|
|
|
|
|
|
|
নাটক সমালোচনা... |
|
ফিরলেন বিনোদিনী
সম্প্রতি তাঁর জন্মসার্ধশতবর্ষে ‘বিনোদিনী গাথা’য়। লিখছেন সুলগ্না বসু |
অ্যাকাডেমি থিয়েটার বিনোদিনীর সার্ধশতজন্মবর্ষে উদযাপন করল ‘বিনোদিনী গাথা’। উত্সবের শুরুতে শোনা গেল দু’টি পাঠ-নাটক। প্রথম সন্ধ্যায় সুরজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা ও অভিনয়সমৃদ্ধ পরিবেশনায় বিনোদিনী চরিত্রে অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন অনুসারী সহযোগী। দ্বিতীয় সন্ধ্যায় ছিল চিত্তরঞ্জন ঘোষের নাট্য অবলম্বনে বিনোদিনীর ভিন্ন পাঠ। সে অভিনয়ে সুদীপ্ত বিশ্বাসের গিরিশের সঙ্গে শ্রীলা মজুমদারের দরদি অভিনয়ে প্রত্যক্ষ হল বঞ্চিত বিনোদিনীর জীবনকথা। উত্সবের মূল আকর্ষণ ছিল বিনোদিনী অভিনীত মঞ্চগানের সম্ভার। রচনাকার ও পরিচালক দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিপুণ নির্মাণে ধরা পড়ল মধ্য উনিশ শতকের বাবু-কলকাতার আবহ। |
|
বিনোদিনীর জন্মকালের কলকাতার পরিচয় মেলে হুতোমের গানে ‘আজব শহর কলকেতা/ রাঁড়ি বাড়ি জুড়ি গাড়ি/ মিছে কথার কী কেতা!’ দেবজিতের কণ্ঠে সে গান পৌঁছে দেয় সেই কলকাতায় যখন কর্নওয়ালিস স্ট্রিটের এক প্রান্তে জীবনের প্রথম দশক পেরোতেই বিনোদিনী যোগ দিলেন রঙ্গমঞ্চে। তখন মঞ্চে সবে পুরুষ-অভিনেত্রীদের জমানা বদল হয়েছে। হরলাল রায়ের ‘হেমলতা’ নাটকের নামভূমিকায় বিনোদিনীর বাহার-আশ্রিত গান ‘বসন্ত করিছে ভবে’ গেয়ে আজকের দর্শক-শ্রোতাদের মন কাড়লেন ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস ‘মৃণালিনী’র নাট্যরূপে মনোরমা বিনোদিনী। বঙ্কিম-বয়ানে মেলে মনোরমার চরিত্র বইতে তিনি বর্ণনা করলেও যেন সামনে এসে দাঁড়ায় বিনোদিনীর অভিনয়। সে নাট্যের সঙ্গী গান ‘সাধের তরণী আমার’ প্রতিষ্ঠা পেল দেবজিতের সার্থক গায়নে। ঠাকুরবাড়ির মধ্যমণি জ্যোতিরিন্দ্রনাথের ‘সরোজিনী’ নাট্যের সহযোগে প্রথম রবীন্দ্রগান রূপ পেল ঋদ্ধির কণ্ঠে ‘জ্বল জ্বল চিতা’। ‘আগমনী’র ভৈরবী আশ্রিত গান ‘কুস্বপন দেখেছি গিরি’ মূর্ত হল দেবজিতের কণ্ঠে। গীতি পারম্পর্যে ঋদ্ধির কণ্ঠে ‘এত কেন গরব লো তোর’ (মেঘনাদ বধ), রামকৃষ্ণ উপস্থিতিতে গাওয়া চৈতন্যলীলার গান ‘হরি মন মজায়ে’ আপ্লুত করল এ কালের জনমনকেও। পাশাপাশি ‘বিষবৃক্ষ’-এর গান ‘কাঁটাবনে তুলতে গেলাম’, ‘দক্ষযজ্ঞ’-র ‘ফিরে চাও প্রেমিক সন্ন্যাসী’ দেবজিতের গায়ন আবিষ্ট করে রাখল শ্রোতাদের। সংযোজনায় ছিলেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় ও সতীনাথ মুখোপাধ্যায়। সঙ্গীত সহযোগিতায় প্রশংসার দাবি রাখে দেবাশিস সাহা (কি বোর্ড), সৌম্যজিত্ ঘোষ (বাঁশি) এবং তবলায় মানস চক্রবর্তী ও ঋদ্ধদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌমেন্দু রায়ের তত্ত্বাবধানে বাবলু রায়ের আলো ও বিলু দত্তের মঞ্চসজ্জা সময়কে চিহ্নিত করে। |
|
|
|
|
|