রাজ্য সরকারি সংস্থা দুর্গাপুর কেমিক্যালস লিমিটেডে তাঁর অনুমোদিত সংগঠনের সভায় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন আইএনটিটিইউসি-র চেয়ারম্যান তথা বিধানসভার মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
অভিযোগ করলেন, সংগঠনের অনেক নেতাই ঠিকাদারদের থেকে ‘সাদা খাম’ নিচ্ছেন। বললেন, “এক সময়ে দল ছেড়ে যাওয়া কেউ কেউ আজ মন্ত্রী। যে পুলিশের হাতে মার খেয়েছি, তাঁদেরও কেউ কেউ মন্ত্রী। আমি কিন্তু দলনেত্রীর আদর্শ মেনে সঙ্গে আছি বরাবর।” সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেনের অনুমোদিত সংগঠনের ‘হুমকি অগ্রাহ্য করে’ তাঁর সভায় আসায় ধন্যবাদও দিলেন অনুগামী শ্রমিকদের।
তৃণমূল সূত্রের খবর, শোভনদেব এ ভাবে মুখ খোলায় দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বিরক্ত। যদিও কেউই প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি। দোলা বলেন, “আমার যা বলার, তা সংগঠনের ভিতরে বলব।” তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “উনি ঠিক কী বলেছেন, তা তো আমি শুনিনি। খোঁজ নিয়ে দেখব।” শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুও মন্তব্য করতে চাননি। |
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কর্তৃত্ব নিয়ে দড়ি টানাটানি অনেক দিন ধরেই চলছে। দুর্গাপুর-সহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে বহু কারখানাতেই আইএনটিটিইউসি-র নামে একাধিক সংগঠন রয়েছে। কোন নেতা কোন সংগঠনকে স্বীকৃতি দিয়ে বসছেন, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যেই মারপিট হচ্ছে। শুক্রবার শোভনদেবের সামনেই তাঁর অনুমোদিত ‘ডিসিএল পার্মানেন্ট ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এবং দোলার অনুমোদিত ‘ডিসিএল পার্মানেন্ট কর্মচারী ইউনিয়ন’ দাবি করে আইএনটিটিইউসি-র ‘আসল’ প্রতিনিধি তারাই।
শোভনদেব বলেন, “দলের লোক দলের লোকেরই মাথা ফাটাচ্ছে। ক্ষমতায় আসার পরে দলে বন্যার জল ঢুকেছে। তার সঙ্গে পচাগলা জীবজন্তুও ঢুকে গিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, দলনেত্রী পচাগলা কুকুর-ছাগলগুলিকে ঠিক সরিয়ে দেবেন।” সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়ে দেন, “যদি কেউ বলেন আমি তৃণমূলের কেউ না, আমার স্বীকৃতি কোনও স্বীকৃতি না, তা হলে আমি বলব, অন্য কারও স্বীকৃতিও কোনও স্বীকৃতি নয়।”
চেয়ারম্যান হওয়া সত্ত্বেও দুর্গাপুরে সদ্য হয়ে যাওয়া আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সম্মেলনে যাননি শোভনদেব। সেই সম্মেলনের খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “নেত্রী বলেছেন, কোনও ভাবেই চাঁদা নেওয়া যাবে না। অন্যের কাছে হাত পাতা যাবে না। কিন্তু রাজ্য সম্মেলন যে ভাবে হয়েছে, তা সদস্যদের থেকে মাত্র ২০ টাকা করে চাঁদা নিয়ে সম্ভব নয়। এত টাকা এল কোথা থেকে?” তাঁর অভিযোগ, “অনেকেই মুখে হাজার বার মমতার নাম বলছেন আর আসলে নিজের স্বার্থরক্ষা করছেন।” |