প্রত্যাশা ছাপিয়ে বেশ কয়েকটি সংস্থার ভাল আর্থিক ফলাফলই সোমবার টেনে তুলল সেনসেক্সকে। পাশাপাশি রয়েছে এ সপ্তাহেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর সম্ভাবনা, ইউরোপীয় শীর্ষ ব্যাঙ্কের আর এক দফা সুদ ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত এবং আমেরিকার আর্থিক ত্রাণ প্যাকেজ বহাল রাখার সিদ্ধান্ত। যার জেরে এ দিন সকাল থেকেই চড়তে শুরু করে সেনসেক্সের পারা। দিনের শেষে সেনসেক্স প্রায় ১০১ পয়েন্ট বেড়ে বন্ধ হয় ১৯,৩৮৭.৫০ অঙ্কে। যা গত এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ডলারে টাকার দামও এ দিন ১২ পয়সা বাড়ায় বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৪.২৫ টাকা।
এ দিন ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফ্টি-ও প্রায় ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে ছুঁয়েছে ৫,৯০৪ অঙ্ক।
বাজার সূত্রের খবর, সদ্য সমাপ্ত ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে হিন্দুস্তান ইউনিলিভার লিমিটেড, হিরো মোটোকর্প, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক এবং মারুতি-সুজুকির ভাল ফলাফলই ওই সমস্ত সংস্থার শেয়ারের চাহিদা বিপুল ভাবে বাড়িয়ে দেয়। এর মধ্যে হিন্দুস্তান ইউনিলিভার সোমবারই তার আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করে মার্চে শেষ হওয়া চতুর্থ ত্রৈমাসিকে নিট মুনাফা এক ধাক্কায় প্রায় ১৫ শতাংশ বেড়ে ৭৮৭.২০ কোটি টাকা ছোঁয়ার কথা জানিয়েছে। লেনদেনকারীরা জানান, এর প্রভাবে সংস্থার শেয়ার দর বেড়ে যায় প্রায় ৭ শতাংশ।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি নামী সংস্থার ফলাফলও সোমবার প্রভাব ফেলে বাজারে। বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে মারুতি-সুজুকির লাভ প্রায় ৮০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১,১৪৭ কোটি টাকা । ২১ শতাংশ লাভ বাড়ার খবর প্রকাশ করেছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক। অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের ত্রৈমাসিক লাভ ১,২৭৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে স্পর্শ করেছে ১,৫৫৫ কোটি টাকা। বিক্রি এবং লাভ কমা সত্ত্বেও কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই ৩,০০০ শতাংশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে বিশ্বের বৃহত্তম মোটরবাইক কোম্পানি হিরো মোটোকর্প। প্রতি ২ টাকার শেয়ারে কোম্পানি ডিভিডেন্ড দেবে ৬০ টাকা করে। এ দিন সংস্থার শেয়ার দর বেড়ে যায় ৩.২৪ শতাংশ।
ইউরোপীয় শীর্ষ ব্যাঙ্ক এ সপ্তাহেই ফের সুদ কমানোর পথে হাঁটতে পারে, এই ইঙ্গিতে চাঙ্গা হয় ইউরোপের বাজার, যার প্রভাব পড়ে ভারতে। ইতালির নতুন সরকার গঠনও বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পাাশাপাশি, এ দেশের বাজারের জন্য টনিকের কাজ করেছে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের আর্থিক ত্রাণ প্রকল্পগুলি চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত। মন্দার সময়ে ওই সব প্রকল্প চালু হলেও অর্থনীতির স্বাস্থ্য ফেরাতে সেগুলি এখনও প্রয়োজন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও।
বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলিও ভিড় করেছিল ভারতের বাজারে। শুক্রবার তারা প্রায় ২২৫ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে। সোমবারও এই প্রবণতা ছিল অব্যাহত। এই কারণে এবং বিশ্ব বাজারে ডলারের দাম কমার হাত ধরে এ দিন বাড়ে টাকার দাম। |