পারমিটহীন গাড়ির দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে জাঙ্গিপাড়ায়। জাঙ্গিপাড়া-বসন্তপুর সাত কিলোমিটার জুড়ে ওই সব পারমিটহীন গাড়ি যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে। এর ফলে, সমস্যায় পড়েছেন শ্রীরামপুর-জাঙ্গিপাড়া ৩১ নম্বর রুটের বাস-মালিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, শাসক দলের নেতাদের প্রত্যক্ষ মদতে ওই সব গাড়ি চলছে। সুরাহা চেয়ে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের কাছে বারবার আবেদন করেও ফল মেলেনি।
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেন, “কিছু দিন আগে ওখানে বেআইনি কিছু গাড়ি চলছিল। অভিযোগ পেয়ে তা বন্ধ করা হয়। আবার চালানো শুরু হয়েছে। ওই সব গাড়ি চলাচল বন্ধ করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।” ওই রুটের বাস-মালিক সংগঠনের সম্পাদক নীলরতন রায় বলেন, “প্রচুর লোকসান হচ্ছে আমাদের। অবিলম্বে ওই সব বেআইনি গাড়ি বন্ধ করা না হলে আগামী ২১ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ করা ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না।” তৃণমূলের হুগলি সভাপতি তপন দাশগুপ্ত এ ব্যাপারে বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। শীঘ্রই দলীয় স্তরে বিষয়টি দেখা হবে।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, জাঙ্গিপাড়া থেকে শ্রীরামপুর পর্যন্ত ৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রুটে ২০টি বাস চলে। এর মধ্যে জাঙ্গিপাড়া ও বসন্তপুরের মধ্যে বেশ কিছু চার চাকার বেআইনি যাত্রীবাহী ছোট গাড়ি চলে। এ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বাস-মালিকেরা। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় বাস চালানো বন্ধও করতে চেয়েছিলেন মালিকরা। পরীক্ষার জন্য প্রশাসনের কর্তারা সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছিলেন। যদিও, ওই সব গাড়ির দৌরাত্ম্য বন্ধ হয়নি। বাস মালিকদের খেদ, সরকারকে সব রকম কর দিয়ে তাঁরা গাড়ি চালান। অথচ, বেআইনি গাড়ির বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসন পাকাপাকি ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বুধবার শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসককে লিখিত ভাবে সমস্যার কথা জানান বাস-মালিকরা। বেআইনি ভাবে চলা বেশ কয়েকটি গাড়ির নম্বর এবং চার তৃণমূল নেতার নামও লেখা হয় ওই অভিযোগে। শুক্রবার মহাকরণে পরিবহণমন্ত্রীকেও লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাস মালিকের অভিযোগ, “স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ নইমুদ্দিন (বুধো)-সহ চার জনের মদতে ওই সমস্ত গাড়ি চলছে। ফলে, আমাদের লোকসান হচ্ছে।” অন্য এক বাস-মালিকের অভিযোগ, “পারমিটহীন গাড়িগুলির চালকেরা জানিয়েছেন তৃণমূল নেতাদের নির্দেশেই তাঁরা গাড়ি চালান।” তাঁদের অভিজ্ঞতা, প্রশাসনকে জানানোর পরে দু’-এক দিন গাড়িগুলি বন্ধ থাকে। তার পরে ফের রাস্তায় নামে। অভিযুক্তদের মধ্যে শেখ মইনুদ্দিনের (বুধো) দাবি, “ওখানে পারমিটহীন গাড়ি চলছে বলে কেউ অভিযোগ করেননি। তেমন হলে তা বন্ধ করতে সচেষ্ট হব।” |