বস্টন ম্যারাথন হামলায় অভিযুক্ত জোহার জারনাহেভের বিরুদ্ধে যে দু’জন সরকারি কৌঁসুলি লড়বেন, তার মধ্যে রয়েছেন এক বাঙালি আইনজীবী। ম্যাসাচুসেটসের ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নির নাম অলোক চক্রবর্তী। অলোকবাবু ছাড়াও এই মামলায় সরকারের হয়ে সওয়াল করবেন উইলিয়াম ওয়েনরেব।
বাল্টিমোরের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে আটলান্টার ইমোরি ইউনির্ভাসিটি ল স্কুলে ভর্তি হন অলোক চক্রবর্তী। ২০০৯ সালে এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, আইন ভাল লাগে কি না পরখ করতে ল স্কুলে যাওয়া। কোর্স শেষের পর শুধু ভাল লাগাই নয়, ভালবেসে ফেলেছিলেন বিষয়টাকে। পাশ করার পর বড় বড় সব সংস্থার চাকরির প্রস্তাব আসতে থাকে। মোটা বেতনের প্রলোভন ছেড়ে কাউন্টির আইনজীবী হয়ে কর্মজীবন শুরু হয় তাঁর। এক দিকে অল্প টাকা, সেই সঙ্গে কাজের চাপ মারাত্মক। তা-ও যারা নিজেদের হয়ে বলতে পারে না, তাদের হয়ে কথা বলার সুযোগ আর ছাড়তে পারেননি অলোকবাবু।
সেই শুরু। তার পর থেকে একের পর এক গুরু দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। কখনও মিডলসেক্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি, আবার কখনও সামলেছেন ম্যাসাচুসেটসের ফৌজদারি অপরাধ বিভাগের দায়িত্ব। সাবেক যুগোস্লাভিয়া নিয়ে গঠিত রাষ্ট্রপুঞ্জের আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল ট্রাইব্যুনালেও ছিলেন অলোকবাবু।
সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের মতো বিষয় নিয়ে মামলা লড়ছেন তিনি। আইনি পরিসরের বাইরেও এলাকায় একাধিক কাজে জড়িত থাকায় অ্যাটর্নি জেনারেলের পুরস্কার এবং ম্যাসাচুসেটস বার অ্যাসোসিয়েশনের ‘একসেস টু জাস্টিস অ্যাওয়ার্ড’ও পেয়েছেন তিনি।
এ দিকে ম্যারাথনে হামলার এক সপ্তাহ পর এক মাত্র জীবিত অভিযুক্ত জোহারের বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে অভিযোগ দায়ের করল এফবিআই। তার বিরুদ্ধে গণ-বিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন গোয়েন্দারা। অপরাধ প্রমাণ হলে জোহারের মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। জোহার অসুস্থ থাকায় তাকে অবশ্য আদালতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বদলে সোমবার তার হাসপাতালের ঘরেই শুরু হয় শুনানি প্রক্রিয়া। ৩০ মে পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, মোবাইল ফোনের সাহায্যে ম্যারাথনের ফিনিশিং লাইনের কাছে প্রেসার কুকার বোমা ফাটিয়েছিল জোহার। ডার্টমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ঘরে সে থাকত, সেখান থেকে হামলার দিনের পোশাক আসাকও উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
|