এত দিন রাজ্য সরকারের অধস্তন কর্মীদের অফিসে হাজিরা নিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। এ বার শীর্ষ স্তরের আমলাদের অফিসে থাকা না-থাকার বিষয়টি খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যালয়ের নজরদারির আওতায় নিয়ে আসা হল। রাজ্য সরকারের ৫৯টি দফতরের বিশেষ সচিব থেকে শুরু করে তার উপরের পদমর্যাদার সব আমলা, অর্থাৎ অতিরিক্ত সচিব, সচিব, এমনকী অতিরিক্ত মুখ্যসচিবেরাও ওই নজরদারির আওতায় আসছেন। এখন থেকে ওই স্তরের আধিকারিকদের কেউ যদি সরকারি কাজে বাইরে থাকেন বা ব্যক্তিগত কারণে ছুটি নেওয়ায় দফতরে আসতে না-পারেন, তা হলে তাঁদের সেই অনুপস্থিতির কথা যথেষ্ট আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে জানিয়ে দিতে হবে। চলতি সপ্তাহে অর্থসচিব এই মর্মে নির্দেশ জারি করেছেন। কোনও রকম রাখঢাক না-করে তাতে বলা হয়েছে, সদর দফতরে পদস্থ আধিকারিকদের অনুপস্থিতির জন্য (সরকারি কাজে) জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে নতুন নির্দেশ জারি করা হল। পদস্থ আধিকারিকেরা যে-কারণেই সদর দফতরে অনুপস্থিত থাকুন না কেন, মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেটা জানাতেই হবে। এত দিন রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের ওই শীর্ষ আধিকারিকেরা কোনও কারণে অনুপস্থিত থাকলে সেটা তাঁরা শুধু নিজেদের দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতেন। রাজ্য প্রশাসনের ইতিহাসে কার্যত নজিরবিহীন এই নতুন নির্দেশে পদস্থ আমলাদের অনেকেই বেশ হতচকিত। কারণ, প্রকৃত অর্থে এখন থেকে তাঁরা কে কবে দফতরে রয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী চাইলে সেই খবর নিজের কার্যালয় থেকেই জেনে নিতে পারবেন। কোনও জরুরি বৈঠকে কোনও শীর্ষ স্তরের আমলা গরহাজির থাকলে প্রয়োজনে তাঁর ব্যাখ্যাও তলব করা যাবে।
|
পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের ১২০ কোটি টাকা তছরুপের ঘটনায় গোয়েন্দারা বৃহস্পতিবার ওই সংস্থার অ্যাকাউন্টস অফিসার অজয় সিংহকে গ্রেফতার করেছেন। তছরুপে এই প্রথম নিগমের কেউ ধরা পড়লেন। গ্রেফতার হয়েছে তছরুপ চক্রের মূল পাণ্ডা ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের শাগরেদ ধীরেন গণত্র। অজয়কে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর কিছু কথায় পুলিশের সন্দেহ হয়। তাঁকে গ্রেফতার করার পরে তাঁর কাছ থেকেই ধীরেনের নাম জানা যায়। ভবানীপুরের বাড়ি থেকে ধীরেনকে গ্রেফতার করা হয়।
|
ঝড়-জলে দুই জেলায় অন্তত ২৭ হাজার ৬৬ হেক্টর জমির বোরো চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ওই প্রাথমিক হিসেব এসেছে। কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। ১১ হাজার ৬৬ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্ধমানে ১ লক্ষ ৪১ হাজার ২০০ হেক্টর জমির বোরো চাষের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ১৬ হাজার হেক্টরের। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫৫২৮ হেক্টর তিল ও ৫০০ হেক্টর বাদাম খেত নষ্ট হয়েছে। যাঁদের শস্যবিমা নেই, তাঁদেরও ক্ষতিপূরণ দিতে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব কষা চলছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।
|
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে দলের নাম থেকে এ বার ‘কংগ্রেস’কে ছেঁটে ফেলার দাবি তুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য! প্রদেশ কংগ্রেস দফতর থেকে ময়দানের গাঁধী মূর্তি পর্যন্ত যুব কংগ্রেসের মিছিল শেষে বৃহস্পতিবার প্রদীপবাবুর কটাক্ষ, “হিম্মত থাকে তো দলের নামে তৃণমূল শুধু রেখে কংগ্রেস নামটা সরিয়ে দিয়ে লড়াই করুন! দেখা যাবে কার কত শক্তি! পঞ্চায়েত ভোট হলেই বোঝা যাবে যে তৃণমূল ডুবন্ত রাজনৈতিক শক্তি!” জোট ছাড়ার পরেও দলের নামে কংগ্রেস শব্দটা ব্যবহার করে মমতা রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছেন বলে
অভিযোগ করেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য কটাক্ষ ফিরিয়ে পাল্টা বলেছেন, “শক্তি থাকলে তো তা বাড়ে বা কমে। যাঁরা শক্তিহীন, তাঁরা আবার শক্তির কথা কী ভাবে বলেন!”
|
রাজ্যের ১৩টি পুরসভার নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করার ব্যাপারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে-চিঠি দিয়েছিল, রাজ্য সরকার বৃহস্পতিবারেও তার জবাব দেয়নি। ফলে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ওই ১৩টি পুরসভায় ভোট হওয়ার আর কোনও সম্ভাবনা রইল না। ৩০ জুনের মধ্যে ওই পুরসভাগুলিতে বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ওই সব পুরসভায় ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে হলে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সেখানকার সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হত। নিয়ম হল, ভোটের দিন থেকে অন্তত ১০ সপ্তাহ আগে পুরসভার ওয়ার্ড সংরক্ষণের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। ৩০ জুনের পরে যে-সব পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে, সেগুলি হল হাবরা, দুবরাজপুর, ডালখোলা, মেদিনীপুর, গুসকরা, বালুরঘাট, হলদিয়া, মেখলিগঞ্জ, আলিপুরদুয়ার, চাকদহ, পানিহাটি, ডায়মন্ড হারবার ও বর্ধমান।
|
বুধবারের ঝড়ে রাজ্যে ন’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানালেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান। কেউ মারা গিয়েছেন বজ্রপাতে, কেউ দেওয়াল চাপা পড়ে। বৃহস্পতিবার মন্ত্রী জানান, আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী দু’দিনও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কালবৈশাখী হতে পারে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে রাজ্যের সব জেলা, বিশেষ করে সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলির পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ঝড়ে মৃতদের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তিন জন এবং হাওড়ায় দু’জন রয়েছেন। |