সারদা কাণ্ডে আস্থা নেই পুলিশে
সিবিআই আর রিসিভার চেয়ে মামলা
শাসক দলের উপরে চাপ বাড়াতে সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চেয়ে আগেই সরব হয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিএম। এ বার ওই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে এর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থের মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই সঙ্গে সারদা গোষ্ঠীর সম্পত্তি ও টাকা উদ্ধারের জন্য রিসিভার নিয়োগ করার আর্জিও জানানো হয়েছে।
আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় সোমবার সকালেই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের সামনে সারদা গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডের বিবরণ দেন। তিনি বলেন, ওই লগ্নি সংস্থার লক্ষ লক্ষ গরিব আমানতকারী বিপন্ন। প্রায় রোজই আত্মহত্যা বা আত্মহত্যার চেষ্টার খবর আসছে। ৩০ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়ে সংস্থা বন্ধ করে পালিয়ে গিয়েছেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার। এই নিয়ে জনস্বার্থের মামলা শোনার জন্য ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানান সুব্রতবাবু।
প্রধান বিচারপতি সুব্রতবাবুকে বলেন, তিনি যেন এই ব্যাপারে মামলা দায়ের করে সব পক্ষের কাছে সেই আবেদনের প্রতিলিপি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। মামলা হলে ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শুরু করতে পারবে। এ দিন এর পরেই এক বিশিষ্ট আইনজীবীর মৃত্যুতে শোকপালনের জন্য হাইকোর্টের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
বেলা ১টা নাগাদ আইনজীবী বাসবী রায়চৌধুরী সারদা কাণ্ড নিয়ে জনস্বার্থের মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে করা হলেও কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় অর্থসচিব, রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাস্ট্রসচিব, সেবি-র চেয়ারম্যান, সিকিওরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড, এল অ্যান্ড টি-র চেয়ারম্যান, কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক, সিবিআই-এর ডিরেক্টর, কলকাতায় সিবিআই-এর দুর্নীতি দমন শাখা, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের আঞ্চলিক অধিকর্তা, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, রাজ্যের অর্থসচিব, সারদা গোষ্ঠীর এগ্জিকিউটিভ চেয়ারম্যান কুণাল ঘোষ, সারদা গোষ্ঠীর ডিরেক্টর প্রমুখকেও বিবাদী করা হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন সিবিআই-কে একটি চিঠি লিখেছিলেন। তাতে এমন কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম রয়েছে, যাঁরা ওই গোষ্ঠীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়েছিলেন। সেই চিঠি হাইকোর্টে জমা দেওয়া হোক। আবেদনকারীর বক্তব্য, ২০০৪ সালে রাজ্যের গোয়েন্দা গেজেটে সুদীপ্তবাবুকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ বলা হয়েছিল। সাংলি সিটি কেলেঙ্কারির জন্য তাঁর বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে পুণে আদালত। আবেদনে বলা হয়েছে, সুদীপ্তবাবু আগেকার লগ্নি সংস্থা সঞ্চয়িনীর প্রয়াত মালিক ভূদেব সেনের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে পুলিশ এক সময় জানতে পারে, সুদীপ্তবাবু ও দীপিকা সেন ‘প্যাকেজড ওয়াটার’ তৈরির জন্য একটি কোম্পানি গড়েন। শিলং কলেজের তিন শিক্ষক অভিযোগ দায়ের করেন সুদীপ্তবাবুর বিরুদ্ধে। অন্য সংস্থা গড়ে মেঘালয়েও একই ব্যবসা শুরু করেছিলেন সুদীপ্তবাবু। মামলা দায়ের করার পরে বাসবীদেবীর আইনজীবী সুব্রতবাবু জানান, সিবিআই তদন্তের আর্জি জানানো হয়েছে। কারণ রাজ্যের সঙ্গে এই সারদা গোষ্ঠী কার্যত এক বন্ধনীতে যুক্ত হয়ে গিয়েছে। তাই রাজ্য পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে এর তদন্ত করতে পারবে না। হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে রিসিভার নিয়োগের আবেদনও জানানো হয়েছে। ওই রিসিভার সারদা গোষ্ঠীর সম্পত্তি ও টাকা উদ্ধারের কাজ করবেন। তাঁরা চান, সংস্থার কেউ বা কোনও সরকারি কর্মী-অফিসার যাতে কোনও নথি নষ্ট করে ফেলতে না-পারেন, তার জন্য সারদা গোষ্ঠীর সব অফিসেই ঢোকার জন্য হাইকোর্টের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হোক। আবেদনে বলা হয় তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ প্রথমে সারদার সংবাদমাধ্যমের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার ছিলেন। পরে এগ্জিকিউটিভ চেয়ারম্যান হন। গত এক মাস ধরে সারদা গোষ্ঠী টাকা সরিয়ে ফেলছিল এবং জমি বাড়ি বিক্রি করছিল। শাসক দলের অনেকেই তা জানতেন। তবু সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.