেই দল মাঠে নামেই চনমনে মেজাজে। বিদেশি ক্রিকেটারদের বাছাই করার ক্ষেত্রেও বুদ্ধি দেখিয়েছে দ্রাবিড়। ব্র্যাড হজ, শন টেট, ওয়েইস শাহ, কেভন কুপার, জেমস ফকনার। কেউ বড়সড় নাম নয়। কিন্তু কার্যকরী। ফলে ইগোর লড়াইটাও নেই। গোটা দলটাই একটা পরিবারের মতো। একটা সফল টিমের জন্য যা সবথেকে জরুরি।
|