দক্ষিণ কলকাতা
নেই ছাউনি
দুর্ভোগের অপেক্ষা
তৈরি হচ্ছে না বাসছাউনি। কারণ, আগ্রহী নয় হোর্ডিং সংস্থা। এমনই দাবি কলকাতা পুরসভার। তীব্র রোদ বা ভরা বর্ষায় খোলা আকাশের নীচে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন গল্ফগ্রিন অঞ্চলের বাসিন্দারা। এ বার পুরসভা নিজের অর্থেই বাসছাউনি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, বছর দু’য়েক আগে গল্ফগ্রিন অঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় বাসছাউনি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। উদয়শঙ্কর সরণির ২৩৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি হোর্ডিং সংস্থা বাসছাউনি তৈরিও করেছিল। পরে সেটি খুলে দেওয়া হয়। তার পরে গল্ফগ্রিন অঞ্চলে নতুন কোনও বাস ছাউনি তৈরি হয়নি। পুরসভার দাবি, হোর্ডিং সংস্থাগুলি আগ্রহ না দেখানোয় অর্থাভাবে বাসছাউনি তৈরি হচ্ছে না।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমার বলেন, “গল্ফগ্রিনে হোর্ডিং সংস্থা রাজি না হওয়ায় বাসছাউনি তৈরি হয়নি। সম্প্রতি পুরসভা নিজের অর্থে এখানে নতুন করে বাসছাউনি তৈরির পরিকল্পনা করেছে। চলতি আর্থিক বছরে এই প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।”
স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পুরসভার ১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত জানান, লর্ডসের মোড় থেকে উদয়শঙ্কর সরণি বরাবর বিজয়গড় পর্যন্ত অনেকগুলি জায়গায় বাসছাউনি তৈরির প্রস্তাব ছিল। এই রাস্তার উপরে রয়েছে বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড। অথচ, যাত্রীদের খোলা আকাশের নীচে অপেক্ষা করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় দূরদর্শন ভবনের উল্টো দিকের ফুটপাথে এবং বিজয়গড়ে জ্যোতিষ রায় কলেজের পাশেই স্থানীয় কাউন্সিলরের তহবিলে বাসছাউনি তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া বিক্রমগড়-সহ এলাকার অন্যান্য জায়গায় বাসছাউনি তৈরির জন্য পুরকর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।
গল্ফগ্রিনের বাসিন্দা সুচিত্রা ঘোষ বলেন, “বাসের জন্য খোলা আকাশের নীচে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। তীব্র রৌদ্র, বর্ষায় খুবই অসুবিধা হয়। এত বড় রাস্তায় একাধিক বাসছাউনির প্রয়োজন।” পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ২৩৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ড এবং বিজয়গড় মণিমালা উদ্যানের কাছে বাসছাউনি তৈরির প্রস্তাব এসেছে। অর্থ ও প্রয়োজনীয় জায়গা পাওয়া গেলে আরও কয়েকটি বাসছাউনি তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন পুরকর্তৃপক্ষ।
সমস্যা কোথায়?
পুরসভা সূত্রের খবর, একটি হোর্ডিং সংস্থা উদয়শঙ্কর সরণির ২৩৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে বাসছাউনি তৈরি করেছিল। চুক্তি অনুযায়ী, হোর্ডিং সংস্থাটি বাসছাউনি তৈরি করে সেখানে নানা সংস্থার বিজ্ঞাপন দেবে। পুরসভাকে নির্দিষ্ট হারে বাণিজ্য-কর দেবে। বাসছাউনির রক্ষণাবেক্ষণ হোর্ডিং সংস্থাটিই করবে। পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতরের এক আধিকারিক জানান, হোর্ডিং সংস্থাটি আশানুরূপ বিজ্ঞাপন পায়নি। ফলে বাসছাউনি উঠে যায়। বিজ্ঞাপন না পাওয়া অনেক হোর্ডিং সংস্থাই বাসছাউনি তৈরিতে আগ্রহী নয়। পুরসভাই এখানে বাসছাউনি তৈরি করবে। শীঘ্রই দরপত্র ডাকা হবে। তা ছাড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় ১০০টি বাস ছাউনি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি গল্ফগ্রিন অঞ্চলেই হবে।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.