জেরা জাকির-সব্যসাচীকে
কিছু সরকারি কর্মীও মাওবাদীদের ঘনিষ্ঠ
লেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন শিক্ষক, সরকারি হাসপাতালের কয়েক জন চিকিৎসকের পর এ বার কলকাতায় কর্মরত রাজ্য সরকারের কয়েক জন কর্মচারীর সঙ্গে মাওবাদীদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকার কথা সুনির্দিষ্ট ভাবে জানা গিয়েছে বলে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) দাবি করেছে। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, তাঁদের মধ্যে এক জন রীতিমতো উচ্চপদস্থ কর্তা, বাকিরা সাধারণ কর্মী। বৃহস্পতিবার ধৃত দুই মাওবাদী নেতা, রাজ্য কমিটির সদস্য সব্যসাচী গোস্বামী ওরফে কিশোর এবং কলকাতা সিটি কমিটির সদস্য জাকির হোসেনকে জেরা করে এই বিষয়টি জানা গিয়েছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি।
তদন্তকারীরা জানান, ওই সরকারি কর্মচারীরা একাধিক বার মাওবাদীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাদের নিয়মিত সহাযতাও জোগান এই সরকারি কর্মীরা। তবে তাঁরা মাওবাদীদের আর্থিক সাহায্য করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, “ওই কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আমরা আরও প্রমাণ জোগাড় করার চেষ্টা করছি। এখনই গ্রেফতার করা না হলেও তাঁদের গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে।”
মহাকরণে বেশ কয়েক বার মাওবাদীদের পোস্টার মিলেছে এর আগে। গোয়েন্দারা তখন দাবি করেছিলেন, সরকারি কর্মীদের কেউ এর মধ্যে না থাকলে এমনটা হওয়া সম্ভব নয়। সব্যসাচী ও জাকিরকে জেরা করে পাওয়া তথ্যে এ বার সেই ধারণারই সমর্থন মিলল।

জঙ্গলে ল্যান্ডমাইন
বিনপুরের কুশবনির জঙ্গলে মিলল অস্ত্র ও মাইন। শনিবার ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ ও সিআরপির যৌথ তল্লাশি চলাকালীন মাটি খুঁড়ে পাওয়া গিয়েছে তিনটি চ্যালেঞ্জার ল্যান্ডমাইন, ৮ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ভর্তি একটি ক্যান মাইন, একটি দেশি ও একটি একনলা বন্দুক। জঙ্গলের আর একটি জায়গা থেকে ৬ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ভর্তি ক্যানমাইন মেলে। বম্ব স্কোয়াড এসে ক্যানমাইন দু’টি নিষ্ক্রিয় করে। অনুমান, মাস দু’য়েক আগে পোঁতা হয়েছিল এই মাইন। ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “হামলা চালাতে মাওবাদীরাই ওই মাইন ও অস্ত্র মজুত করেছিল বলে ধারণা।”
ওড়িশা ও ঝড়খণ্ড সীমানায় মাওবাদীদের মোকাবিলা করতে যৌথ বাহিনী তৎপর রয়েছে বলেও এ দিন জানান ভারতীদেবী।
ছবি: দেবরাজ ঘোষ
কয়েক বছর আগে কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালের দু’জন চিকিৎসক এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাওবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। তার বিস্তারিত তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে থাকা সত্ত্বেও সরকারের শীর্ষ মহলের অনুমোদন না মেলায় তাঁদের কাউকেই গ্রেফতার করা যায়নি। এ বারও ওপর তলা থেকে সবুজ সঙ্কেত না এলে পুলিশ কিছুই করবে না বলে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর।
ধৃত জাকিরকে পুলিশি হেফাজতে মারধরের যে অভিযোগ উঠেছে, এসটিএফের ডেপুটি কমিশনার বাস্তব বৈদ্য ইতিমধ্যেই সেই ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করেছেন। শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে জাকির তাঁর উরুতে কালশিটের দাগ দেখিয়েছেন। বিচারক রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। মানবাধিকার কমিশন এখনও সেই নির্দেশের কপি পায়নি। বিষয়টি এসটিএফের ডিসি-কেও লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এসটিএফের দাবি, মারধর করার প্রশ্নই নেই, কোনও কারণে কোথাও ধাক্কা লেগে ওই চোট হতে পারে। কোর্ট লকআপে কিছু ঘটেছিল কি না, তাও দেখা হচ্ছে।
তদন্তকারীদের দাবি, মাওবাদীদের রাজ্য নেতা অশোকদা ওরফে অনুপ রায়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল সব্যসাচী ও জাকিরের। কিষেণজির মৃত্যুর পরে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়া মাওবাদী নেতাদের একত্রিত করার দায়িত্ব ছিল সব্যসাচীর ওপর। সেই উদ্দেশ্যে তিনি ও জাকির মার্চের শেষ দিকে যাদবপুরের সন্তোষপুরে একটি বৈঠক ডাকেন। মাওবাদীদের প্রতি সহানুভূতিশীল কলকাতার বেশ কয়েক জন তাতে হাজির ছিলেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.