অবৈধ ভাবে গাছ কাটা এবং তা বিক্রির টাকার হিসেবে গরমিলের অভিযোগে গোঘাট-২ ব্লকের বদনগঞ্জ-ফলুই ১ পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের অশোক সাঁতরাকে রবিবার গ্রেফতার করল পুলিশ। একই অভিযোগ উঠেছে বদনগঞ্জ-ফলুই ২ পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমেরই শ্যামলী মণ্ডলের বিরুদ্ধেও। তবে, তাঁকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত পলাতক। খোঁজ চলছে। দুই প্রধানই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সালের গোড়া পর্যন্ত ওই দু’টি পঞ্চায়েত এলাকায় বেশ কিছু গাছ কেটে বিক্রি করা হয়। রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১১ সালের শেষ দিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব কাটা গাছ বিক্রির হিসাব দাবি করে পঞ্চায়েতে বেশ কয়েক বার বিক্ষোভ দেখায়। ঘেরাও হয়। তদন্তের দাবি করে ব্লক অফিসেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। দেওয়া হয় স্মারকলিপি। একই দাবিতে দিন কয়েক আগে মহকুমাশাসক অরিন্দম রায়ের দ্বারস্থ হন তৃণমূল নেতৃত্ব। মহকুমাশাসক বিডিওকে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। কয়েক দফা প্রশাসনিক তদন্তের পরে বিডিও শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত বৃহস্পতিবার বিকেলে গোঘাট থানায় দুই প্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা হরেরাম রায়ের অভিযোগ, দু’টি পঞ্চায়েত মিলিয়ে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকার গাছ বিক্রি হয়েছে। সেই টাকার কোনও হিসাব নেই পঞ্চায়েতে। তিনি বলেন, “আমারা চাই, প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হোক। পঞ্চায়েতের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম যেন স্তব্ধ না হয়, তা-ও দেখা হোক।”
মহকুমাশাসক বলেন, “যথাযথ অনুমোদন ছাড়াই গাছ কাটা হয়েছে। গাছের ধার্য দামের হিসেবেও গরমিল তদন্তে ধরা পড়েছে। বিডিওকে আইনি পরামর্শ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।”
অভিযুক্ত বদনগঞ্জ-ফলুই ২ পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামলী মণ্ডলের দাবি, “গাছ কাটা নিয়ে আর্থিক কোনও অনিয়ম করা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে, অনুমতি নেওয়া নিয়ে ত্রুটি হতে পারে। পঞ্চায়েতের আধিকারিকেরা সময়ে পরামর্শ দিলে হত না। অনেক নিয়ম-কানুনই আমাদের জানা নেই।” একই দাবি অন্য প্রধান অশোকবাবুরও। রবিবার তৃণমূলের নেতৃত্বে কয়েক জন গ্রামবাসী বদনগঞ্জে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করেন। পুলিশ গিয়ে সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে। দুই প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে সিপিএমের গোঘাট জোনাল কমিটির সম্পাদক অরুণ পাত্র বলেন, “মাস ছ’য়েক আগেই আর্থিক গরমিলের বিষয়টি মিটে যায় বলে শুনেছিলাম। প্রধানেরা যাতে পঞ্চায়েতে যেতে না পারেন ও উন্নয়ন স্তব্ধ হয়, তাই নতুন চক্রান্ত হল।” |