নলকূপ চেয়ে প্রচুর আবেদন
গরম পড়তেই তীব্র জলসঙ্কট জেলা জুড়ে
রম পড়তে না পড়তেই তীব্র জল সঙ্কট দেখা দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। বোরো চাষে সেচের জলের সঙ্কট তো রয়েইছে, এ বার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। পানীয় জলের নলকূপের সংযোগ চেয়ে ব্লক অফিসে প্রায় প্রতিদিনই গুচ্ছ গুচ্ছ আবেদন জমা পড়ছে। সঙ্কট মোকাবিলায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে প্রশাসনও। প্রতিটি ব্লকেই অন্তত কয়েকটি করে নলকূপ যাতে বসানো যায়, সেই ব্যবস্থা করছেন আধিকারিকেরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমন ঘোষ বলেন, “ব্লক থেকে পরিস্থিতি জানতে চাওয়া হয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পানীয় জল সঙ্কট মোকাবিলা করতে পদক্ষেপ করা হবে।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, বর্তমানে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর ৪২৫টি নলকূপ তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। এ ছাড়া ৯৭টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নলকূপ বসাতে অর্থ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর। প্রশাসন জানিয়েছে, যে এলাকায় জলকষ্ট সব চেয়ে বেশি প্রথমে সেই এলাকাগুলিতেই এই নলকূপগুলি করা হবে। তারই সঙ্গে নলকূপের জন্য রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অর্থও চাওয়া হবে। অর্থ পেলে ধীরে ধীরে সেই সব এলাকায় নলকূপ খনন করা হবে।
এই পদ্ধতিতে চললে জেলা জুড়ে পানীয় জলের হাহাকার যে বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। জেলায় মোট ২৯টি ব্লক। এখনও পর্যন্ত দু’টি দফতর মিলিয়ে বরাদ্দ নলকূপের সংখ্যা মাত্র ৫২২টি। অর্থাৎ গড়ে প্রতি ব্লকে বড় জোর ১৮টি নলকূপ বসানো যাবে। কিন্তু এক একটি ব্লকেই তো এর থেকে অনেক বেশি আবেদন জমা পড়ছে। যেমন, ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি ব্লকেই নতুন নলকূপের আবেদন জানিয়ে প্রায় দেড়শো আবেদন পড়েছে। এক একটি আবেদনে আবার সংলগ্ন চার-পাঁচটি গ্রামের মানুষ একাধিক নলকূপ চেয়েছেন। বেলপাহাড়ির বিডিও সর্বোদয় সাহা বলেন, “পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে ন্যূনতম ২০০টি নলকূপ খুবই জরুরি।” পিংলা ব্লকে ২৭টি নলকূপ সংস্কার ও ৫০টি নতুন নলকূপ তৈরির আবেদন জমা পড়েছে। খড়্গপুর-২ ব্লকেও নলকূপ চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে প্রচুর। পিংলার বিডিও সুতপা নস্কর ও খড়্গপুর ২ ব্লকের বিডিও সোমা দাস বলেন, “গ্রীষ্মের শুরুতেই গুচ্ছ গুচ্ছ আবেদন আসছে। প্রতিদিনই সংখ্যাটা বাড়ছে।”
এই পরিস্থিতিতে নলকূপ প্রাপ্তির সংখ্যাটা নেহাতই কম। বেলপাহাড়ির মতো পাথুরে এলাকায় সমস্যা আবার গভীর। কারণ, সেখানে নলকূপ বসালেই জল মিলবে এমনটা আশা করা কঠিন। ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে গভীর পর্যন্ত গিয়েও জল মেলেনি। এর জন্য মূলত দু’টি কারণ দায়ী। প্রথমত, চাষের প্রয়োজনে যত্রতত্র গভীর নলকূপ বসানো হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, আগে জল তোলার ক্ষেত্রে ৫ হর্স পাওয়ারের বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। বর্তমানে সেই নিষেধাজ্ঞা নেই। ভূগর্ভ থেকে জল তোলার ক্ষেত্রেও নিয়ম মানা হচ্ছে। সব মিলিয়ে দ্রুত জলস্তর নেমে যাচ্ছে।
এই সমস্যা তীব্র আকার নিয়েছে মেদিনীপুর শহর ঘেঁষা ধর্মা ক্যানাল পাড়ে। আড়াই বছর আগেও এখানে নলকূপে স্বাভাবিক জল বেরোত। হঠাৎ একদিন দেখা গেল আর জল উঠছে না। স্থানীয় বাসিন্দা সাবিত্রী চালক, শেখ রিঙ্কুদের ভরসা এখন সজলধারা প্রকল্প। সেখানে দিনে একবার এক ঘন্টা জল দেওয়া হয়। ফলে, সঙ্কট রয়েছেই। এই পরিস্থিতিতে ভূগর্ভের জল কম ব্যবহার করে কী ভাবে ভূপৃষ্ঠের জল বেশি ব্যবহার করা যায় সেই পরিকল্পনাই করছে প্রশাসন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.