|
|
|
|
শহরের বুকেই এ বার এক টুকরো চা বাগান
আর্যভট্ট খান • কলকাতা |
চা বাগানে ঘুরতে চান? দার্জিলিং নয়, এ বার খাস কলকাতাতেই মিলবে সে সুযোগ। এ শহরের চা বাগানের সৌন্দর্য উপভোগই শুধু নয়, বাগানের পাশের চা -বারে আশ মিটিয়ে পান করা যাবে নানা স্বাদের উৎকৃষ্ট মানের চা -ও।
অভিনব এই পরিকল্পনার বাস্তব রূপদান করছে হিডকো। নিউ টাউনে ইকো পার্কের ধার ঘেঁষে চিলড্রেন্স পার্কের কাছে তিন একর জমিতে তৈরি হচ্ছে সেই টি -গার্ডেন। হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, “চা বাগান তৈরির জন্য মাটি ফেলার কাজ শুরু হবে কয়েক দিনের মধ্যেই। সামনের বর্ষাতেই ডুয়ার্সের ভাল মানের চা গাছের চারা রোপণ করা হবে। কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের পরামর্শে ও সহযোগিতায় এই চা বাগান তৈরি করা হচ্ছে।”
হিডকো সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক মাস ধরেই নিউ টাউনের ইকো পার্কের পাশে এই চা বাগান তৈরির পরিকল্পনা চলছে। প্রথমে তাঁরা কথা বলেন, টি বোর্ডের মনোনীত এক সংস্থার সঙ্গে। দেবাশিসবাবু জানান, টি বোর্ডের তরফে উত্তরবঙ্গ থেকে ট্রাকে করে মাটি এনে চা বাগান তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। |
|
ইকো পার্কের লাগোয়া এই জমিতেই হবে প্রস্তাবিত চা বাগান। ছবি: শৌভিক দে |
কিন্তু ট্রাকে করে উত্তরবঙ্গ থেকে মাটি এনে চা বাগান তৈরির এই প্রক্রিয়া অনেক জটিল বলে হিডকো সেই প্রস্তাব বাতিল করে। এর পরে কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেন হিডকো কর্তারা। ওই বিজ্ঞানীরা জানান, উত্তরবঙ্গ থেকে মাটি না এনে রাসায়নিক পদ্ধতিতে এখানকার মাটিরই কিছু পরিবর্তন ঘটিয়ে চা বাগান তৈরি করা সম্ভব।
হিডকো জানিয়েছে, চা বাগান তৈরির জন্য মাটির রাসায়নিক বিশ্লেষণ ইতিমধ্যে করা হয়ে গিয়েছে। চা বাগানে সব থেকে নজর দেওয়া হয় যে বিষয়ে, তা হল গাছের গোড়ায় যেন জল না জমে। সেই অনুযায়ী এখানকার মাটিকে উত্তরবঙ্গের চা বাগানের মতোই উঁচু -নিচু ও ঢালু করা হবে। ঢালু জমি বরাবর লাগানো হবে চা গাছের চারা। এমনকী চা গাছ যাতে ঠিক মতো ছায়া পায়, সে জন্য বাগানে বড় বড় গাছও লাগানো হবে। দেবাশিসবাবু বলেন, “গত সপ্তাহেই আমরা কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন বিজ্ঞানীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। চা গাছ ঠিক মতো বেড়ে ওঠার জন্য যেমন পরিবেশ দরকার, সব ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে। মাটি কাটার পরে মাটির উপরের অংশ রেখে তা গাছের গোড়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এতে চা গাছের বৃদ্ধি ভাল হয়। হিডকো চেয়ারম্যান দেবাশিসবাবু জানান, শহরে চা বাগান তৈরির এই পরিকল্পনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব খুশি। তিনি নিজেও চা খেতে খুব ভালবাসেন।
গত বছর ডিসেম্বর মাসের শেষে এই ইকো পার্ক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজারহাটের ৪৮০ একর জমির উপরে তৈরি হয় পরিবেশবান্ধব ভ্রমণ কেন্দ্র এই পার্ক। মুখ্যমন্ত্রী এর নাম দেন প্রকৃতি তীর্থ। ওই পার্ক ও তার আশপাশ পরিবেশবান্ধব উপায়ে সাজিয়ে তোলার নির্দেশ দেন তিনি। হিডকো কর্তৃপক্ষ জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই ইকো পার্ক ও তার আশপাশ সাজানো হচ্ছে।
তবে শুধু চা বাগানই নয়, হিডকো জানিয়েছে, বাগানের পাশে চা -বারটিও হবে অভিনব। চা বাগানে ঘোরার পরে সেখানে বসে বিভিন্ন মানের চা পান করতে পারবেন। উৎকৃষ্ট দার্জিলিং চা থেকে শুরু করে সব ধরনের চা -ই সুলভ মূল্যে পাওয়া যাবে চা -বারে।
|
পুরনো খবর |
• নিউ টাউনে ইকো-ট্যুরিজম গড়বেন মমতা
• নিউ টাউনে দূষণ রোধে তৈরি হবে ‘বায়ো-টয়লেট’ |
|
|
|
|
|