দেশের ২২টি রাজ্য গুটখার বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ এখনও তা না-করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। সিদ্ধান্ত নিতে দেরি কেন, তা জানাতে রাজ্যকে দু’সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
গুটখা উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে সব রাজ্যকেই নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যেই অন্তত ২২টি রাজ্য গুটখা বিক্রি ও সেবনের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এই নিয়ে গড়িমসি চলছে। নিষেধাজ্ঞা না-থাকায় শহরে, গ্রামেগঞ্জে চুটিয়ে চলছে গুটখার ব্যবহার। সরকার উদাসীন কেন?
গুটখা নিষিদ্ধ হলে বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায় বন্ধ হয়ে যাবে। এবং সেটাই যে এই ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করার বড় কারণ, বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে রাজ্যের জিপি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণকুমার মিশ্র এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে তিনি জানান, গুটখা বিক্রির রাজস্ব হিসেবে প্রচুর টাকা সরকারি কোষাগারে জমা পড়ে। অজস্র ছোট দোকানদার এই ব্যবসায় যুক্ত। রাজস্ব এবং ওই সব দোকানির ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় নিচ্ছে সরকার।
গুটখা সংস্থার মালিকদের পক্ষে আইনজীবী সপ্তাংশু বসু প্রশ্ন তোলেন, সিগারেটও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। তা হলে সিগারেট বন্ধের নির্দেশ কেন দেওয়া হচ্ছে না? তিনি বলেন, বড় সিগারেট সংস্থাগুলি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই মামলা করিয়েছে। সিগারেটের দাম বাড়ায় গরিব মানুষ সস্তার গুটখা কিনছেন। এতে সিগারেটের বিক্রি কমছে। সেই জন্যই সিগারেট সংস্থাগুলি গুটখার ব্যবহার বন্ধ করতে সক্রিয় হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ওই আইনজীবীকে বলেন, “ভাল করে খোঁজ নিন, গুটখার জন্য কত মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে গরিবই বেশি। চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই তাঁদের। সিগারেট অবশ্যই ক্ষতিকর। কিন্তু আপাতত যদি গুটখা দিয়ে শুরু করা যায়, আপত্তি কী?” তার পরেই ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, রাজ্যকে দু’সপ্তাহের মধ্যে গুটখার ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে। |