ফের দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যে অশান্ত হল পূর্বস্থলীর লক্ষ্মীপুর এলাকা। বাজারের মধ্যে বোমাবাজিতে মৃত্যু হল এক যুবকের। জখম হয়েছেন আরও এক জন। রবিবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দু’জনকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
লক্ষ্মীপুর এলাকায় একটি খেলার মাঠকে কেন্দ্র করে আলুনির মাঠ ও ঘোষপাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে বিবাদ বেশ কিছু দিনের। পুলিশ দু’পক্ষকে আলোচনায় বসালেও ফল হয়নি। দুই পাড়ার বাসিন্দাদের দ্বন্দ্বে ময়দানে নেমে পড়ে দুষ্কৃতীরাও। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় চার জনের। ২০১২ সালে ওই এলাকায় পূর্ণ ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে বোমা মেরে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এই দু’টি ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাসিন্দাদের দাবি, এর পরে এলাকার পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু জেল থেকে কয়েক জন ছাড়া পেতেই ফের এলাকা অশান্ত হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর বাজারে একটি দোকানে বসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা বলরাম দে (৪৭) ও পূর্ণবাবুর ভাইপো বাপি ঘোষ। আচমকা কিছু লোক সেখানে হাজির হয়ে তাঁদের লক্ষ করে বোমা ছুড়তে শুরু করে। বলরামবাবু বেশি জখম হন। বছর পঁয়ত্রিশের বাপিবাবুর গায়েও বেশ কিছু বোমার স্প্লিন্টার বেঁধে। দু’জনকেই নদিয়ার শক্তিনগর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে বলরামবাবুর মৃত্যু হয়।
ঘটনার পরে রাতেই বিশাল বাহিনী নিয়ে এলাকায় যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার ও কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিত্ সরকার। মহকুমার এক পুলিশকর্তা সোমবার বলেন, “ওই এলাকার বহু দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাবে জেল থেকে জামিনে মুক্ত হওয়ার পরে এলাকায় ফিরে তারা ফের গোলমাল পাকাচ্ছে বলে খবর পেয়েছি। অভিযান শুরু হয়েছে। ওই গ্রামে যে ফাঁড়ি রয়েছে সেখানে পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।”
বলরামবাবুর ভাগ্না ভাগ্যধর নাথ বলেন, “আমার মামা নিরীহ মানুষ। আচমকা দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়ে তাকে খুন করল। আমরা চাই, দোষীদের ধরে কড়া শাস্তি দেওয়া হোক।” জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, যে ৯ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে তাদের মধ্যে পাঁচ জনের বাড়ি নবদ্বীপ এলাকায়। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। |