তিনি শহরের এক রেস্তোরাঁ-মালিকের ছেলে। নিজেও দেখাশোনা করেন বাবার ব্যবসা। গত ১৩ এপ্রিল, শনিবার সন্ধে ৬টা নাগাদ তিনি রেস্তোরাঁ থেকে বাড়ি ফেরেন। তার পরে নিজেদের গাড়ি ও চালক নিয়ে বেরিয়ে যান। তার পর থেকে আর বাড়ি ফেরেননি।
ঘটনার প্রায় তিন দিন পরে মঙ্গলবার তাঁর বাড়ির লোকেরা অঙ্কুরকুমার সাউ (২৩) নামে ওই যুবককে অপহরণ করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার সকালে ৬ কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়ে বাড়িতে ফোন এসেছে বলেও ওই পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে।
এর আগে ১৪ এপ্রিল অঙ্কুর নিজে ঝাড়খণ্ডে রয়েছেন জানিয়ে ফোন করেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তাঁর বাড়ির লোক। অঙ্কুরের গাড়ির চালক আদতে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বলেও তাঁরা জানান। মঙ্গলবার বিকেলে লালবাজারে এসে তাঁরা অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে ঘটনাটি অপহরণের কি না, অথবা অপহরণ হলেও কারা এর পিছনে রয়েছে, এই বিষয়ে পুলিশ এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, কসবার জি এস বসু রোডের বাসিন্দা রাকেশ সাউয়ের এক মাত্র ছেলে অঙ্কুর। তিনি বি কম পাশ করে পারিবারিক রেস্তোরাঁর ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। গত ১৩ এপ্রিল রাত হয়ে গেলেও ছেলে ফিরছে না দেখে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেন রাকেশবাবু। রাকেশবাবুরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ১৪ এপ্রিল সকালে নিজের মোবাইল থেকেই বাড়িতে ফোন করেন অঙ্কুর। জানান, তিনি ঝাড়খণ্ডে রয়েছেন।
এর পর থেকে ছেলের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি বলেই দাবি রাকেশবাবুদের। ওই দিন বিকেলেই তাঁরা কসবা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, ঝাড়খণ্ড এলাকায় অঙ্কুরের কয়েক জন বন্ধু রয়েছে। নিজেদের কয়েকটি কারখানা রয়েছে বলে বিভিন্ন বন্ধুদের বলতেন অঙ্কুর। সেই কারণেই তাঁকে কোনও অপহরণকারীর দল আটকে রেখেছে কি না, পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
এ দিন বিকেলে লালবাজারে এসে গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন অঙ্কুরের পরিবারের লোকেরা। তাঁরা জানান, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ অন্য একটি নম্বর থেকে অপরিচিত এক জন ফোন করেন রাকেশবাবুর মোবাইলে। হিন্দিভাষী ওই ব্যক্তি মুক্তিপণ হিসেবে ৬ কোটি টাকা দাবি করে বলেও অভিযোগ। গোয়েন্দা প্রধানকে বিষয়টি জানানোর পরেই একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন রাকেশবাবুরা। গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “সমস্ত দিকই দেখা হচ্ছে।” |