ছ’ মাসেরও বেশি সময় ধরে আবর্জনা জমে আছে রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম জাতীয় সড়কে, বামনীগ্রাম মোড়ে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এতদিন ধরে জঞ্জাল জমে থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ স্থানীয় কাউন্সিলর (৯ নম্বর ওয়ার্ড), তৃণমূলের পুষ্পিতা মণ্ডলও। দুর্গন্ধের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন সকলেই। বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন, সাফাইয়ের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হলেও সাধারণ মানুষই যদি তার ফল ভোগ না করতে পারলেন, তা হলে এমন খরচে কী লাভ? পুরপ্রধান তৃণমূলের অশ্বিনী তিওয়ারি অবশ্য বলেন, “দেখছি, কী করা যায়।”
বাসিন্দা চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, তিলু মণ্ডল, সাদরুল ইসলাম, পার্থসারথি রায়-দের অভিযোগ, মাসের পর মাস ধরে ওই জায়গাটিতে জঞ্জাল ফেলে স্তূপীকৃত করা হচ্ছে। তাঁদের কথায়, “এলাকাটিকে কার্যত ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছে। দুর্গন্ধে আমাদের টেকা দায় হয়ে পড়েছে!” |
রামপুরহাটে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে জঞ্জাল। —নিজস্ব চিত্র |
জঞ্জাল জমে থাকা নিয়ে পুষ্পিতাদেবীর ব্যাখ্যা, “হোটেলের যাবতীয় ময়লা-আবর্জনা জাতীয় সড়কের ধারে ফেলা হয়। ভাঁড়শালা পাড়া বাজারের জঞ্জাল, এমনকী অন্য ওয়ার্ডের ময়লাও ওখানে ফেলা হয়। তা ছাড়া জাতীয় সড়কের ধারে থাকা নানা দোকানীও তাঁদের ময়লা ওখানে জমা করেন।” তাঁর বক্তব্যকে মানেননি এলাকার ব্যবসায়ী সাধন দত্ত, স্বজন দত্ত-রা। তাঁদের দাবি, “ওয়ার্ডের ময়লাই নিয়মিত ভাবে ওখানে জমা করা হয়।”
পুরসভা সূত্রে খবর, জঞ্জাল সাফাইয়ে পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের জন্যে প্রতি মাসে প্রায় তিন লক্ষ টাকা করে খরচ করা হয়। রামপুরহাট পুরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর সুষেণ মণ্ডলের সাফাই, “জঞ্জাল নিয়মিত সাফাই হয়। হিসাব বিভাগে খোঁজ নিলেই দেখা যাবে।” কিন্তু খরচ হওয়া মানেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যাওয়া? ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা কিন্তু বিগত কয়েক মাস ধরে অন্য চিত্রই দেখছেন। ময়লা জমার দায় কার্যত বাসিন্দাদের উপর চাপিয়ে উপপুরপ্রধান অনিন্দ্য সাহার পরামর্শ, “মানুষেরই সচেতন হওয়া উচিত।” যদিও স্বজনবাবুদের পাল্টা প্রশ্ন, “পুরসভা থেকে প্রচার চালিয়ে বলা হয়, যত্রতত্র ময়লা ফেলবেন না। কিন্তু জাতীয় সড়কের ধারে হোটেল বা বাজারে ময়লা ফেলার জন্য পুরসভা কি কোনও জায়গা বা অন্য কোনও ব্যবস্থা করেছে?” |