গণ-বিক্ষোভ সামাল দিতে এ বার বিধাননগর, ব্যারাকপুর এবং হাওড়া কমিশনারেট পাচ্ছে ‘র্যাপিড ইন্টারভেনশন ভেহিকল’।
জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের গুলি চালানোর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় উন্মত্ত জনতাকে সরিয়ে দিতে গুলি-বন্দুকের বদলে লাঠি-গ্যাস-রবার বুলেট ব্যবহার করা যেতে পারে। এর ফলে বড় ধরনের ক্ষতি বা মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেক কমবে। মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সেই নির্দেশ মেনে ‘র্যাপিড ইন্টারভেনশন ভেহিক্ল’ কিনছে রাজ্য পুলিশ। এই গাড়ির সামনে ও পিছনে গ্যাস ভর্তি ‘সেল’ থাকবে। প্রয়োজনে একসঙ্গে বেশি পরিমাণে সেই সেল ফাটানো সহজ হবে। এই বিশেষ ধরনের গাড়িতে থাকতে পারবেন ১০-১২ জন পুলিশকর্মী।
পাশাপাশি, রাস্তায় অস্বাভাবিক মৃত্যু বা খুন হলে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ গাড়িও দেওয়া হচ্ছে কলকাতা সংলগ্ন তিন কমিশনারেটকে। কলকাতা পুলিশের কাছে এমন গাড়ি আছে। কিন্তু কলকাতা সংলগ্ন কমিশনারেট এবং জেলা পুলিশ প্রশাসনের হাতে কোনও গাড়ি নেই। স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর, এ বছর কয়েকটি শববাহী গাড়ি কেনা হচ্ছে। তা প্রথমে কমিশনারেটগুলিকে দেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, আপাতত ১২টি ‘র্যাপিড ইন্টারভেনশন ভেহিক্ল কেনা হচ্ছে। প্রথমে কলকাতা সংলগ্ন তিন কমিশনারেট সেগুলি পাবে। পরে তা দেওয়া হবে অন্য কমিশনারেটগুলিকে। পরবর্তী কালে জেলাগুলিতেও ওই গাড়ি রাখা হবে। এক-একটি গাড়ির দাম পড়ছে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে রাজনৈতিক গোলমাল বাড়ছে। পরিস্থিতি ঘোরালো হচ্ছে। গুলির ব্যবহার আটকাতে বিকল্প ব্যবস্থাগুলি জোরদার করা হচ্ছে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, গাড়ি ছাড়াও পুলিশের আধুনিকীকরণ প্রকল্পে নতুন ওয়্যারলেস সেট কেনা হচ্ছে। পুলিশের কন্ট্রেল রুমগুলিকে উন্নত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “ব্রিটিশ আমলে ব্যারাকপুরে কেন্দ্রীয় অস্ত্রাগার তৈরি হলেও সময়ের সঙ্গে পুলিশের অস্ত্র এবং গোলা-বারুদের সংখ্যা কয়েকশো গুণ বেড়ে গিয়েছে। মাওবাদী আন্দোলনের পরে নতুন নতুন অস্ত্র কেনা হচ্ছে। এর মধ্যে আছে এসএলআর, কার্বাইন, একে ৪৭, ইনস্যাস, নাইন এমএম পিস্তল, গ্লক পিস্তল প্রভৃতি। থানাগুলিতে থাকা পুরনো মার্সেট তুলে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নতুন ও পুরনো অস্ত্র রাখার জন্য তো জায়গা দরকার। তাই ব্যারাকপুরের লাটবাগানেই নতুন একটি অস্ত্রাগার তৈরি করা হচ্ছে। খরচ হচ্ছে প্রায় ২ কোটি টাকা।” পুলিশের দাবি, নতুন অস্ত্রাগার হলে তাদের সুবিধা হবে।
ওই পুলিশকর্তা জানান, পুলিশের আবাসন, থানা-ফাঁড়ি তৈরিতে টাকা দেয় কেন্দ্র। যদিও এই আর্থিক বছরে তারা কোনও টাকা বরাদ্দ করেনি। তাঁর কথায়, “রাজ্য পুলিশের বেশির ভাগ থানাই পুরনো। টাকা না পাওয়ায় এ বছর কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরের জন্য বরাদ্দ নিশ্চিত করতে এখন থেকেই প্রকল্প তৈরি করে পাঠানোর কাজ শুরু করা হচ্ছে।” |