পড়ে কয়েক কোটি, জমি-সঙ্কটে ফ্ল্যাট পাচ্ছেন না দুঃস্থেরা
মি-সঙ্কট তো ছিলই। তার সঙ্গে গোদের উপরে বিষফোঁড়ার মতো যুক্ত হয়েছে সরকারি জমি দখলমুক্ত করার প্রশ্নে রাজ্য প্রশাসনের উচ্ছেদ-বিরোধী অবস্থান। এর জেরে থমকে গিয়েছে বিধাননগরের সংযোজিত এলাকায় দারিদ্রসীমার নীচে থাকা (বিপিএল) পরিবারগুলির জন্য ৫০০ ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ।
বিধাননগর পুর-এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রকল্প ‘বেসিক সার্ভিসেস ফর দি আর্বান পুওর’ (বিএসইউপি)-এর দ্বিতীয় দফার কাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালের প্রথম দিকে। বিধাননগরের তদানীন্তন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে (অধুনা ১৭ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ড) সাকুল্যে ৫০০টি বাড়ি তৈরির কাজ হাতে নিয়েছিল পুরসভা। গত তিন বছরে মাত্র ১১টি বাড়ি তৈরির পরেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে ওই প্রকল্পের কাজকর্ম। পড়ে আছে ওই বাবদ কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের দেওয়া আড়াই কোটি টাকারও বেশি।
কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে বিএসইউপি প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ দেবাশিস জানা বলেন, “ওই এলাকায় প্রকল্প রূপায়ণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি পাওয়া যাচ্ছে না। যা জমি রয়েছে, তা রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের। ওই জমিও দখল করে বসতি গড়ে উঠেছে।” প্রসঙ্গত দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, প্রকল্প রূপায়ণের প্রয়োজনীয় জমির জন্য গত ১৫ জানুয়ারি নগরোন্নয়ন দফতরে আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “শুধু বিধাননগরেই নয়, বিএসইউপি প্রকল্পের কাজে কমবেশি জমি-সমস্যা দেখা দিয়েছে রাজ্যের আরও কিছু পুর-এলাকাতেও।” বিধাননগরের বিএসইউপি প্রকল্প রূপায়ণে জমির সমস্যা বিষয়ে নগরোন্নয়ন মন্ত্রী জানান, ওই এলাকায় নগরোন্নয়ন দফতরের জমি রয়েছে ঠিকই। সেই জমি দখল করে ঘর-বাড়ি তৈরি হয়েছে অনেক দিন আগেই। অনেক বাড়িতে রয়েছে ভাড়াটেও। মন্ত্রী বলেন, “আমরা ওই জমি থেকে কাউকে উচ্ছেদ করতে চাই না। বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটেরা বিএসইউপি প্রকল্প রূপায়ণের কাজে সহযোগিতা করতে রাজি হলে (অর্থাত্‌, নির্মাণকাজের জন্য জমি দখলমুক্ত অবস্থায় পাওয়া গেলে) নগরোন্নয়ন দফতর ওই জমি বিধাননগর পুরসভাকে হস্তান্তর করবে।”
বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১০ সালের গোড়ায় তদানীন্তন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিএসইউপি প্রকল্পের দ্বিতীয় দফায় ৫০০ গৃহ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। প্রকল্পের নির্দেশিকা অনুযায়ী, উপভোক্তারা, অর্থাত্‌ বাড়ি প্রাপকেরা হবেন বিপিএল তালিকাভুক্ত। নির্মিত বাড়ির জমির দলিল কিংবা পাট্টা প্রাপকের নামে থাকতে হবে। প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয়ের ৫০ শতাংশ বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য দেবে ২৫ শতাংশ। বাড়ি তৈরির ২০ শতাংশ ব্যয় বহন করতে হবে উপভোক্তা, অর্থাত্‌ বাড়ির প্রাপককে। বাকি পাঁচ শতাংশ ব্যয় বহন করবে কেএমডিএ। ২০১০-এর ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প রূপায়ণের জন্য বিধাননগর পুরসভায় দু’কোটি ৭১ লক্ষ টাকা আসে।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, মোট ৫০০ বাড়ির মধ্যে ১৬৪টি একতলা এবং ৩৩৬টি চারতলা ফ্ল্যাট তৈরির কথা ছিল। প্রতিটি ফ্ল্যাটের নির্মাণের খরচ ধরা হয়েছিল ১ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা করে।
বিধাননগরের পুরনো ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের (এখন ১৭ নম্বর ওয়ার্ড)-এর কাউন্সিলর তথা পুরসভার বিরোধী নেত্রী ইলা নন্দী জানান, বিএসইউপি প্রকল্পের প্রথম দফায় বাম পুর বোর্ডের আমলে এলাকার খাসমহলে ১৬২টি বাড়ি তৈরি হয়েছিল। ওই প্রকল্পের দ্বিতীয় দফায় ৫০০টি ফ্ল্যাট তৈরি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১১টি ফ্ল্যাট তৈরি হওয়ার পরে জমি না-মেলায় কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিএসইউপি প্রকল্পের দ্বিতীয় দফার কাজ হওয়ার কথা ছিল বিধাননগরের বর্তমান ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসন্তী কলোনিতেও। প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকার ব্যাপারে এলাকার সিপিএম কাউন্সিলর সুবল রং বলেন, “প্রকল্প এলাকার জমি জবরদখল হয়ে আছে। আগে জমি বিলি করে দখলে থাকা ব্যক্তির নামে পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘকাল পাট্টা বিলি করা হয়নি। সেখানে কাজ হবে কী ভাবে?
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.