পরীক্ষা হয়েছে গত বছরের ২৯ জুলাই। তার পরে প্রায় ন’মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র নিয়োগ পরীক্ষার ফল কবে বেরোবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
কমিশনের চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল জানান, যত দ্রুত সম্ভব ফলপ্রকাশের চেষ্টা চলছে। কিন্তু কবে ফল ঘোষণা হতে পারে, তা জানাতে পারেননি তিনিও। কমিশন সূত্রের খবর, ওই পরীক্ষা নিয়ে ৫০টিরও বেশি মামলা ঝুলে থাকায় ফলপ্রকাশে দেরি হচ্ছে। তাই আটকে আছে
নিয়োগ প্রক্রিয়াও।
ফল ঘোষণা নিয়ে এই জটিলতায় এক দিকে যেমন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়ছে, তেমনই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে এসএসসি-র পরবর্তী পরীক্ষার দিনক্ষণ। কারণ ২০১২-য় নেওয়া পরীক্ষার ফল বেরোনোর আগে কমিশনের পক্ষে পরবর্তী পরীক্ষার দিন জানানো সম্ভব নয়।
গত বছর জুলাইয়ে রাজ্য জুড়ে স্কুলশিক্ষক ও শিক্ষিকার ৫৫ হাজার খালি পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেয় এসএসসি। পরীক্ষায় বসেছিলেন প্রায় সাত লক্ষ প্রার্থী। গত বছর ১ ডিসেম্বর ওই পরীক্ষার দ্বিতীয় পত্র বা টেট-এর ফল বেরোয়। তাতে কৃতকার্য হন এক লক্ষের কিছু বেশি প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে যাঁরা প্রথম পত্র বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পত্রে পাশ করবেন, তাঁরা ডাক পাবেন ইন্টারভিউয়ে। এই পত্রের ফলপ্রকাশই আটকে গিয়েছে।
কমিশন-প্রধান চিত্তরঞ্জনবাবু জানান, প্রথম পত্রের খাতা দেখার কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু পরীক্ষা এবং টেট-এর ফল নিয়ে মোট ৫২টি মামলা চলতে থাকায় ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে। তাঁর কথায়, “মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করে যাতে ওই ফল ঘোষণা করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে।”
মামলাগুলি কী ধরনের?
কমিশন সূত্রের খবর, টেট-এর মডেল উত্তর নিয়ে এবং পরীক্ষার সময় প্রার্থীদের যে-ওএমআর শিট দেওয়া হয়েছিল, তাতে ভুল থাকার অভিযোগে অনেক মামলা হয়েছে। আবার বিএড ডিগ্রিধারীদের অনেকে আবেদন জানিয়েছেন, কেবল টেট-এর ফলের ভিত্তিতেই তাঁদের বাছাই করতে হবে। শুধু কলকাতা হাইকোর্টে নয়, এ ধরনের মামলা সুপ্রিম কোর্টেও চলছে বলে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে। ফলপ্রকাশ বিলম্বিত করতেই এত মামলা রুজু করা হয়েছে বলে অবশ্য কমিশনের একাংশের অভিযোগ।
ওই পরীক্ষা নিয়ে হাইকোর্টে দায়ের করা বেশ কয়েকটি মামলায় কমিশনের বিরুদ্ধে লড়ছেন আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ফলপ্রকাশ বিলম্বিত করার ব্যাপারে কমিশনের একাংশ যে-অভিযোগ করাছে, তা অস্বীকার করে তিনি বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে কমিশন তো হলফনামাই জমা দেয়নি। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে কী করে?” কমিশন অবশ্য এই ধরনের গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
|