গ্রেফতার হওয়ার উনিশ দিন পরে জামিনে ছাড়া পেলেন সিপিএমের ঝাড়গ্রাম (গ্রামীণ) লোকাল কমিটির সম্পাদক কালীপদ মাহাতো। গত মঙ্গলবার মেদিনীপুর জেলা আদালতে কালীপদবাবুর জামিনের আবেদন মঞ্জুর হয়। বুধবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম উপ সংশোধনাগার (ঝাড়গ্রাম সাব-জেল) থেকে ছাড়া পান তিনি। ছাড়া পাওয়ার পর কালীপদবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজনৈতিক কারণে মিথ্যা অভিযোগে আমাকে ধরা হয়েছিল। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হলে ফের আমাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। তবে আইন-আদালতের উপর আমার আস্থা রয়েছে।”
গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে ঝাড়গ্রামের কিসমত-জামবেদিয়া গ্রামে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের এজেন্ট গিরিশ সহিস। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৪ এপ্রিল ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচমাথা মোড় থেকে কালীপদবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। ৫ এপ্রিল কালীপদবাবুকে তিন দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছিল ঝাড়গ্রাম আদালত। পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আদালতের নির্দেশে ৮ এপ্রিল থেকে জেলহাজতে ছিলেন কালীপদবাবু। ইতিমধ্যে মেদিনীপুর জেলা জজের আদালতে কালীপদবাবুর জামিনের আবেদন করা হয়। গত মঙ্গলবার মামলার নথিপত্র দেখে জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন জেলা জজ। অভিযুক্তের আইনজীবী অশ্বিনী মণ্ডল বলেন, “কালীপদবাবুকে অভিযুক্ত করার মতো উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ মামলার কেস ডায়েরিতে ছিল না।” ঝাড়গ্রাম শহরের রঘুনাথপুরের বাসিন্দা ষাট বছরের কালীপদবাবু আড়াই মাস আগে সরকারি গ্রন্থাগারিকের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন।
বুধবারই আবার ঝাড়গ্রামের ডুমুরিয়া গ্রামের দুই সিপিএম সমর্থক খোকন বারিক ও লালচাঁদ পৈড়্যাকে গিরিশ-খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের এ দিন ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। ঝাড়গ্রামের চন্দ্রি অঞ্চলের জেলবন্দি সিপিএম নেতা প্রশান্ত দাসকেও গিরিশ-খুনের মামলায় অভিযুক্ত করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশে প্রশান্তবাবুকে ওই খুনের মামলায় তিন দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার প্রশান্তবাবুকে আদালতে হাজির করে পুলিশ দাবি করে, গিরিশ সহিসকে খুনের ঘটনায় প্রশান্তবাবুর যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে জেরা করা প্রয়োজন। পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক প্রিয়জিৎ চট্টোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, গত বছর ২২ নভেম্বর চন্দ্রি অঞ্চলে সিপিএমের একটি মিছিলেকে কেন্দ্র করে তৃণমূল সমর্থকদের সঙ্গে গোলমালের জেরে ওই রাতেই গ্রেফতার হন সিপিএমের আগুইবনি লোকাল কমিটির সম্পাদক প্রশান্তবাবু।
|