বরো নির্বাচনে তৃণমূলের জিয়নকাঠি কাওয়ের পকেটে |
শাসক দলের পুর-প্রতিনিধি দু’জনেই। পৃথক খুনের মামলায় দু’জনেই জেলে রয়েছেন। কিন্তু রাজনীতির ‘সাপ-লুডো’ খেলায় আপাতত গার্ডেনরিচের মহম্মদ ইকবালকে (মুন্না) পিছনে ফেললেন মাঠপুকুরের শম্ভুনাথ কাও।
৭ নম্বর বরোয় এখন তৃণমূলের ৫ জন ও বামেদের ৪ জন কাউন্সিলর। চেয়ারম্যানের পদ দলের দখলে রাখতে শম্ভুনাথের একটি ভোটই এখন তৃণমূলের ‘রক্ষা-কবচ’। সেই কারণে নির্বাচনের দিন মাঠপুকুরের কাউন্সিলর শম্ভুনাথ কাওকে ‘প্যারোলে’ মুক্তি দেওয়ার জন্য আবেদন দাখিল হল আলিপুর আদালতে। বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট উমেশ সিংহ ওই আর্জি মেনেও নিয়েছেন। ভোট দেওয়ার জন্য ২৯ এপ্রিল দু’ঘণ্টার জন্য মুক্তি পাবেন কাও। ওই দিন দুপুর একটায় ৭ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান নির্বাচন। নির্বাচন পরিচালনা করবেন পুরসভার মেয়র পারিষদ (পার্ক ও উদ্যান) দেবাশিস কুমার।
১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান নির্বাচনে হাজির থাকার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন গার্ডেনরিচের মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নাও। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে, সেই ‘অজুহাতে’ ওই আবেদন শেষমেশ সরিয়ে নেওয়া হয়। যদিও তৃণমূলের একাধিক কাউন্সিলরের বক্তব্য, শম্ভুনাথ কাও ওই দিন ভোটে অংশ নিলে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাবেন স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকেই।
এ নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, ৭ এবং ১৫ নম্বর বরোয় রাজনৈতিক সমীকরণে বিস্তর ফারাক রয়েছে। গার্ডেনরিচের ১৫ নম্বর বরোয় তৃণমূল, সিপিএম-এর পুর-প্রতিনিধির সংখ্যা যথাক্রমে ৭ এবং ২। সেখানে চেয়ারম্যানের পদ দখল করতে মুন্নার ভোট জরুরি ছিল না। ৭ নম্বর বরোর পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। সেখানে তৃণমূলের ৫ জন কাউন্সিলরের সঙ্গে রয়েছেন বাম দলের ৪ প্রতিনিধি। শম্ভুনাথের একটি ভোটও এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। না-হলে ভোটের ফলাফল ‘ড্র’ হবে। চেয়ারম্যানের পদ কার দখলে থাকবে, তা তখন ঠিক হবে টসেই। অনিশ্চয়তার মধ্যে না থাকতেই শম্ভুনাথকে ‘প্যারোলে’ মুক্ত করতে তৎপর তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, মুন্নাকে নিয়ে দলের সেই উদ্যম দেখা যায়নি।
শম্ভুনাথের আইনজীবী অরিন্দম দাস এ দিন জানান, স্থানীয় পুর-প্রতিনিধি হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচনে শম্ভুনাথের ভোটাধিকার রয়েছে। তিনি বলেন, “ভোট দেওয়া সকলের মৌলিক অধিকার। আদালতে সেই কথা উল্লেখ করেই প্যারোলে মুক্তির আর্জি জানানো হয়। বিচারক তা মেনে নিয়েছেন।” বরো নির্বাচনের দিন বেলা ১২টায় শম্ভুনাথকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
|