মন্ত্রক খুইয়ে নেই সাংগঠনিক শক্তি বদলের স্লোগান নিয়েই
রেল ভোটে তৃণমূল
রাজ্যের পরে এ বার রেলে। পরিবর্তনের স্লোগানকেই সামনে রেখে রেলের নির্বাচনে এ বার প্রথমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নেমেছে তৃণমূল। ভোট শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। চলবে শনিবার পর্যন্ত। কিন্তু সর্বভারতীয় এই নির্বাচনে তৃণমূল যে তিনটি জোনে লড়াই করছে, তাঁর মধ্যে দু’টি জোনেরই (পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব) অনেকখানি ভিন রাজ্যে। তার উপর রেলে সংগঠন পোক্ত না হওয়ায় তৃণমূলের ইউনিয়ন রেলে স্বীকৃতি পাবে কি না, তা নিয়ে ঘোর সংশয় দেখা দিয়েছে। আর তাতে হাওয়া জুগিয়েছে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব।
সুপ্রিম কোর্টের নিদের্শ, এই নির্বাচনে রেলকর্মীদের ৩৫ শতাংশ কিংবা মোট প্রদত্ত ভোটের ৩০ শতাংশ পেলে তবেই সেই ইউনিয়নকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। শুধুমাত্র স্বীকৃত ইউনিয়নই কর্মীদের দাবিদাওয়া নিয়ে রেলকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার যোগ্য। রেলের পূর্বাঞ্চলে বামপন্থীদের মেনস ইউনিয়ন ও কংগ্রেসের মেনস কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরে স্বীকৃত ইউনিয়ন হয়ে রয়েছে। এ বার তাদের সঙ্গে স্বীকৃতি আদায়ের লড়াইয়ে তৃণমূল পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব ও মেট্রো রেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। কিন্তু মেট্রো রেল বাদে বাকি দু’টি জোনের একাংশ ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডে। পূর্ব রেলের মালদহ ডিভিশনের একাংশ ঝাড়খণ্ড ও খড়গপুর ডিভিশনের একাংশ ওড়িশার মধ্যে রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের চক্রধরপুর ডিভিশনের একাংশ ওড়িশায় ও রাঁচি ডিভিশনের প্রায় পুরোটাই ঝাড়খণ্ডের মধ্যে। ফলে ওই এলাকার রেলকর্মীদের মধ্যে তৃণমূলের প্রভাব কম। তৃণমূলের রেলের এক নেতার কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তৃণমূল রেলে সংগঠন বাড়াক তা চাননি। তখন যদি সংগঠন গড়ে তোলার কাজ করা যেত, তা হলে এ রাজ্য তো বটেই, পড়শি রাজ্য গুলিতেও আমাদের সাংগঠনিক ক্ষমতা অনেক মজবুত হত।”
বছর দুয়েক আগে রেলে তৃণমূলের সংগঠন গড়তে আদ্রায় রেলকর্মীদের নিয়ে সভা করেছিলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন। কিন্তু সংগঠন গড়ার কাজ তারপরে বেশিদূর এগোয়নি। এ বার নির্বাচনের মুখে তৃণমূল ফের সংগঠন বাড়ানোর কাজ শুরু করেছে। তবে দোলাদেবী প্রচারে নামেননি। তার কারণও ব্যাখ্যা করতে চাননি। আইএনটিটিইউসি-র কোর কমিটির সদস্য তথা বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় দলের শ্রমিক নেতা তথা বিধায়ক তমোনাথ ঘোষকে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের নির্বাচনের দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন। শোভনবাবু নিজেও অনেক জায়গায় প্রচারে যাচ্ছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও দলের কর্মী ও তৃণমূল সমর্থক রেলকর্মীদের মধ্যে সাফল্য নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। যেমন আদ্রা ডিভিশনে নির্বাচনের প্রচারে তেমন জোর নেই। মিছিল বের হলেও, সেখানে রেলকর্মীর তুলনায় দলের কর্মীদেরই বেশি দেখা যাচ্ছে। অন্য দিকে, মেনস কংগ্রেসের সদস্যেরা মোটরবাইক নিয়ে আদ্রা রেল কলোনিতে র্যালি করেছে। তবুও তমোনাশবাবুর দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেলকর্মী থেকে রেলের প্রভূত উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু এখন রেলকর্মীদের নানা ভাবে বঞ্চনা করা হচ্ছে। কংগ্রেস ও বামপন্থীদের সংগঠনও তা রুখতে পারেনি। এর পরিবর্তন আনতেই আমরা লড়ছি।” শোভনদেববাবু বলছেন, “১০ বছরের বেশি সময় ধরে আমি রেলে সংগঠন গড়ার কাজ করেছি। কাজেই আমাদের সঙ্গে রেলকর্মীদের সমর্থন রয়েছে।” দল সূত্রেই খবর, দোলা সেনের অনুগামীরা নির্বাচনে গা দিচ্ছেন না। শোভনদেববাবুর পাল্টা দাবি, “রেলকর্মীদের মধ্যে দোলার কোনও প্রভাব রয়েছে বলে মনে হয় না। মমতাকে সামনে রেখেই আমরা সব জায়গায় লড়াই করি।”
মেনস কংগ্রেসের দক্ষিণ-পূর্ব রেলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দে’র দাবি, “তৃণমূলের নাম নিয়ে যাঁরা লড়ছে, তাঁদের আমরা হিসাবেই রাখছি না। রেলকর্মীদের মধ্যে তৃণমূলের কোনও প্রভাব নেই।” অপর রেলকর্মী সংগঠন মেনস ইউনিয়নের নেতা গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “তৃণমূল বড়জোর এ রাজ্যে কংগ্রেসের কিছু ভোট কাটতে পারে। তা সত্ত্বেও ওঁরা কোনও ফ্যাক্টর নয়।”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.