|
|
|
|
|
এলাকায় শিবির করেও বাড়ানো
যাচ্ছে না ঋণ শোধের পরিমাণ
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
|
বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। অথচ, ঋণ শোধের হার আশানুরূপ নয়। অনেকেই সময় মতো ঋণ শোধ করছেন না। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এক সময় ঋণ শোধের হার বাড়াতে গ্রামে গ্রামে শিবির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শিবির করাও হয়। তবে সার্বিক পরিস্থিতির তেমন হেরফের হয়নি। সম্প্রতি ডিস্ট্রিক্ট কনসালটেটিভ কমিটির বৈঠকে পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের লিড ডিস্ট্রিক্ট ব্যাঙ্ক ম্যানেজার (এলডিএম) সমরেন্দ্র সন্নিগ্রাহী বলেন, “ঋণ শোধের হার বাড়াতে কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ব্লক স্তরে ক্যাম্প করা হচ্ছে।”
ডিস্ট্রিক্ট কনসালটেটিভ কমিটির শেষ বৈঠকে পেশ করা রিপোর্ট অনুযায়ী, কৃষি ক্ষেত্রে ৫৭.৫৬ শতাংশ ঋণ শোধ হয়েছে। ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে মাত্র ৪২.৩৯ শতাংশ ঋণ শোধ হয়েছে। আর চাকরির ক্ষেত্রে ৬৭.৭০ শতাংশ ঋণ শোধ হয়েছে। অর্থাৎ, চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রেই ঋণ শোধের হার বেশি। এঁদের কেউ বাড়ি তৈরি বা ফ্ল্যাট কিনতে ঋণ নিয়েছিলেন, কেউ গাড়ি কেনার জন্য, কেউ বা অন্য কোনও ক্ষেত্রে। তবে এ ক্ষেত্রেও ঋণ শোধের হার আশানুরূপ নয় বলেই মনে করছেন জেলা প্রশাসনের একাংশ কর্তা। তাঁদের মতে, চাকরিজীবীদের একটা অংশের মধ্যেও ঋণ শোধে অনাগ্রহ রয়েছে। না হলে শোধের হার আরও বাড়ত।
এই অবস্থায় ব্লক স্তরে আরও বেশি সংখ্যক শিবির করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। সরকারি প্রকল্পের সুযোগ মেলে না বলে হামেশাই অভিযোগ ওঠে। যেমন, প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রকল্প বা কর্মসৃজন প্রকল্প। উৎপাদনমূলক বা পরিষেবামূলক কাজের ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের ঋণ মেলে। ঋণ নিয়ে নিয়ে বেকার যুবক-যুবতীরা ধান ভাঙা, গম পেশাই, মশলা তৈরি, মাদুর-মাদুরজাত দ্রব্য তৈরি, কাঠের আসবাব তৈরি প্রকল্প কিংবা সাইকেল রিপেয়ারিং, পাম্প মেরামত, অটোমোবাইল রিপেয়ারিং ইত্যাদি কাজ করতে পারেন। জেলায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রকল্পে ঋণ শোধের হাল খুবই খারাপ। এ ক্ষেত্রে ঋণ শোধের হার মাত্র ৩০.৪১ শতাংশ। আর বাংলা স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্পে ঋণ শোধের হার ৩২.০৯ শতাংশ।
ঋণ দানের আরও দশটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে ঠিক কী পরিস্থিতি, তা নিয়েও আলোচনা হয় ডিস্ট্রিক্ট কনসালটেটিভ কমিটির ওই বৈঠকে। দেখা গিয়েছে, কোনও প্রকল্পের ক্ষেত্রে ঋণ শোধের হার ৫৫ শতাংশ, কোনও ক্ষেত্রে ১৮ শতাংশ! জেলা প্রশাসনের মতে, ঋণ গ্রহীতাদের একটা বড় অংশ ঋণ শোধের ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখান না। ফলে, ব্যাঙ্ক সমস্যায় পড়ে। ঋণ দেওয়ার আগ্রহ হারায়। এই অবস্থায় ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় গ্রামবাসীকে নিয়ে বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন মনে করছে, এতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। লিড ডিস্ট্রিক্ট ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বলেন, “বিভিন্ন প্রকল্প ধরে ধরে আমরা পর্যালোচনা করি। ঋণ শোধের হার বাড়ানো জরুরি। আমরা কিছু অ্যাকশন পয়েন্টও ঠিক করেছি। সেই মতোই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
|
ক্ষেত্র |
ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা |
আদায় হয়েছে |
কৃষি |
৭৮২ কোটি ১ লক্ষ |
৪৫০ কোটি ১৫ লক্ষ |
ক্ষুদ্রশিল্প |
২১২ কোটি ২৯ লক্ষ |
৮৯ কোটি ৯৯ লক্ষ |
চাকরিজীবী |
৪৪০ কোটি ১০ লক্ষ |
২৯৭ কোটি ৯৫ লক্ষ |
সর্বমোট |
১ হাজার ৪৩৪ কোটি ৪০ লক্ষ |
৮৩৮ কোটি ৯ লক্ষ টাকা |
|
|
|
|
|
|