মেয়াদ শেষের জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকা নয়। তার আগেই টাকা তুলে নেওয়ার জন্য নানা ভুঁইফোঁড় আর্থিক সংস্থায় ভিড় জমাচ্ছেন লগ্নিকারীরা। সোমবারই বর্ধমানে দু’টি সংস্থার অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন লগ্নিকারীরা। সারদা-কাণ্ডের পরে বিনিয়োগও কমতে শুরু করেছে জেলার নানা ছোট অর্থলগ্নি সংস্থাগুলিতে। মেয়াদ ফুরনোর আগে টাকা ফেরত দিতেও নারাজ বহু সংস্থা। অনেকে অবশ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী লগ্নির একাংশ কেটে টাকা ফেরত দিচ্ছে।
সোমবার বর্ধমানের গোলাপবাগে প্রয়াগের অফিসে ভিড় জমান কয়েকশো মানুষ। তাঁরা টাকা ফেরত চান। সে নিয়ে গোলমাল বেধে যায়। সংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিশৃঙ্খলার কারণে এ দিন টাকা ফেরত দেওয়া যাবে না, পরে দিন ধার্য করা হবে। ওই সংস্থার এজেন্ট, গোদার বাসিন্দা চন্দন দেবনাথ বলেন, “লগ্নিকারীরা আমার কাছে টাকা ফেরত চাইছেন। বাধ্য হয়ে টাকা ফেরত চাইতে এসেছি। কিন্তু সে ব্যাপারে কোনও আশ্বাস পাইনি।”
|
কাজিরহাটের বাসিন্দা পেশায় বিড়ি শ্রমিক অনিতা বিশ্বাস বলেন, “আমি এক বছরের রেকারিং ডিপোজিট করেছি। ছ’মাসে ১৮০০ টাকা জমা দিয়েছি। এখন আসলটা ফেরত পেলেই বাঁচি।” সংস্থার বর্ধমান শাখার ম্যানেজার অরূপ মাঝি বলেন, “কিছু লোক আমাদের মারধর ও অফিস ভাঙচুরে উদ্যত হন। তাই আমরা আজ আলোচনা করতে পারিনি। পরে আবেদনকারীদের ক্রমিক নম্বর হিসেবে আমানতের টাকা ফেরত দেব বলে জানিয়েছি।”
শহরের নবাবহাটে রোজভ্যালীর অফিসের সামনে সকাল থেকেই কয়েকশো মানুষের লাইন পড়ে। তাঁদের আমানতের আসল কাগজপত্র জমা নিয়ে স্ট্যাম্প মেরে ফটোকপি দেওয়া হয়। ১৩ জুনের মধ্যে তাঁদের চেকে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আমানতকারীরা তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সংস্থার এজেন্ট আলমপুরের বাসিন্দা শেখ আলিবর্দির দাবি, “আমি শতাধিক গ্রাহকের প্রায় চার লক্ষ টাকা জমা দিয়েছি। তা ফেরত চাই। বলা হয়েছে, মেয়াদ শেষের আগে আমানত ফেরত পেতে হলে শতকরা ১৫, ২০, ২৫ হারে টাকা কাটা হবে। কিন্তু কবে মিলবে তা জানি না।” এই সংস্থায় আমানতকারী রসিদা বেদম বলেন, “আমি মাসে ৯০০ টাকা করে জমা দিয়েছি। ১৬ মাসে মোট ১৪ হাজার ৪০০ টাকা আমার পাওনা। তা ফেরত পেলেই অনেক।” সংস্থার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার পরিতোষ প্রামাণিক বলেছেন, “গত পরশু থেকে আমরা আমানতকারীদের শংসাপত্র ফেরত নিয়ে তাঁদের ফটোকপি দিয়ে দিচ্ছি। আমরা গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে চাই। সে জন্য সামনের মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।” |