ঝাড়খণ্ডের দেউড়ির জঙ্গলে গাড়িচালকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার এবং গিরিডি থেকে অক্ষত ব্যবসায়ী-পুত্রের খোঁজ মেলায় অপহরণের মামলা মোড় নিল খুনের মামলায়। প্রথমে অভিযোগ ছিল, ব্যবসায়ী-পুত্রকে তাঁর গাড়ির চালক-সহ অপহরণ করেছে দুষ্কৃতীরা। এ বার অভিযোগের তির গেল খোদ সেই ব্যবসায়ী-পুত্র অঙ্কুর সাউয়ের দিকেই। শনিবার কসবা থানায় নিহত চালক জিতেন্দ্রকুমার সাউয়ের (২৪) পরিবার অঙ্কুরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে। গোয়েন্দারা অঙ্কুরকে লালবাজারে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
গাড়িচালকের পরিবার অঙ্কুরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করলেও গোয়েন্দারা এখনও অঙ্কুরের বন্ধু টিঙ্কু নামে এক যুবককেই গোটা ঘটনার নাটের গুরু হিসেবে সন্দেহ করছেন। টিঙ্কুর ঝাড়খণ্ডের বাড়িতেই একটি বিয়ের অনুষ্ঠান আছে বলে কলকাতা ছেড়েছিলেন অঙ্কুর। তাঁর সঙ্গে টিঙ্কুও গাড়িতে ছিল। অঙ্কুরের দাবি, গাড়ি ধানবাদে পৌঁছনোর পরেই দুষ্কৃতীরা তাঁদের কব্জা করে। এখনও কোনও খোঁজ মেলেনি টিঙ্কুর। |
কিন্তু কেন খুন হতে হল চালককে? পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীদের দলটি অনভিজ্ঞ। অপহরণ করে দু’জনকে আটকে রাখার বন্দোবস্ত করতে না পারায় জিতেন্দ্রকে খুন করে। টিঙ্কুই গোটা ঘটনার পরিকল্পনা করেছে বলে অঙ্কুরের কথা শুনে মনে হচ্ছে তদন্তকারীদের। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “তদন্তের মধ্যে দিয়ে অনেক তথ্য উঠে আসছে। অঙ্কুরকে আরও জেরা করলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।”
১৩ এপ্রিল ভোরে কসবার ব্যবসায়ী রাকেশ সাউয়ের ছেলে অঙ্কুর এসইউভি নিয়ে বেরোন। পরদিন থেকেই বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাঁর। ১৬ তারিখ রাতে মুক্তিপণ চেয়ে প্রথম ফোন আসে রাকেশবাবুর বাড়িতে।
নিহত চালকের পরিজনেদের বক্তব্য, ১৪ এপ্রিল জিতেন্দ্র শেষ বার বাড়িতে ফোন করেন। অঙ্কুরের সঙ্গে ধানবাদেই আছেন বলেই জানান তিনি। তবে জিতেন্দ্রের মায়ের বক্তব্য, “ছেলের কথায় অসঙ্গতি ছিল। মনে হচ্ছিল, কোনও বিপদ হয়েছে।” তার পর থেকেই জিতেন্দ্রের ফোন বন্ধ হয়ে যায় বলে তিনি জানান।
|