আরও বৃষ্টি হলে চাষে ক্ষতি বাড়ার আশঙ্কা
ঙ্গলবার শিলা বৃষ্টি হয়েছিল। তারপর থেকেই প্রায়ই বৃষ্টি হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। ফলে চাষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেই কৃষি দফতর জানিয়েছে। বিশেষত, যে সব এলাকায় বোরো ধান পেকে গিয়েছে সেখানে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। এ ছাড়াও সব্জি, তিল, বাদামেরও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
মঙ্গলবার জেলার বিভিন্ন জায়গায় শিলা বৃষ্টি হয়েছিল। সেই শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপাক ক্ষতিও হয়েছে। কৃষি দফতর জানিয়েছে, জেলায় বোরো ধানেরই ক্ষতি হয়েছে ১১ হাজার ৬৬ হেক্টর জমিতে। তিলের ক্ষতি হয়েছে ৫ হাজার ৫২৮ হেক্টর, বাদামের ৫০০ হেক্টর। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে কেশপুরে। কেশপুরে ৪ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫০০ হেক্টর জমির বাদাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তিলের ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার হেক্টর। তারপরেই রয়েছে ঘাটাল। যেখানে ২৮৯৬ হেক্টর বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। ৩৫৮ হেক্টর তিলের ক্ষতি হয়েছে। দাঁতন-২ ব্লকে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে ১৭৮৫ হেক্টর জমিতে। চন্দ্রকোনা-১ ব্লকে ১২৭৫ হেক্টর, চন্দ্রকোনা-২ ব্লকে ৭০০ হেক্টর, মোহনপুরে ২৯০ হেক্টর ও দাসপুর-১ ব্লকে ১২০ হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চন্দ্রকোনা-১ ব্লকে তিলেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় এক হাজার হেক্টর। চন্দ্রকোনা-১ ব্লকে তিলের ক্ষতি হয়েছে ১০০ হেক্টর, দঁতন-২ ব্লকে ৫০ হেক্টর ও দাসপুর-১ ব্লকে ১০ হেক্টর।

ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে তিল চাষের।—নিজস্ব চিত্র।
কৃষি দফতর জানিয়েছে, আরও বৃষ্টি হলে ওই এলাকাগুলিতে তো ক্ষতির পরিমাণ বাড়বেই তারই সঙ্গে জেলার অন্যান্য ব্লকেও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই গড়বেতাতেও কিছু ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষি দফতর জানিয়েছে। এছাড়াও সবং, পিংলা, নারায়ণগড়ের মতো যে সব এলাকায় বোরো ধান পাকতে চলেছে বা কিছু পেকে গিয়েছে সেখানেও চরম ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষি দফতরের তথ্য আধিকারিক দুলালদাস অধিকারী বলেন, ‘‘মেঘের যা পরিস্থিতি তাতে তো আরও বৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই যায়। আর তা হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। তারপরেই বোঝা যাবে জেলায় সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ কত হল।”
এ দিকে, শিলাবৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর দাবি তুললেন কেশপুরের সিপিএম বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করে রামেশ্বরবাবু বলেন, “প্রচুর ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিপূরণ না-পেলে কৃষকেরা সমস্যায় পড়বেন। পাশাপাশি কৃষি ঋণ মকুবেরও দাবি জানাচ্ছি।”
গত মঙ্গলবার বিকেলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে কেশপুরের বিভিন্ন এলাকা। ঝড়বৃষ্টি হয়। সঙ্গে শিল পড়ে। জোড়াকেঁউদি সোলিডিহা, তেঘোরি, জগন্নাথপুর, আনন্দপুর, কেশপুর, ধলহারা, ঝ্যাঁতলা, কলাগ্রাম, সরিষাখোলাএই ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর। এরমধ্যে জগন্নাথপুর, আনন্দপুর, তেঘোরি সহ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বেশি। দুর্যোগ এখনও কাটেনি। ফলে, ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসেব মেলেনি। ব্লক থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে প্রাথমিক ভাবে যে রিপোর্ট এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কেশপুরের ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫০টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত। ২৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং প্রায় ৫ হাজার বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেশপুরের বিডিও মহম্মদ জামিল আখতার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিলেন। শুক্রবার আনন্দপুরের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দেবাশিস রায় ক্ষয়ক্ষতির একটি প্রাথমিক হিসেব ব্লকে পাঠিয়েছেন। তাঁর রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, শিলাবৃষ্টিতে আনন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৯৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১৪৫টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.