ব্যাঙ্কের ভল্ট সাফ করে দেদার জমি কিনত বাবলু
ব্যাঙ্কের ভল্ট থেকে হাতিয়ে নেওয়া লক্ষ লক্ষ টাকা ঘরে জমিয়ে রাখলে রাতের ঘুম উড়বে। চুরির টাকা ব্যাঙ্কে রাখতে গেলেও হাজারটা ঝকমারি। বরং ওই টাকায় জমি কেনা যেতে পারে। পরে বেশি দামে বেচে দিলে উপরি পাওনা। চোরের এমন ‘দূরদর্শীতা’ দেখে পুলিশ কর্তারাও হতভম্ব!
শেখ বাবলু।
— নিজস্ব চিত্র।
হাওড়া ও হুগলির একাধিক ব্যাঙ্কে চুরির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হরবিন্দর সিংহ ওরফে শেখ বাবলুকে গ্রেফতার করে এমন তথ্য সামনে এসেছে। গত ২০ এপ্রিল ডানকুনি থেকে বছর তিরিশের ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হাওড়া জেলা পুলিশ (গ্রামীণ)-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “ওই দুষ্কৃতী জানিয়েছে, শুধুমাত্র ডানকুনিতেই প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা জমি কিনেছে সে। তার কাগজপত্রও দেখিয়েছে। অন্যত্রও জমি কিনেছে বলে জানিয়েছে।” কিন্তু এমন ঘটনা পুলিশও আগে দেখেনি। সুখেন্দুবাবুর কথায়, “দুষ্কৃতীরা লুঠের টাকার বেশির ভাগই ফূর্তি করে উড়িয়ে দেয়। বাবলু তা করেনি। তার চুরির টাকায় কেনা জমিজমা বাজেয়াপ্ত করা যায় কিনা, সে বিষয়ে আইনজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। এর আগে আমরা এ রকম জটিলতায় পড়িনি।”
পুলিশের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে বাবলু ও তার দুই সাগরেদ হাওড়া-হুগলির একাধিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কে রাতের অন্ধকারে ভল্ট ভেঙে কোটি টাকারও বেশি চুরি করেছে। গ্যাস কাটার দিয়ে ব্যাঙ্কের দরজা কেটে ভিতরে ঢুকত দুষ্কৃতীরা। মূলত গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ও সমবায় ব্যাঙ্কগুলিই ছিল ‘টার্গেট’। গত কয়েক মাসে শ্যামপুরের একটি ব্যাঙ্ক থেকে ২২ লক্ষ টাকা, বাগনানের একটি ব্যাঙ্ক থেকে ৪২ লক্ষ টাকা, আমতার একটি ব্যাঙ্ক থেকে ১১ লক্ষ টাকা ও হুগলির পুড়শুড়ার একটি ব্যাঙ্ক থেকে ২৬ লক্ষ টাকা চুরি করে বাবলু ও তার দলবল।
বাবলুর আদি বাড়ি উত্তরপ্রদেশের আজমগঢ়ে। বহু বছর আগে সপরিবার এসেছিল হাওড়ার কোনায়। তার বাবার হোটেল ছিল। মুম্বই রোড সম্প্রসারণের সময়ে সেটি ভাঙা পড়ে। তারপরে কিছু দিন ট্রাক চালিয়েছে বাবলু। জমি কিনে জগৎবল্লভপুরের ইছানগরী গ্রামে থাকতে শুরু করে। ট্রাক চালানোর সূত্রে ডানকুনিতেও একটি বাড়ি ভাড়া নেয়। তবে রোজগারের সামান্য টাকায় মন উঠছিল না ওই যুবকের। ব্যাঙ্কে চুরির ফন্দি আঁটে। জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, ইংরেজি সিনেমা দেখে ব্যাঙ্ক লুঠের ছক কষেছিল বাবলু। বুঝেছিল, রাতের অন্ধকারে হাতসাফাই করতে পারলে ঝুঁকি কম। আরও বুঝেছিল, দল বেশি বড় করে লাভ নেই। তাতে বখরা কম। ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেশি। নিজেদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটিরও আশঙ্কা বাড়ে। তাই মাত্র দু’জন সাগরেদকে নিয়ে কাজে নেমে পড়ে। তাদের এক জন আবার বাবলুরই শ্যালক শেখ আরশেদ।
গত ৭ এপ্রিল ধরা পড়ে আরশেদ। আটক হয় একটি গাড়ি। সেটি জামাইবাবুর, জেরায় জানায় আরশেদ। পরে হাওড়া-হুগলির পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ডানকুনি থেকে গ্রেফতার করে বাবলুকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.