খুশিতে বাঁচুন
ভাল দেখানোর ব্যায়াম
ব্যায়াম করলে শরীরে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। মন ভাল হয়ে যায়। মন ভাল থাকলে আপনাকে দেখতেও ভাল লাগবে। মুশকিল হল অনেকেই এই ভাল দেখানোর জন্য ব্যায়াম করেন। অনেক সময়ে তড়িঘড়ি ভাল দেখাতে গিয়ে ভুল ব্যায়াম বেছে নেন। অচিরেই স্বপ্নভঙ্গ হয়।
এড়িয়ে চলুন সিট-আপ, স্ট্রেট লেগ রেইজ। পেটের অংশের মেদ ঝরাতে অনেকেই সিট-আপের ঝড় বইয়ে দেন। সোজা দু’পা তোলার ব্যায়ামেও এঁরা কম যান না। এতে কোমরে ব্যথা হতে পারে। সুতরাং বন্ধ করুন সিট-আপও। এর বদলে কোর স্টেবিলিটি ব্যায়াম করুন। সহজ কথায় পেটের আর পিঠের গভীরের পেশির জোড় বাড়ানোর ব্যায়াম, যেমন, প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক ইত্যাদি করুন।
দুই কনুই আর পায়ের পাতায় ভর দিয়ে প্ল্যাঙ্ক করলে পেটের গভীরের পেশি ট্রান্সভার্সাস অ্যাবডমিনিস কার্যক্ষম হয়। এতে কোমরের ব্যথা কমবে। বিশেষত, অফিসে যাঁরা বসে কাজ করেন তাঁদের জন্য বিশেষ উপযোগী। সাইড প্ল্যাঙ্ক করুন কনুই-এ ভর রেখে আড়াআড়ি শুয়ে। এড়িয়ে চলুন অবিরাম লাফালাফি করার মতো অতি তীব্র মাত্রার ব্যায়াম। অনেকেই দ্রুত মেদ ঝরাতে বার্পি জাম্প, স্পট জাম্প ইত্যাদি করেন। পায়ের পেশি শক্তিশালী না হলে এতে হাঁটু বা কোমরে ব্যথা হতে পারে।
তার বদলে, নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী, ছোট ছোট বিরতি নিয়ে হাঁটা, জগিং, দৌড়ের মতো ওয়ার্কআউট করুন। ১০ মিটার দূরত্বে দু’টি জলের বোতল রাখুন। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে চারটে হাই-নি অর্থাৎ দৌড়ের ভঙ্গীতে ৯০ ডিগ্রি হাঁটু তুলুন। ফিটনেস ভাল না হলে হেঁটে অন্য প্রান্তে যান। সেখানে চারটে হাই-নি। আবার ফিরে এসে হাই-নি। এ ভাবে চলুক ৪৫ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট। গড়পড়তা ফিটনেস হলে জগিং করে অন্য প্রান্তে যান। ফিটনেস ভাল হলে হাই-নির পরে দৌড়।
২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ৬-৮ বার রিপিট করুন। এগুলি করলে হৃদযন্ত্র, ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে, শরীরে ইনসুলিনের সক্রিয়তা বাড়ে, ভাল কোলেস্টেরল বাড়ে, বিপাকের হার বাড়ে।
অনেক পুরুষই ছাতি চওড়া করতে চান। ফলে প্রতি দিন বুকের পেশির ব্যায়াম করেন। এতে কাঁধে সমস্যা হতে পারে। তা ছাড়া পিঠের পেশিকেও অবহেলা করা উচিত নয়। এর বদলে একটি বেঞ্চের উপরে উপুড় হয়ে শুয়ে দু’হাতে দু’টি হাফ লিটারের জল ভরা বোতল ধরে এক্সটার্নাল রোটেশন করুন। কাঁধের রোটেটর কাফ পেশির ক্ষমতা বাড়ানোর ভাল ব্যায়াম। ১০ বার করে করুন। একটু বিশ্রাম নিয়ে ৩ বার রিপিট করুন। এই ব্যায়াম কাঁধের বল অ্যান্ড সকেট জয়েন্টের ভারসাম্য বজায় রাখে। বসে, ঝুঁকে কাজ বা ওজন তুললেও কাঁধ ঠিক থাকবে।
তাড়াতাড়ি মেদ ঝরিয়ে স্লিম অ্যান্ড ট্রিম হতে গিয়ে অনেকে ৪০-৪৫ মিনিট ধরে ট্রেডমিল বা পার্কে জগিং করেন। সপ্তাহে ৬-৭ দিন করে এক টানা এই দৌড়ে হাঁটু বা গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে। আবার অতিরিক্ত পরিশ্রমে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল ক্ষরণ হয়। এতে বিপাকের হার কমে গিয়ে মেদ ঝরা আটকে যায়। এর বদলে সপ্তাহে দু’-তিন দিন পায়ের পেশির ব্যায়াম করুন। সারা জীবন দু’টি হাঁটুর উপরে নির্ভর করে চলাফেরা করতে হবে। অতি ব্যবহারে আঘাত লাগতে পারে। বরং দু’হাতে দু’লিটারের জলভরা বোতল নিয়ে স্কোয়াট অথবা একটি বোতল হাতে নিয়ে এক পায়ে ডেড লিফ্ট হাঁটুর হিন্জ জয়েন্টের জন্য খুবই ভাল ব্যায়াম। এই ব্যায়ামে পেশির পাশাপাশি মেদও ঝরবে। স্কোয়াট বা এক পায়ে ডেড লিফট ১০ বার করে করুন। একটু বিশ্রাম নিয়ে ৩ বার রিপিট করুন।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য

 



অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.