|
|
|
|
শহর আবর্জনামুক্ত করতে কড়া মেদিনীপুর পুরসভা |
বাড়ির মালিককে জরিমানা, শাস্তি তিন সাফাইকর্মীকেও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
শহরকে আবর্জনা-মুক্ত করতে কড়া পদক্ষেপ করছে মেদিনীপুর পুরসভা। একাংশ বাসিন্দা রাতের অন্ধকারে বাড়ির আবর্জনা যত্রতত্র ফেলে দেন। পুরসভার সাফাই বিভাগের কিছু কর্মীরও এতে দায় রয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্তে তিন জন কর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের সাত দিনের বেতন কাটা হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। আর যে ৩ জনের বাড়ির আবর্জনা যত্রতত্র ফেলা হয়েছে, তাঁদেরও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। পুরপ্রধান-পারিষদ (কনজারভেন্সি) সুনন্দা খান বলেন, “শহরবাসীর কাছে আবেদন, বাড়ির চেম্বার বা ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে হলে পুরসভার কাছে আবেদন করুন। নির্ধারিত অর্থ জমা দিন। যত শীঘ্র সম্ভব চেম্বার বা ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু অবৈধ ভাবে রাতের অন্ধকারে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলবেন না। সে ক্ষেত্রে পুরসভা উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।”
পুরসভার তদন্তে দেখা গিয়েছে ১৩, ১৫ এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলার প্রবণতা রয়েছে। পুরসভার সাফাই বিভাগের কিছু কর্মীর সঙ্গে যোগসাজশে বাড়ির মালিকরা চেম্বার বা ট্যাঙ্ক পরিষ্কারও করছেন। সেই সব আবর্জনা রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। পথচলতি মানুষ সমস্যায় পড়ছেন। জেলার সদর শহর মেদিনীপুর। শহরে নতুন বসতি গড়ে উঠছে। জনসংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে আবর্জনা। দূষণ সমস্যাও রয়েছে। শহরের বেশ কিছু এলাকায় আবর্জনা ফেলার ভ্যাট আছে। তবে সব ভ্যাটের চারদিক ঘেরা নেই। ফলে, আবর্জনার স্তুপ প্রায়শই রাস্তায় নেমে আসে।
|
|
পথ জুড়ে: রাস্তায় আবর্জনার স্তূপ। দুর্গন্ধে চলাফেরাই দায়। মেদিনীপুরে এই ছবি পরিচিত। (ফাইল চিত্র) |
শহরের পাশে ধর্মায় পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ড। শহরের সব আবর্জনা শেষমেশ এখানেই ফেলা হয়। তবে, এখানেও পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এক সময়ে ধর্মার বদলে কেরানিচটিতে ডাম্পিং গ্রাউন্ড করার তোড়জোর হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে মেদিনীপুর-খড়গপুর উন্নয়ন পর্ষদের সঙ্গে আলোচনাও করেন পুর-কর্তৃপক্ষ। তবে, আলোচনা বেশি দূর এগোয়নি।
মেদিনীপুরে আবার ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পও পুরোদমে চালু হয়নি। শহরকে আবর্জনা-মুক্ত করতে প্রায় পাঁচ বছর আগে এই প্রকল্প চালু হয়েছিল। সেই সময় প্রকল্প রুপায়নে নানা পরিকল্পনা করা হয়। ওয়ার্ড কমিটিকে নিয়ে বৈঠক হয়। প্রকল্প চালু হলে কী সুবিধে হবে, তা বোঝানো হয়। পুরসভার পক্ষ থেকে লিফলেটও বিলি করা হয়েছিল। কিন্তু, এই পর্যন্তই। পরে প্রকল্পের গতি একেবারে শ্লথ হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির চেম্বার বা ট্যাঙ্কের আবর্জনা যত্রতত্র ফেলা হলে একদিকে যেমন দুর্গন্ধ ছড়াবে, অন্য দিকে তেমন শহরের পরিবেশ নষ্ট হবে, পথচলতি মানুষও সমস্যায় পড়বেন। ইতিমধ্যেই যে অভিযোগ এসেছে পুর- কর্তৃপক্ষের কাছে। পুরসভার এক কাউন্সিলরের কথায়, “দূষণ নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। এই দূষণ ছড়াচ্ছে বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা থেকে। আমাদের সকলেরই উচিত, সমাজকে সুস্থ রাখতে নির্দিষ্ট জায়গায় আবর্জনা ফেলা। যাতে পুরকর্মীরা সময় মতো তা পরিষ্কার করতে পারেন।” পুরপ্রধান-পারিষদ (কনজারভেন্সি) বলেন, “অবৈধ ভাবে রাতের অন্ধকারে কেউ যাতে চেম্বার বা ট্যাঙ্কের আবর্জনা পরিষ্কার করতে না পারেন, সে জন্য নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সকলকেই আরও সচেতন হতে হবে। অভিযোগ পেলে আমরা উপযুক্ত পদক্ষেপ করব।”
|
পুরনো খবর: সাফাই হয় না, ক্ষোভে অবরোধ |
|
|
|
|
|