ব্যাঙ্কশাল আদালতের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আগেই তদন্ত করতে বলেছিলেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে। সেই অনুসারে কমিশন মঙ্গলবার কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছে, মাওবাদী নেতা জাকির হোসেনের উপরে পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে অবিলম্বে তদন্ত করতে হবে।
গ্রেফতারের আগে ও পরে জাকিরকে পুলিশ মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার কমিশন সূত্রের খবর, কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিককে দিয়ে সেই অভিযোগের তদন্ত করিয়ে ১০ দিনের মধ্যে কমিশনে রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিপি-কে।
১৯ এপ্রিল দুই মাওবাদী নেতা জাকির হোসেন ও সব্যসাচী গোস্বামীকে ব্যাঙ্কশাল আদালতের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বরূপ শেঠের এজলাসে হাজির করায় কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ। জাকিরের আইনজীবী শুভাশিস রায় আদালতে অভিযোগ জানান, জেরার নামে তদন্তকারী অফিসারেরা তাঁর মক্কেলকে মারধর করেছেন। মারধরের মাত্রা কেমন ছিল, তার প্রমাণ দেওয়ারও চেষ্টা হয়। বিচারকের অনুমতি নিয়ে জাকির এজলাসে দাঁড়িয়েই ট্রাউজার নামিয়ে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে তাঁর বাঁ ঊরুতে কালশিটের চিহ্ন দেখান। কী ভাবে তাঁর ঊরুতে ওই কালশিটে পড়ল, বিচারক তা জানতে চান।
মামলার তদন্তকারী অফিসার আদালতে জানান, তিনি ধৃতের মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়েছেন। কিন্তু কোন চিকিৎসককে দিয়ে অভিযুক্তের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে, তদন্তকারী তা জানাতে পারেননি। বিচারক রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলেন।
চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের ওই সিদ্ধান্ত সরকারি ভাবে ২২ এপ্রিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কাছে পৌঁছয়। কমিশনের রেজিস্ট্রার রবীন্দ্রনাথ সামন্ত মঙ্গলবার জানান, বিষয়টি কমিশনের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায় এবং অন্য সদস্য, প্রাক্তন বিচারপতি নারায়ণচন্দ্র শীলের কাছে পেশ করা হয়। সব দিক খতিয়ে দেখার পরে কমিশন মারধরের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে।
এ দিন জেল-হাজত থেকে জাকিরকে ফের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেশনের এজলাসে হাজির করানো হয়। জাকিরকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আর্জি জানায় এসটিএফ। বিচারক সেই আর্জি মঞ্জুর করেন। জাকিরকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
|