ত্রিপুরার স্বাস্থ্য পরিষেবা
হাসপাতালের সাফাই ব্যবস্থা সম্পূর্ণ
বেসরকারিকরণের পথে বাম সরকার
কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন বিভিন্ন পরিষেবা ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থার ‘অনুপ্রবেশ’ রুখতে আন্দোলন করলেও, ত্রিপুরার ক্ষেত্রে বামফ্রন্ট সরকার নীতিগত ভাবে সরকারি ক্ষেত্রে ‘আউটসোর্সিং’ মেনে নিতে চলেছে। প্রাথমিক ভাবে সরকারি হাসপাতালগুলিতে সাফাইয়ের কাজটি পুরোপুরি বেসরকারি হাতে তুলে দিতে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
দফতরের এক উচ্চপদস্থ কর্তার কথায়, “সামগ্রিক ভাবে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির ‘স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিনিক’ পরিবেশ রক্ষার বর্তমান ব্যবস্থা তলানিতে এসে ঠেকেছে।” দফতরের সাফাইকর্মীদের মাধ্যমে যে ব্যবস্থা সুরক্ষিত থাকার কথা, অনেক দিন ধরেই তা কার্যত হচ্ছে না। সাফাই কর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ কর্তৃপক্ষের কাছে এসেছে। তাই জেলা হাসপাতাল থেকে শুরু করে মহকুমা স্তরের হাসপাতালগুলিতে ‘আউটসোর্সিং’-এর মাধ্যমেই সাফাই কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য অধিকর্তা সত্যরঞ্জন দেববর্মা বলেন, ‘‘এ বিষয়ে দফতর প্রস্তাব মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে।’’
পরীক্ষামূলক ভাবে আগরতলার দু’টি সরকারি হাসপাতালে ‘আউটসোর্সিং’-এর মাধ্যমে সাফাইকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা স্বীকার করেন, দু’তিন বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে এই ব্যবস্থায় ‘অভূতপূর্ব সাফল্য’ এসেছে। ধলাই, ঊনকোটি এবং গোমতীর জেলার তিনটি হাসপাতালে গত বছরে এই ব্যবস্থা চালু করে একই রকম সাফল্য এসেছে। সত্যরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘এ বার নীতিগত ভাবে রাজ্যের প্রতিটি জেলা এবং মহকুমা হাসপাতালগুলিতে সাফাই কর্মী নিয়োগে একই পদ্ধতি যাতে অনুসরণ করা যায় তার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’ স্বাস্থ্য অধিকর্তার কথায়, ‘আউটসোর্সিং’ করার জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে একটি বা একাধিক এজেন্সিকে নিয়োগ করবে দফতর। রাজ্য সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সংস্থাই হাসপাতালগুলির সাফাই ও পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করবে। সরকারি হাসপাতালগুলির ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা’ বজায় রাখার জন্য এখন থেকে এই সংস্থাগুলিই স্বাস্থ্য দফতরের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থা চালু হলে বর্তমানে যাঁরা সাফাই কর্মী হিসেবে কাজ করছেন তাঁদেরকে অন্য কাজে ব্যবহার করা হতে পারে। তবে কোনও ভাবেই তাঁদের ছাঁটাই করা হবে না।”
এক দিকে, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরকারি ক্ষেত্রে ‘আউটসোর্সিং’ প্রশ্নে নিয়ত তোপ দাগছেন বামপন্থীরা, অন্য দিকে ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যেই স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে ‘আউটসোর্সিং’ করতে চলেছেন। এটা যে নীতিগত ভাবে এক প্রকার ‘স্ববিরোধিতা’, তা মেনে নিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর। তিনি বলেন, ‘‘এ ছাড়া কোনও উপায় নেই।’’ কী কারণে রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালগুলিতে ‘আউটসোর্সিং’ করে সাফাই কর্মী নিতে চলেছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিজনবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘এক দিকে রাজ্যে সাফাই কর্মীর ভয়াবহ অভাব, অন্য দিকে যাঁরা সাফাইকর্মী হিসেবে কাজে রয়েছেন তাঁরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছেন নামূলত এই দু’টি কারণে, প্রতি নিয়ত অনেকে হাসপাতালে এসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সম্মুখীন হচ্ছেন।’’ পরিত্রাণের উপায় হিসেবে ‘আউটসোর্সিং’ করে সাফাই কর্মী নিয়োগের পথ বেছে নিচ্ছেন রাজ্য সরকার। দলীয় স্তরে বহু বছর ধরে এই বিষয়ে আলোচনার পরই দল এ ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে বলে তিনি জানান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.