পাইলট সেজে ‘প্রতারণা’, ধৃত
তিনি নাকি পাইলট। অথচ, তাঁর মোবাইলের ‘টাওয়ার লোকেশন’ অধিকাংশ সময়েই একটি দোকানের ঠিকানা। সেই সূত্রেই ধরা পড়লেন পাইলট সেজে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া ‘প্রতারক’। অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার পরে উধাও হয়ে যান তিনি।
টাওয়ার লোকেশন দেখেই সন্দেহ হয়েছিল তদন্তকারীদের। কারণ, যে যুবক পেশায় বিদেশি বিমান সংস্থার পাইলট, তিনি কী ভাবে একটি দোকানে কিংবা তার আশপাশে বেশির ভাগ সময় কাটাতে পারেন? শেষমেশ দিন কয়েক আগে গড়িয়া এলাকার ওই দোকানের উপর নজরদারি চালিয়ে ‘পাইলট’ পরিচয়ধারী যুবককে গ্রেফতার করে ফেলল কলকাতা পুলিশের প্রতারণা দমন শাখা। ওই শাখার ওসি অসীম দাসের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনার তদন্তে নেমেছিল। অম্বরীশ সরকার নামে ওই যুবক ধরা পড়ার পরে জানা গেল, ওই যুবক আদপে এক জন সেলসম্যান। বিবাহ-সংক্রান্ত একটি ওয়েবসাইটে নিজেকে পাইলট পরিচয় দিয়ে বিবাহযোগ্য তরুণীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেন তিনি। সোমবার কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “এন্টালির এক তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ওই যুবকের উপরে নজরদারি চালিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা বছর সাঁইত্রিশের অম্বরীশ গড়িয়ার একটি বৈদুতিন সরঞ্জামের দোকানের সেলসম্যান। একটি বিবাহ সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে তিনি একটি প্রোফাইল বানান। সেখানে নিজেকে এমএসসি পাশ এবং পেশায় পাইলট পরিচয় দেন। এমনকী, আমেরিকায় নিজের ফ্ল্যাট রয়েছে বলেও দাবি করেন। পাশাপাশি, কলকাতার সাউথ সিটিতে একটি বড় মাপের ফ্ল্যাট কেনার জন্য টাকা অগ্রিম দেওয়া রয়েছে বলেও প্রোফাইলে বলা ছিল।
প্রোফাইল পড়ে আগ্রহী দু’তিন জন তরুণী অম্বরীশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেন। কিন্তু এন্টালির বাসিন্দা, বর্ধমানের একটি সংস্থায় চাকুরিরতা এক তরুণীর সঙ্গেই ওই যুবকের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। অভিযোগ, বছর পঁচিশের ওই তরুণীর সঙ্গে ঘনঘন দেখাও করতে শুরু করেন অম্বরীশ। আর যখন দেখা হত না, তখন তিনি এসএমএস করতেন, উড়ান নিয়ে বিদেশে গিয়েছেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওয়েবসাইট থেকে সুন্দরী মহিলাদের ছবি ডাউনলোড করে তার পাশে নিজের ছবি লাগিয়ে পারিবারিক ছবি বলে দাবি করে তা ওই তরুণী এবং তাঁর পরিজনদের দেখান ওই যুবক। আদপে পঞ্জাবের বাসিন্দা হলেও কলকাতায় এসে তিনি বেহালায় একটি ফ্ল্যাটে থাকেন বলেও দাবি করেন। অভিযোগকারী তরুণী পুলিশকে জানান, মেলামেশার সময়ে এক দিন অম্বরীশ জানান, তাঁর কাছে বিদেশি মুদ্রা রয়েছে। হাতে সময় কম থাকায় সেগুলি ভাঙাতে পারছেন না। কিন্তু ফ্ল্যাটের জন্য ঘোরাঘুরি করতে তাঁর একটি দামি মোটরবাইক প্রয়োজন। তাই ওই তরুণী যদি তাঁকে ৭০ হাজার টাকা দেন, তবে বিয়ের পাকা দেখার দিনই তিনি সেই টাকা ফেরত দেবেন। ওই তরুণী বাড়ির অমতেই অম্বরীশকে টাকা দেন। ওই টাকায় ভাগ্নের নামে বাইক কেনেন অম্বরীশ। কিছু টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে রাখেন। এর পরে কিছু দিন ঘোরাঘুরির পরে আচমকাই উধাও অম্বরীশ। মোবাইল বন্ধ। তখনই পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই তরুণী। গত ৯ এপ্রিল পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তে নেমে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গোয়েন্দারা জানতে পারেন আরও কয়েকটি নম্বর আছে ওই যুবকের। সেগুলির টাওয়ার লোকেশনই শেষে ধরিয়ে দেয় ‘পাইলট’ অম্বরীশকে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.