জলপাইগুড়ির সংস্কৃতি-জগতে ‘ইমন’ পরিচিত নাম। এ বছর ২১ বছরে পড়ল। কর্ণধার শৈবাল বসুর সৃজনে পর পর ভিন্ন আঙ্গিকের নৃত্যনাট্য উপহার দিয়েছে ইমন। নাট্য বিষয় হিসেবে শৈবাল বারবারই বেছে নিয়েছেন শেক্সপিয়র ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নানা রচনা। প্রায় প্রতিটি নির্মাণই কলকাতাতেও মঞ্চস্থ হয়ে প্রশংসা অর্জন করেছে। রেজওয়ানা বন্যা চৌধুরীর ‘সুরের ধারা’ আয়োজিত আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র জন্মসার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ঢাকা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ইমনের নিবেদন ছিল কবিগুরুর ‘চন্ডালিকা’।
১৭ই এপ্রিল জলপাইগুড়ি সরোজেন্দ্র দেব রায়কত কলাকেন্দ্রে ইমন নিবেদন করল শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর। তিন পর্বে অনুষ্ঠানের প্রথমে ছিল তাদের নিজেদের উপস্থাপনা ‘পরিপূর্ণম আনন্দম্’। |
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ও বিক্রম সিং গীত এই স্তোত্র কত্থক-মণিপুরী ও উত্তরবঙ্গের লোকনৃত্য বিষহরির সংমিশ্রণে উপস্থাপন করেন ঋতু সেনগুপ্ত, অর্কপ্রিয়া চক্রবর্তী ও মৌমিতা সেনগুপ্ত। দ্বিতীয় পর্বে শহরের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী তীর্থঙ্কর দে গাইলেন দুর্গা রাগে খেয়াল ও একটি ভজন। তবলায় ছিলেন রণজিত সূত্রধর ও হারমোনিয়ামে ছিলেন সৈকত ঘোষ। শেষ ও মূল পর্বে ছিলেন প্রখ্যাত সেতার শিল্পী আমজাদ হোসেন ও তবলা সঙ্গতে পন্ডিত অশোক মৈত্র। বাজালেন আগ্রা ঘরানা ও বিলায়েত খানের শৈলীর মিশ্রণে রাগ ‘যোগ’ ও পরে ‘ভৈরবী’-তে ধুন। মধূপর্ণা কুন্ডার সঞ্চালনা ও অভিজিত বসুর মঞ্চ বিন্যাস এদিনের অনুষ্ঠানে একটি আলাদা মাত্রা যোগ করে।
|
বাংলাদেশের শাহবাগে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরোধীতায় গড়ে ওঠা আন্দোলনের পাশে দাঁড়াল বালুরঘাট সংহতি মঞ্চ। গত ১৪ এপ্রিল স্থানীয় হাই স্কুল প্রাঙ্গন থেকে পদযাত্রা করেন নানা স্কুলের শিক্ষক, ছাত্র এবং বিদ্বজনেরা। শুরুতে আবীর নৃত্যালয়ের খুদেরা শামসুর রহমানের কবিতায় মূর্ত করে প্রতিবাদের ভাষা। কবিতা পাঠ করেন অর্কপ্রভ ঘোষ। ট্যাবলোতে ছিল সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ বিরোধী ব্যানার। পরিবেশ করা হয় সঙ্গীত ও আবৃত্তি। অংশগ্রহণ করেন শ্যামলী চক্রবর্তী, বিপ্লব সাহা, রাজর্ষী সাহা রায়, রুমা ঘোষ, নৈবেদ্যর খুদেরা।
|
পথ নাটক দিবসে গত ১২ এপ্রিল বালুরঘাটে সপ্তম বর্ষ জন্মদিন পালন করল ‘শপথ’। সমবেত সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে এদিন অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে ‘পথনাটক দিবস ও আজকের প্রেক্ষিত’ বিষয়ে জানান নির্মলেন্দু তালুকদার। সঙ্গীত পরিবেশন করেন নিতাই মণ্ডল ও বিপ্লব সাহা। কবিতা পাঠ করেন রুমা ঘোষ। সলিল চৌধুরীর ‘শপথ’ নাচের আঙ্গিকে অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন পম্পা বিশ্বাস। সব শেষে মঞ্চস্থ হয় নাটক ‘উত্তরণ’। অভিনয়ে হারান মজুমদার ও শুভ্রশিখর মজুমদার। সঞ্চালক ছিলেন তুহিনশুভ্র মন্ডল।
|
পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ জলপাইগুড়ি শহর আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে ১২ই এপ্রিল সফদর হাসমির জন্মদিন, আন্তর্জাতিক পথনাটক দিবস পালিত হল। দিনটির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনার পরে পরপর চারটি পথ নাটক হয়। কলাকুশলীর ‘হিপ হিপ হুররে’, অন্বেষার ‘১২ই এপ্রিল’, ইচ্ছেডানার ‘মা’ ও প্রবাহর ‘অবক্ষয়’।
|
জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রয়াস হলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানের সূচনায় প্রদীপ জ্বালান পুর চেয়ারম্যান মোহন বসু। ছিলেন বর্ষীয়ান সঙ্গীত শিল্পী বাবলি রায়কত ও প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান দীপক কৃষ্ণ ভৌমিক। পরিবেশিত হয় গুঞ্জনের আবৃত্তি, বুলা বন্দ্যোপাধ্যায়, মালবিকা চক্রবর্তীর রবীন্দ্রসঙ্গীত। নজরুলগীতি গান অনমিত্র মুখোপাধ্যায়, তিলাঞ্জলি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অর্কপ্রিয়া চক্রবর্তীর নাচে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এদিন শহরে ১৩০ জন দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীর হাতে পুরসভা অর্থসাহায্য তুলে দেয়।
|
১৪ই এপ্রিল সন্ধ্যায় রবীন্দ্র ভবন মঞ্চে ছিল কিশলয় সাংস্কৃতিক সংস্থার বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। বর্ষীয়ান সঙ্গীত শিল্পী সঞ্জীব তালুকদারকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। ১১, ১২ ও ১৩ই এপ্রিল সুভাষ ভবনে সংস্থা আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার ফল ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানও হয়। মঞ্চে আমন্ত্রণ করা হয় ইন্দিরা সেনগুপ্তের তত্ত্বাবধানে পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে তৈরি ‘বাঁচব-বাঁচাব’ সংস্থাকে। তারা অভিনয় করে কবিগুরুর চন্ডালিকা। কিশলয়ের শিল্পীরা নাচ গান আবৃত্তি ও নাটকে বরণ করে নতুন বছরকে।
|
বালুরঘাটের দধীচি ও প্রত্যুষ পত্রিকা গোষ্ঠীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল নববর্ষ বৈঠক। সঙ্গীত, কবিতা, আড্ডায় মুখরিত হয় আড্ডা। শিল্পীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। পুরনো দিনের অনেক কথা উঠে আসে তাঁদের আলোচনায়। এর মধ্যে ঘরোয়া মেজাজে বসা এই আড্ডায় হাতে হাতে ঘুরেছে মুড়ি, বাতাসা ও শসা। |