বর্ষার আগেই আসানসোল মহকুমার বেশ কয়েকটি রাস্তা সংস্কার করা না হলে, ওইসব রাস্তাতে আর বাস চালাবেন না বলে মহকুমা পূর্ত দফতরকে লিখিত ভাবে জানালেন মিনিবাস মালিকেরা। এমন পরিস্থিতিতে চরম সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। তবে রাস্তা সংস্কারে হাত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পূর্ত দফতর।
আসানসোল মহকুমার একাধিক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি কার্যত চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবুও ওইসব রাস্তা নিয়ে পূর্ত দফতরের কোনও হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, “আমরা রাস্তা সংস্কারের আবেদন জানাতে জানাতে আমরা ক্লান্ত। বাসের ক্ষতি স্বীকার করে আর বাস চালানো সম্ভব নয়।” তাঁদের কথায়, এ বার বর্ষায় ওই রাস্তাগুলোতে নৌকা চালাব।” এর আগেও মহকুমার বেশ কিছু রাস্তায় একাধিক বার লাগাতার বাস চালানো বন্ধ করেছেন মিনিবাস মালিকেরা। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সাময়িকভাবে সংস্কার করে বাস চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। সুদীপবাবু জানান, এই সংস্কার এতটাই অস্থায়ী যে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তার অবস্থা আগের মতো হয়ে যায়। তখন যাবতীয় ক্ষতি সত্ত্বেও বাস চালাতে বাধ্য হত তাঁরা। তাঁর কথায়, “প্রতি দিনই খানাখন্দে ভরা এই রাস্তায় গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে যাচ্ছে। এই অবস্থায় নিয়মিত বাস চালানো অসম্ভব।” |
আসানসোল থেকে বরাকর পর্যন্ত বেহাল জি টি রোড। লছিপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
আসানসোল থেকে বরাকর পর্যন্ত জিটি রোড দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার গাড়ি যাতায়াত করে। অথচ রাস্তার এমন দশা যে, চোখে দেখে রাস্তা বলে মনে হয় না। ইতিমধ্যেই ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে শিল্পাঞ্চলে। এলাকার নিকাশী ব্যবস্থা একেবারেই ভালো না হওয়ার জন্য বৃষ্টির জলে রাস্তার খানাখন্দগুলি ভরে থাকে। করুণ অবস্থা আসানসোল-চিত্তরঞ্জন রোডেরও। প্রায় ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তাটির বেশিরভাগই খানাখন্দে ভরা। রূপনারায়ণপুর অঞ্চলের সামডি-সীতারামপুর পর্যন্ত বেহাল রাস্তাটির সংস্কারের দাবি জানিয়ে এর আগেও একাধিকবার সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতি প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়। ইতিমধ্যেই এই রাস্তায় বাস চলছে না। অন্য দিকে, বারাবনির দোমহানি-কাল্লা রোডটি দিয়ে যে প্রায় প্রাণ হাতে করে বাস চালাতে হয়, তা জানিয়েছেন মিনিবাস চালকেরা। জামুড়িয়ার হরিপুর-পাণ্ডবেশ্বর রোড, অন্ডালের দাঁইহাট-উখড়া রোড এবং কুলটির চিনাকুড়ি এলাকার রাস্তাগুলিও বিপজ্জনক।
শুধু যে বাসচালকেরা নন, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যারা যাতায়াত করেন তাঁদের অবস্থাও সঙ্গীন হয়ে উঠছে। স্কুটার অথবা মোটরবাইক আরোহীরা প্রায় প্রতিদিনই এই বেহাল রাস্তায় দুর্ঘটনায় পড়ছেন। সম্প্রতি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম এক মোটরবাইক আরোহী বিবেকানন্দ মণ্ডল বলেন, জলে ভর্তি বড় গর্তগুলি ঠিকমতো নজরে আসেনি। অন্ধকারে ওই গর্তে পড়তেই গাড়ি সমেত উল্টে যান তিনি। পূর্ত দফতরের ভারপ্রাপ্ত বাস্তুকার মহম্মদ রাকীব জানিয়েছেন, আসানসোল থেকে বরাকরের রাস্তাটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে অন্য রাস্তাগুলিও মেরামত হবে। |