স্কুল পরিচালন সমিতির অভিভাবক নির্বাচনের জন্য এ বারই প্রথম নির্বাচন হল রামপুরহাটের নাইশর গ্রামের হাইস্কুলে। আর প্রথম বারের নির্বাচনেই ধরাশায়ী হলেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। রবিবার ৫-১ ফলে জয়ী হয়েছেন বামপন্থী প্রগতিশীল জোটপ্রার্থীরা। যদিও মাত্র একটি ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলের জেতা ওই একমাত্র আসনটি নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সিপিএমের রামপুরহাট ১ জোনাল সম্পাদক আকতাবুস জামান বলেন, “আমরা ওই আসনটির পুনর্গণনার দাবি করেছি। দেখা যাক কী হয়।” অন্য দিকে, শরিকদল সিপিআই-এর বুদ্ধেশ্বর বাউড়ি-র দাবি, “ওই একটি আসন এখনও তৃণমূল পায়নি। গণনায় আমাদের পক্ষে যাওয়া একটি ভোটকে অন্যায় ভাবে বাতিল করা হয়েছিল। আমরা তাই পুনর্গণনার দাবি করেছি।”
স্কুল সূত্রে খবর, ১৯৮৪ সালে ওই স্কুল মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। তখন থেকেই স্কুল পরিচালন সমিতির নির্বাচনে কোনও দিন ভোট হয়নি। মনোনয়ন করেই এতদিন সমিতি গঠন হয়ে আসছিল বলে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে। স্কুলের টিচার ইন চার্জ সমীর মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ বারই প্রথম নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালন সমিতি গঠনের জন্য গত ১৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হিসেবে ধার্য করা হয়। ছ’টি আসনের জন্য ১৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।” রবিবার ভোটের পরে দেখা যায় ৫-১ ব্যবধানে তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীদের হারিয়ে দিয়েছেন বাম প্রার্থীরা। একটি আসনের ফল নিয়ে বামেদের তোলা আপত্তি নিয়ে সমীরবাবু বলেন, “ফল ঘোষণার সময়ে কেউ আপত্তি করেননি। তবে এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসারই নেবেন।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, নাইসর গ্রাম হাইস্কুলে মূলত নারায়ণপুর অঞ্চলের বেশির ভাগ গ্রামের ছেলেমেয়েই পড়াশোনা করে। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত দীর্ঘদিন ধরে বামেদের দখলে থাকলেও এলাকার বিধায়ক তৃণমূলের। দলের পরাজয় প্রসঙ্গে রামপুরহাট ১ ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেন বলেন, “নাইসর গ্রাম স্কুলে দীর্ঘদিন নির্বাচন হয়নি। সিপিএম নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে সেখানে স্কুল পরিচালন করত। প্রথম বার হওয়া নির্বাচনে তৃণমূলকে হারাতে সিপিএম, কংগ্রেসস বিজেপি সবাই একজোট হয়ে যাওয়াতেই এই ফল।” বিজেপি সমর্থিত ছয় প্রার্থীও ওই নির্বাচনে ভাল ভোট পেয়েছেন। একটা অংশের মত, বিজেপি ভাল ভোট কাটায় বামেদের ফল ভাল হয়েছে। যদিও আকতাবুসবাবুর দাবি, “তৃণমূল সরকারের এমন ভুলে ভরা রাজ্য পরিচালনা মানুষ ভাল চোখে দেখছেন না। তাই মানুষ এখন তৃণমূলকে চাইছেন না। এটাই আমাদের জয়ের মূল কারণ।” |