চোরেদের হাতযশে ছ’টা সাবমার্সিবল পাম্পের তিনটি ইতিমধ্যেই বন্ধ। বাকি তিনটে দিয়ে কাজ চালানো প্রায় অসম্ভব। এ অবস্থায় বোরো ধান ধরে উঠবে কী ভাবে তা ভেবে মাথায় হাত কাঁকসার আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের মোবারকগঞ্জের চাষিদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে ঘরের তালা ভেঙে তিনটি সাবমার্সিবল পাম্পের যন্ত্রপাতি চুরি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। সপ্তাহখানেক আগে এক সকালে মাঠে গিয়ে চাষিরা বিষয়টি জানতে পারেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে।
দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (ডিভিসি) সেচ প্রকল্পের জল কাঁকসার বিস্তীর্ণ এলাকায় পৌঁছায় না। ফলে বর্ষার মরসুম ছাড়া বছরের অন্য সময় সেচের জল প্রায় মেলে না বললেই চলে। বিঘের পর বিঘে জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। সমস্যা মেটাতে সরকারি উদ্যোগে বেশ কয়েকটি জায়গায় ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পও গড়ে তোলা হয়েছে। এই প্রকল্পে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি সাবমার্সিবল পাম্পের সাহায্যে মাটির নীচের জল তুলে পাইপের সাহায্যে জমিতে সরবরাহ করা হয়। কে কতটা জল পাবেন তা ঠিক করে এলাকার চাষিদের নিয়ে গঠিত উপভোক্তা কমিটি। নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে চাষিরা সেই জল ব্যবহার করেন। সেই টাকাতেই প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ হয়। একএকটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে জল সরবরাহ করা যায়।
আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের মোবারকগঞ্জ এলাকায় কয়েক বছর আগেও সেচের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। পরে সেখানকার চাষিরা স্থানীয় পঞ্চায়েতে সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে সেচ প্রকল্প চালু করার আবেদন জানান। বছর চারেক আগে সংশ্লিষ্ট দফতর মোবারকগঞ্জে ছ’টি সাবমার্সিবল পাম্প বসায়। জলের জোগান নিশ্চিত হওয়ায় এরপর থেকেই চাষিরা প্রতি বছর কয়েক’শো বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেন। এ বছরও করেছেন। ইতিমধ্যেই বোরো ধানের গাছ বেশ বড়ও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই তিনটি সাবমার্সিবল পাম্প অকেজো হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মোবারকগঞ্জ এলাকার চাষিরা। তাঁরা জানান, বোরো ধানে প্রচুর পরিমাণে জল লাগে। নিয়মিত জলের জোগান দিতে হয়। তিনটি সাবমার্সিবল পাম্প দিয়ে সব জমিতে জলের নিয়মিত জোগান দেওয়া অসম্ভব বলে জানিয়েছেন তাঁরা।। তরণী ধাড়া নামে এক চাষির কথায়, “বোরো চাষে এমনিতেই খরচ বেশি। অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে ধান চাষ করেছেন। আর কিছু দিন পরেই ফসল ঘরে ওঠার কথা। এই অবস্থায় জলের অভাবে ধান নষ্ট হয়ে গেলে অনেকেই রীতিমতো সমস্যার মধ্যে পড়বেন।” চাষিরা আরও জানান, গত কয়েকদিন ধরে রোদের তেজ বেশ বেড়েছে। ফলে জলের প্রয়োজনও আগের থেকে বেড়েছে। এই অবস্থায় দ্রুত বিকল পাম্পগুলি চালু করার ব্যবস্থা না হলে ধান বাঁচানো অসম্ভব।
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় জানান, মোবারকগঞ্জের বিষয়টি জেনেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। জনার্দনবাবু বলেন, “চাষিদের পক্ষে যন্ত্রপাতি কিনে সাবমার্সিবল পাম্পগুলি চালু করা সম্ভব নয়। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে পাম্পগুলি সারানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘেরাও কোলিয়ারিতে। কয়লা না পাওয়া-সহ একাধিক দাবিতে জেকে নগর কোলিয়ারির এজেন্টকে তাঁর কার্যালয়ে ঘণ্টাখানেক ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন খনিকর্মীরা। তাঁদের নেতা চুনুলাল মিশ্র জানান, জানুয়ারি মাস থেকে জ্বালানির কয়লা পাচ্ছেন না কর্মীরা। দীর্ঘদিন অনেকের পদোন্নতি আটকে আছে। খনি কর্মী আবাসন দীর্ঘদিন সংস্কার না হয়নি। এজেন্ট এস কুমার জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |