বেহাত হয়ে যাওয়া কোচবিহারের রাজার আমলের নানা স্মারক উদ্ধারে উদ্যোগী এএসআই। সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যক্তি বা সংস্থার সংগ্রহে থাকা রাজ আমলের সামগ্রী ফেরত দেওয়ার আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এএসআই কলকাতা সার্কেল ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট শান্তনু মাইতি বলেন, “অনেকের কাছে রাজ আমলের বিভিন্ন সামগ্রী রয়েছে বলে খবর আছে। সে সব ফেরত দেওয়ার আর্জি জানিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। তা ফেরত পাওয়া গেলে রাজবাড়ির সংগ্রহশালার আকর্ষণ বাড়ানো সম্ভব হবে।” এএসআই সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজবাড়ির বিভিন্ন সামগ্রী ছাড়াও রাজাদের আমলের অনেক স্মারক বেহাত হয়েছে বলে নানা মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানের পরে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন যে বেশ কিছু স্মারক ব্যাক্তিগত সংগ্রহে রয়েছে। এর পরেই সামগ্রীগুলি উদ্ধার করে রাজবাড়ির সংগ্রহশালায় রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উত্সাহ বাড়াতে যারা সামগ্রী ফেরত দেবেন তাঁদের নাম সামগ্রীর সঙ্গে বোর্ডে লিখে রাখার কথা ভাবা হয়েছে। ১৮৮৭ সালে মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের আমলে রাজপ্রাসাদ তৈরি হয়। ১৯৮২ সালে প্রশাসন রাজবাড়ির দায়িত্ব এএসআই-এর হাতে তুলে দেয়। অভিযোগ, ১৯৭০ সালে মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণের মৃত্যুর পরে নিলাম ডেকে রাজবাড়ি ও রাজাদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী ব্যক্তি মালিকানায় তুলে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া তেমন নজরদারি না-থাকায় অনেক সামগ্রী রাজবাড়ি থেকে চুরি যায়। সিদ্ধেশ্বরী ও চান্দামারি এলাকায় মাটি খনন করতে গিয়ে উদ্ধার হওয়া রাজার আমলের বেশ কিছু মুদ্রাও বেহাত হয়েছে। ওই সমস্ত অভিযোগ পেয়েই এএসআই এবং প্রশাসনের কর্তারা আলোচনায় বসে বেহাত সামগ্রী উদ্ধারে উদ্যোগী হয়েছেন।
কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও হেরিটেজ সোসাইটি অভিযোগ করে, মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ মারা যাওয়ার পরে রাজবাড়ি এএসআইয়ের নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগেও নিলাম থেকে চুরির হয়েছে। চাকরি সূত্রে কোচবিহারে যাওয়া অনেকে পচ্ছন্দ মত সামগ্রী নিয়ে যান। সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “আসবাব, সোনা, রুপোর অলঙ্কার, বাসন, বই, অ্যালবাম, সুরা পাত্র, ঘর সাজানোর নানা উপকরণ, ছাড়াও বিদেশ সফরে মহারাজাদের পাওয়া স্মারক, ট্রফি, মহারাজদের শিকার করে আনা বন্য জন্তুর মাথার খুলির মতো অনেক কিছুই বেহাত হয়েছে। এএসআই কর্তারা সে সব উদ্ধারের চেষ্টা করায় ভাল লাগছে।” |