|
|
|
|
বাস ধরতে এসে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি গাড়ির ধাক্কায় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা চার জনের মৃত্যু হল। দুর্ঘটনায় গাড়িটির চালক ও দুই যাত্রী-সহ ৩ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ ঝাড়গ্রামের গড়শালবনি এলাকায় লোধাশুলি-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে ঘটনাটি ঘটে। মৃতেরা হলেন করুণাসিন্ধু মাহাতো (২৫), কল্যাণ মাহাতো (২০), মানিক মিধ্যা (৪৮) ও তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না মিধ্যা (৪৩)। করুণাসিন্ধুবাবুর বাড়ি ঝাড়গ্রামের সিমলি গ্রামে। মৃত বাকি তিন জনের বাড়ি ঝাড়গ্রামের নেদাবহড়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রাম থেকে ওই গাড়িটিতে ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা সাঁকরাইলের ধগাড়ি হাইস্কুলে যাচ্ছিলেন। গড়শালবনিতে বাস ধরার জন্য রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন অনেকে। গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চার জনকে ধাক্কা মারার পর একটি শালগাছে গিয়ে ধাক্কা খায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান করুণাসিন্ধুবাবু। পরে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাকি তিন জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন গাড়ি-চালক তরুণ মাহাতো। গাড়ির যাত্রী এক শিক্ষক ও এক শিক্ষিকাও জখম হয়েছেন। তিন জনকেই ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তরুণবাবুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। |
ঝাড়গ্রামে দুর্ঘটনার পরে |
পেশায় লরি চালক করুণাসিন্ধুবাবু থাকতেন গড়শালবনিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে। এ দিন ব্যক্তিগত কাজে লোধাশুলি যাওয়ার জন্য রাস্তার ধারে বাসের অপেক্ষা করছিলেন তিনি। একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী কল্যাণ মাহাতো ব্যক্তিগত কাজে খড়্গপুর রুটের বাস ধরার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। মানিক মিধ্যা ও তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্নাদেবীও খড়্গপুরে যাওয়ার বাস ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। পেশায় ফল-সব্জি ব্যবসায়ী মিধ্যা-দম্পতির সঙ্গে কয়েক বস্তা আম ছিল। মানিকবাবুর ভাই মুরলি মিধ্যা বলেন, “খড়্গপুরে আম বিক্রি করতে যাওয়ার কথা ছিল দাদা-বউদির। রাস্তার ধারে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা।” কল্যাণের জেঠতুতো দাদা সন্দীপ মাহাতো বলেন, “৬ মে আমার বিয়ে। কল্যাণের উৎসাহ ছিল বেশি। এমন অঘটন ঘটবে স্বপ্নেও ভাবিনি।”
গাড়িটির চালক জখম তরুণ মাহাতো অবশ্য ‘কিছু মনে পড়ছে না’র বাইরে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুলিশের অনুমান, চালক দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোয় দুর্ঘটনাটি ঘটে। গাড়িটিকে আটক করেছে পুলিশ। চালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ বলে তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি।
এ দিনই ময়নাতদন্ত হওয়ার পর দেহগুলি পরিবারের লোকেদের দেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ গড়শালবনি এলাকায় রাজ্য সড়কের মাঝে মৃতদেহ রেখে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং স্পিড ব্রেকার ও হাম্প দিয়ে যানবাহন-নিয়ন্ত্রণের দাবিতে পথ অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এসডিপিও (ঝাড়গ্রাম) সন্তোষকুমার মণ্ডল ও ঝাড়গ্রামের বিডিও অনির্বাণ বসু ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশ্বাস দেওয়ার পর রাত পৌনে ৮টায় অবরোধ ওঠে। |
|
|
|
|
|