পূর্ব কলকাতা
শুধুই আশ্বাস
বিলম্বের সেতুবন্ধ
শুধু দাবি জানানোই নয়, চাঁদা দিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন বাসিন্দারা। কাজও শুরু হল। কিন্তু পাঁচ বছরেও শেষ হল না বিধাননগর ও কেষ্টপুরের মাঝে সেতু তৈরির কাজ। রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার দাবি, আর্থিক সমস্যা ছাড়াও নানা প্রতিবন্ধকতায় কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে। তাদের দাবি, আগামী ছ’মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।
কেষ্টপুর খালের এক পাশে বিধাননগর। অন্য পাশে কেষ্টপুর। দু’টি এলাকার মধ্যে সংযোগ বলতে কয়েকটি ফুটওভার ব্রিজ। গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা নেই। কেষ্টপুর থেকে গাড়িতে ভিআইপি রোড অথবা রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে সল্টলেকে যেতে হয়।
তাই সেতু তৈরির দাবি করেছিলেন কেষ্টপুরের বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত মণ্ডল বলেন, “সল্টলেকে স্কুল-কলেজে যেতে হলে অনেক বেশি সময় ও অর্থ ব্যয় হয়। একটি সেতু হলে সমস্যা কমে যাবে।”
গত কয়েক বছরে কেষ্টপুর খালপাড় লাগোয়া এলাকায় অসংখ্য বসতি গড়ে উঠেছে। বেড়েছে কেষ্টপুর থেকে সল্টলেকে যাতায়াতকারী মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা সে তুলনায় অপ্রতুল। তা ছাড়া খাল পাড় হয়ে কলকাতায় যাতায়াত করাও সহজ। পুর প্রশাসনের দাবি, ২০৬ ফুট ওভারব্রিজের কাছে এই সেতুর জন্য এর মধ্যেই এক কোটি ৭০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এতে খালের উপরে একটি অংশ (ডেক) তৈরি হয়েছে মাত্র। কিন্তু সল্টলেক কিংবা কেষ্টপুরের দিকে সংযোগ স্থাপন হয়নি।
এ দিকে ভিআইপি রোডে উড়ালপুল তৈরির কাজ চলছে। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, কিছু দিন পরে এই কাজের জেরে ভিআইপি রোড দিয়ে যাতায়াতে সমস্যা হবে। স্থানীয় বাসিন্দা কিশোর ঘোষের কথায়: “ভিআইপি রোড দিয়ে যাতায়াতে সমস্যা বাড়বে। এর মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হলে সমস্যা অনেকটাই কাটবে।”
পুরপ্রশাসনের দাবি, বাকি অংশের কাজের জন্য সরকারি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা। সেই অনুমোদন এলে ছ’মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করা যাবে বলে তাঁদের দাবি। বাকি কাজের জন্য খরচ হবে প্রায় দেড় কোটি টাকা।
সেতুর কাজ দ্রুত শেষ হোক, এই দাবি বিধাননগরের বাসিন্দাদের একাংশেরও। বিধাননগরের বাসিন্দা অমিতাভ মজুমদার বলেন, “খালের দু’পাড়ের যোগাযোগ না থাকায় নানা সমস্যা হয়।” তবে বাসিন্দাদের আর এক অংশের দাবি, সেতু হলে দু’টি ব্লকের মাঝে গাড়ি চলাচল বাড়বে। তাই ট্রাফিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টিকে প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে।
কেন এই দীর্ঘসূত্রিতা?
পুরপ্রশাসনের দাবি, আর্থিক সমস্যা ছিল। মাঝে চলে এল নির্বাচন। রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভা সেতু করছে। আর্থিক সমস্যা শুরু থেকেই ছিল। সাধারণ মানুষ সহযোগিতা করেছেন। সেচ দফতর অনুমতিও দিয়েছে। সরকারি অনুদানও এসেছে। নানা প্রতিবন্ধকতায় কাজ আটকে ছিল। আশা করছি, আগামী ছ’মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করা যাবে।” পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “সেতু হলে দু’টি এলাকার দূরত্ব কমবে। মানুষের যাতায়াত সমস্যা মিটবে। এখনও সেতুর কাজ কেন শেষ হচ্ছে না তা খতিয়ে দেখছি।”

ছবি: শৌভিক দে




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.