ঠকানোর দায় চিট ফান্ডের ঘাড়ে কেন
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
সংবাদের শিরোনাম। রাজনীতির তরজা। বিক্ষুব্ধদের খেউড়। কিংবা পাড়ার আড্ডা। সারদা-কাণ্ড সামনে আসার পর থেকে প্রায় সর্বত্র সব থেকে বেশি আলোচিত শব্দ সম্ভবত একটাই। ‘চিট ফান্ড’। কিন্তু ভুঁইফোঁড় সংস্থাগুলির কার্যকলাপ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ওই শব্দকে পুরোপুরি ভুল ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সংগঠন সিএফএআই।
তাদের দাবি, কলকাতার যে সংস্থার (সারদা) বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠেছে, তা চিট ফান্ড নয়। অন্যান্য যে সব ভুঁইফোঁড় সংস্থার কাজ-কারবার এখন সন্দেহের আতস কাচের তলায়, চিট ফান্ড নয় তারাও। অথচ সংস্থাগুলির সর্বত্র তাদের পরিচয় দেওয়া হচ্ছে চিট ফান্ড বলে। সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে টাকা তোলার বিষয়টি সম্পর্কে বলতে বা লিখতে গিয়ে বহু ক্ষেত্রে ওই একই শব্দ প্রয়োগ করছে সংবাদমাধ্যমও। অথচ সারা দেশ তোলপাড় করে দেওয়া যে ঘটনা ঘটছে, তার সঙ্গে দূর-দূরান্তেও চিট ফান্ডের কোনও সম্পর্ক নেই বলে সংগঠনটির দাবি।
চিট ফান্ড ব্যবসার ক্ষোভ, যে ভুঁইফোঁড় সংস্থাগুলি এ ভাবে মানুষকে ঠকিয়ে টাকা তুলছে, তারা আসলে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি। এদের লোক দেখানো কিছু ব্যবসা থাকলেও, তার ভিত্তি নেই। এই ব্যবসা তত দিনই চলে, যত দিন নতুন প্রিমিয়ামের জোগান আছে। তা শেষ হয়েই এই ব্যবসার দফারফা।
কিন্তু সংগঠনের মতে, চিট ফান্ডের ব্যবসার ধরন মোটেও এমন নয়। প্রথমত, সেখানে মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলাই বেআইনি। তা সংগ্রহ করা যায় শুধু ফান্ডের সদস্যদের কাছ থেকে। তার পর তা ‘খাটিয়ে’ (অনেক ক্ষেত্রে ওই ভাঁড়ার নিলামে তুলে) লভ্যাংশের টাকা ভাগ করে দেওয়া হয় ফান্ড-সদস্যদের মধ্যে। সারা দেশে নথিভুক্ত ১০ হাজার চিট ফান্ডে বছরে চাঁদাই (সদস্যদের দেওয়া অর্থ) জমা পড়ে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। অল ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশন অফ চিট ফান্ডস্-এর জেনারেল সেক্রেটারি টি এস শিবরামকৃষ্ণনের দাবি, সারদা গোষ্ঠীর কোনও ব্যবসাকেই চিট ফান্ড বলা যায় না। তিনি আরও জানান, “চিট ফান্ড নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রের নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। মূল নিয়ন্ত্রক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তা ছাড়া প্রতি রাজ্যে রয়েছে সেখানকার সরকার নিযুক্ত রেজিস্ট্রার অফ চিটস্।’’ এমন নিয়মের নিগড়ে বাঁধা চিট ফান্ডকে লোক-ঠকিয়ে পয়সা তোলার সমার্থক শব্দ করে তোলা কেন হবে, সেটাই তাঁদের প্রশ্ন। |