অভিযোগ ওড়াল রেল
ট্রেনে ৩০ ঘণ্টা পড়ে অজ্ঞান যাত্রী
দুর্ঘটনায় আহত এক রেলযাত্রী রক্তাপ্লুত ও অচৈতন্য হয়ে ট্রেনের ভিতর পড়ে রইলেন ৩০ ঘণ্টা। অভিযোগ, হাওড়া স্টেশনে পৌঁছনোর পরে ট্রেনটি চলে যায় কারশেডে। সেখান থেকে হাওড়া স্টেশন হয়ে মুম্বইগামী ট্রেনটি পর দিন টাটানগর স্টেশনে পৌঁছলে রেলপুলিশ উদ্ধার করে ওই আহত যাত্রীকে। এই ৩০ ঘণ্টা ট্রেনের মধ্যেই পড়েছিলেন জোড়াসাঁকো থানা এলাকার সৈয়দ স্যালি লেনের বাসিন্দা মহম্মদ চাঁদ বেগ (৪০)! রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টিকে ‘অসম্ভব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। একই বক্তব্য হাওড়া রেল পুলিশের।
মহম্মদ চাঁদ বেগ নামে ওই যাত্রী আজ জামশেদপুরের এমজিএম হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে গোটা ঘটনাটির বর্ণনা দেন। তিনি জানান, মুম্বই থেকে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে চেপে তিনি হাওড়া ফিরছিলেন। ১৭ এপ্রিল সকালে সাঁতরাগাছি স্টেশনে কয়েক মিনিটের জন্য ট্রেন থামে। তিনি চা খেতে নামেন। ইতিমধ্যে ট্রেন ছেড়ে দেয়। তিনি দৌড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে কামরা ও প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে পড়ে যান। তবে ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা তাঁকে ধরে ফেলেন। ওই অবস্থায় ঝুলতে থাকেন চাঁদ বেগ। প্ল্যাটফর্ম শেষ হতে যাত্রীরাই তাঁকে টেনে ভিতরে ঢুকিয়ে নেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। ট্রেন পৌঁছয় হাওড়া স্টেশনে। সব যাত্রী নেমে যান। চাঁদ কিন্তু অচৈতন্য অবস্থাতেই পড়ে থাকেন ট্রেনের মধ্যে। ট্রেন কারশেডে যায়। ১৮ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার ট্রেনটি যখন ফের হাওড়া থেকে মুম্বইয়ের দিকে রওনা হয় তখনও তিনি ট্রেনে অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন বলে চাঁদের দাবি। শেষে ট্রেন টাটানগর পৌঁছলে সেখানকার রেল পুলিশ তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে।

জামশেদপুরের এমজিএম হাসপাতালে জখম চাঁদ বেগ। শনিবার পার্থ চক্রবর্তীর তোলা ছবি।
যদিও চাঁদের এই দাবি একেবারেই মানতে চাননি দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (খড়্গপুর) আর কে কুলশ্রেষ্ঠ। তিনি বলেন, “এমন ঘটনা ঘটতেই পারে না। রেল পুলিশ যদি দেখতে না-ও পায়, তাহলেও কারশেডের কর্মী বা রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানদের নজরে আসবে। ট্রেন যখন হাওড়ায় পৌঁছল সেই সময় তাঁর সহযাত্রীদের কেউ না কেউ তো হাওড়ার রেল পুলিশ বা রেলের কর্মীদের জানাবেন।” হাওড়ার রেল পুলিশ সুপার মিলনকান্ত দাসও বলেন, “এমন ঘটনা অস্বাভাবিক। কারশেডে পাঠানোর আগে রেলপুলিশ প্রতিটি কামরা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে। কারও নজরে তো পড়বেই।”
টাটানগর আরপিএফের ওসি দিগঞ্জয় শর্মা জানান, চাঁদকে অচৈতন্য অবস্থায় অসংরক্ষিত কামরায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁরা স্টেশন মাস্টারকে খবর পাঠান। পরে এক চিকিৎসক চাঁদকে পরীক্ষা করে দেখেন, তিনি বেঁচে রয়েছেন। রেলপুলিশের সাহায্যে চাঁদকে ভর্তি করানো হয় টাটানগর রেল হাসপাতালে। তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় জামশেদপুরের এমজিএম হাসপাতালে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে চাঁদ বলেন, “সাঁতরাগাছিতে কয়েক জন যাত্রী আমায় টেনে ট্রেনের ভিতরে ঢুকিয়ে নেন। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল কোমর আর পা। একজন ভেজানো গামছা আমার গায়ে জড়িয়ে দিলেন। পরে আমি জ্ঞান হারাই।”
এ দিন কলকাতায় চাঁদের দাদা বাবু খান বলেন, “ভাইয়ের কাছে মোবাইল নেই। মুম্বইয়ে দাদাকে ফোন করে বুধবার জানলাম, ভাই কলকাতায় রওনা হয়েছে। কিন্তু শুক্রবারও ফিরল না দেখে থানায় যাব ভাবছিলাম। টাটানগর রেল পুলিশও তো কোনও খবর দেয়নি।” টাটানগর রেল পুলিশের দাবি, চাঁদ শুক্রবার রাত পর্যন্ত অচৈতন্য ছিলেন। তাঁর বাড়ির ঠিকানা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তাদের জানাতে পারেননি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.