|
|
|
|
বিহারে শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেফতার অভিযুক্ত মনোজ
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
দিল্লির গাঁধী নগরে সেই পাঁচ বছরের শিশুটির যৌন নির্যাতনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মনোজকুমারকে মুজফ্ফরপুর থেকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। কাল রাত সওয়া ১২টা নাগাদ ওই যুবকের শ্বশুর বাড়ি, করজা থানার চিকনৌটা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই গ্রামের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ধৃতকে নিজেরাই শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে।
ঘটনার পরে ভারতুয়া পঞ্চায়েত মনোজের পরিবারকে সামাজিক ভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ সকালে মুজফ্ফরপুরের এসডিজেএম এস পি সিংহের আদালতে মনোজকে তোলা হলে তাকে তিনদিনের ‘ট্রানজিট রিমান্ড’ দেওয়া হয়। বিহারের ডিজিপি অভয়ানন্দ বলেন, “দিল্লি পুলিশ, এসটিএফ এবং জেলা পুলিশ যৌথ ভাবে অভিযান চালিয়ে মনোজ নামে একজনকে মুজফ্ফরপুর থেকে গ্রেফতার করেছে। তাকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
১৪ এপ্রিল থেকে পূর্ব দিল্লির গাঁধীনগর এলাকার এক পাঁচ বছরের শিশু নিখোঁজ ছিল। পরে যৌন নির্যাতিত শিশুটির খোঁজ মেলে ওই বাড়িরই এক তলার একটি ঘর থেকে। এই ঘটনার খোঁজ করতে গিয়ে দিল্লি পুলিশ জানতে পারে, শিশুটির প্রতিবেশী, মুজফ্ফরপুরের ওই যুবক শিশুটিকে তুলে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে যৌন নির্যাতন চালিয়েছে। এর পরেই দিল্লি পুলিশের তিন জনের একটি দল বিহারে আসে। বিহার পুলিশের সাহায্যে মনোজের শ্বশুর বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। |
মনোজকুমার শাহ। পিটিআইয়ের ফাইল চিত্র |
এই খবর জানার পরেই গ্রামের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা চরমতম শাস্তির দাবি জানাতে থাকেন। পুলিশকে ঘিরে ধরেই মনোজকে তাদের হাতে তুলে দিতে বলে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, ওকে পিটিয়ে মেরে আমরাই ওকে চরম শাস্তি দেব। শেষ পর্যন্ত পুলিশ গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে মনোজকে বার করে নিয়ে আসে। মনোজের শ্বশুর মহেন্দ্র শাহ বলেন, “এক বছর আগে মনোজের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। মনোজরা দীর্ঘদিন ধরেই সপরিবার দিল্লিতে থাকে। এক সপ্তাহ আগে মনোজ এখান থেকে দিল্লি যায়। কিন্তু গত মঙ্গলবার হঠাৎই, কোনও খবর না দিয়ে সে ফের এখানে ফিরে আসে।” কেন ফিরে এসেছিল সেই ব্যাপারে তিনি কিছুই জানতেন না বলে মহেন্দ্রবাবু দাবি করেন।
মনোজের নিজের বাড়ি ওই জেলারই ভারতুয়া গ্রামে। সেখানে তার ঠাকুরদা হীরা শাহ এবং ঠাকুমা থাকেন।
এই ব্যাপারে তাঁদের কাছে কোনও খবর নেই বলেই হীরাবাবু জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “২০ বছর ধরে ওরা দিল্লিতেই থাকে। সেখানে তারা কাজকর্ম করে। কী কাজ করে তাও আমি সঠিক জানি না।” এ দিকে, এই ঘটনায় গ্রামের মুখ পুড়েছে বলে মনে করছেন দুই গ্রামেরই মানুষ। তারা এতটাই ক্ষিপ্ত যে গ্রামবাসীরা ওই পরিবারের চরম শাস্তির দাবি জানাতে থাকেন। এরপরেই ভারতুয়া পঞ্চায়েত বৈঠক করে হীরা শাহ্য়ের পরিবারকে সামাজিক বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। পঞ্চায়েত প্রধান লাল বাবু বলেন, “মনোজদের পরিবারকে সামাজিক বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েতের কোনও সুবিধা তাদের পরিবারকে দেওয়া হবে না। এই ব্যাপারে সর্বসম্মত ভাবে আজ সকালে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
যদিও প্রশ্ন উঠেছে, এ ক্ষেত্রে এক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, যাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে আদৌ যুক্ত নন, তাঁদের শাস্তি দেওয়ার অর্থ কী? রাজ্য সরকারের এক সূত্রের বক্তব্য, আপাতত হয়তো তাৎক্ষণিক আবেগে গ্রামবাসীরা ও পঞ্চায়েত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এই পঞ্চায়েতি বয়কট যাতে পরিবারের অন্যদের উপরে না বর্তায় তার জন্য জেলা প্রশাসন গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলবে।
|
পুরনো খবর: পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণ সেই দিল্লিতেই |
|
|
|
|
|