মালবোঝাই লরি চাপা পড়ে ঘুমন্ত অবস্থাতেই মৃত্যু হল চার ফেরিওয়ালার। তাঁদের মধ্যে তিন জন ভাই। রবিবার রাতে বর্ধমানের নবাবহাটে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃত ফেরিওয়ালাদের নাম জাহেদ আলি (৫৩), জোহাদ শেখ (৪৬), আব্দুল বারি ওরফে লালু (৩৫) ও মেহের আলি (৩৪)। এঁদের মধ্যে তিন জনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের রেজিনগর থানার দাদপুরে। বাকি একজনের বাড়ি বেলডাঙায়। প্লাস্টিকের খেলনা ও গৃহস্থালির টুকিটাকি নানা জিনিস ফেরি করতেন এঁরা।
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “মাদার ডেয়ারির কাছে জি টি রোডে একটি অজ্ঞাত যান ভোর রাতে অন্য লেন ধরে যেতে যেতে ডিভাইডারের ধাক্কা খায়। তারপরে ডিভাইডার টপকে, ওই ডিভাইডারে শুয়ে থাকা তিনজন ও রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা অন্য জনকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তিন জন মারা যান। একজনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে মৃত ঘোষণা করা হয়। যানটিকে খোঁজা হচ্ছে।”
|
এই চারজনের সঙ্গে আরও তিন ফেরিওয়ালাও এ দিন মুর্শিদাবাদ থেকে বর্ধমানে এসেছিলেন। তাঁদের একজন বেলডাঙার এরকুল খান বলেন, “রাতে ঘুমিয়েছিলাম। আচমকা প্রচন্ড শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। দেখি, একটি লরি রাস্তার ডিভাইডার টপকে দ্রুত পালাচ্ছে। সঙ্গেসঙ্গেই কয়েকজনের আর্তনাদ শুনতে পাই। ছুটে গিয়ে দেখি রক্তের মধ্যে শুয়ে রয়েছেন ওই চারজন।” মৃত জাহেদ শেখের ছেলে মুস্তাকিন শেখ বলেন, “বাবা প্রতিবারই কাকাদের সঙ্গে নিয়ে ফেরি করতে নানা জেলায় যান। এ বার তাঁরা বর্ধমানে গিয়েছিলেন। আমরা রাত দু’টো নাগাদ খবরটা পেয়েছি।” মৃত তিন ভাইয়ের প্রতিবেশি দিস্তার শেখ, আখের আলিরা বলেন, “ফেরি করেই ওই এলাকার বেশিরভাগ মানুষদের সংসার চলে। তিন ভাইয়ের একসঙ্গে মৃত্যুতে সংসারটা ভেসে গেল।”
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে মৃত চারজনের পরিচয় জানা যায়নি। পরে তাঁদের আত্মীয়েরা হাসপাতালে আসার পরে পরিচয় জানা যায়। বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যানটিকে আটক করাও সম্ভব হয়নি। তবে খোঁজ চলছে।” |