মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল |
রাষ্ট্রপতি আসছেন, ফোন পেয়েই উদ্বেল শিক্ষক-ছাত্ররা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
যে টেলিফোন আসার কথা সেই টেলিফোন আসেনি বলে অপেক্ষা করেছিলেন কবি পূর্ণেন্দু পত্রী। মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলও অপেক্ষা করেছিল দেশের রাষ্ট্রপতির টেলিফোনের জন্য। তা অবশ্য এল। আর তাতেই বদলে গেল আবহ।
ঘড়ির কাঁটা তখন সবে তিনটে পেরিয়েছে। ল্যান্ডফোনটা বাজতেই রিসিভ করেছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক দিলীপ দাস। ফোনের অন্য প্রান্তে তখন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সচিব। অল্প কথা। সচিব জানালেন, আগামী ৬ মে রাষ্ট্রপতি মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে যাবেন। সওয়া একঘন্টা থাকবেন। দুপুর ১২টা ৪৫ থেকে দেড়টা। প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে স্কুলের ফ্যাক্স নম্বরও চেয়ে নিয়েছিলেন সচিব। কিছু পরে ফ্যাক্স মারফৎ একটি চিঠিও এসে পৌঁছয়। যেখানে রাষ্ট্রপতির সফর ঘিরে কিছু পরামর্শ এবং নির্দেশ রয়েছে। জানানো হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে ঠিক কী কী করতে হবে। |
ঐতিহ্য |
|
১৭৫তম বর্ষপূর্তিতে স্বীকৃতি পাওয়া স্কুলের হেরিটেজ ভবন।
|
তবে এই প্রথম নয়, আগেও দু’বার এই স্কুলে এসেছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। একবার ১৯৯৬ সালে। একবার ’৯৮ সালে। প্ল্যানিং কমিশনে থাকাকালীন তিনি স্কুলের উন্নয়নে অর্থ সাহায্যও করেন। তাঁর আন্তরিক সহায়তায় এই স্কুল ৩০ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫০৬ টাকা পেয়েছিল।
ইতিমধ্যে এই স্কুল হেরিটেজেরও মর্যাদা পেয়েছে। পাঁচ বছর আগে, ২০০৮ সালে কলেজিয়েট স্কুল ১৭৫ বছরে পা রাখে। সেই সময়ও প্রণববাবুকে বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি আসতে পারেননি।
মাস দুই আগে স্কুল থেকেই এক আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছিল রাষ্ট্রপতির কাছে। আর্জি ছিল একটাই, একবার যদি প্রণববাবু আসেন। সেই আর্জিতেই সাড়া দিলেন রাষ্ট্রপতি।
মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এ দেশের বর্ণময় ইতিহাস। পথ চলা শুরু সেই ১৮৩৪ সালে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ইচ্ছে ছিল, রাজনারায়ণ বসু যেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন। সেই ইচ্ছাকেই মর্যাদা দিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হয়েছিলেন রাজনারায়ণ বসু। এই স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন হেমচন্দ্র কানুনগো। আবার ক্ষুদিরাম বসুর মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীরাও স্কুলের ছাত্র ছিলেন। স্কুল ক্যাম্পাসে গুলি করে খুন করা হয় ইংরেজ জেলাশাসক পেডিকে।
মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের (বালক) প্রধান শিক্ষক দিলীপবাবুর কথায়, “আমরা ওঁকে স্কুলে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। উনি আগেও আমাদের স্কুলে এসেছেন। তবে এ ভাবে ফোন আসবে বলে ভাবতে পারিনি।” এ বার সেই সুযোগই কাছে আসছে। শুরু হয়েছে তার প্রস্তুতি। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-পরিচালন সমিতির সদস্যরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনুষ্ঠানের আয়োজনে। হাতে সময় কম। সোমবার বিকেলে এক দফা বৈঠক হয়েছে। স্কুলে উপস্থিত শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা সেরেছেন প্রধান শিক্ষক। কয়েকজনকেও ফোনও করে জানতে চেয়েছেন তাঁদের পরামর্শ। এ সবই একটা ফোন ঘিরে। চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা। আমন্ত্রণপত্র ছাপানো। অতিথিদের কাছে তা পৌঁছনো। কাজ তো প্রচুর।
সত্যিই, একটা ফোনেই বদলে গিয়েছে স্কুলের পুরো আবহটা।
লিটল ম্যাগ সভা। মেদিনীপুর লিটল ম্যাগাজিন অ্যাকাডেমির বার্ষিক সাধারণ সভা হয়েছে রবিবার। সভায় আলোচনার মাধ্যমে আগামী দিনের কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এর মধ্যে লিটল ম্যাগ মেলার পাশাপাশি গল্পকারদের সংকলন প্রকাশ-সহ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। অ্যাকাডেমির সম্পাদক হিসেবে পুর্ননির্বাচিত হন ঋত্বিক ত্রিপাঠি। |
|